অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় দুই বোনকে পেটাল পার্লারের মালিক

মিরপুর (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:২৭ এএম

মিরপুরে অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় লিজা ও মাহফুজা নামে দুই তরুণীকে প্রকাশ্যে পিটিয়েছে এক বিউটি পার্লারের মালিক।
শুধু তাই নয়, ভুক্তভোগীদের কোণঠাসা করে রাখতে তাদের বিরুদ্ধে উলটো মারামারির অভিযোগ এনে দেওয়া হয়েছে মামলাও। লিজা ও মাহফুজা দুই বোন।
১৬ ফেব্রুয়ারি মিরপুর ১২ নম্বর ডিওএইচএস শপিং কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। ওই পার্লারের নাম সাজিয়াস বিউটি পার্লার আর এটির কর্ণধার সাজিয়া আফরিন ও ফারজানা আফরিন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী লিজা রাজধানীর পল্লবী থানায় এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডে অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে জানা যায়, ৬ থেকে ৭ মাস আগে সাজিয়াস পার্লারে চাকরি নেন লিজা। এ সময় পার্লারের মালিকের কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র জমা রেখে অগ্রিম ৫ হাজার টাকা নেন। পার্লারে যোগদানের পর অনৈতিক কার্যকলাপ দেখে ৬ দিন পর কাজ না করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি এবং ৫ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে আইডি কার্ডটি ফেরত চান লিজা।
তবে কার্ডটি ফেরত না দিয়ে লিজাকে মাসের পর মাস ঘুরাতে থাকে পার্লারের মালিকপক্ষ। একপর্যায়ে ২৮ জানুয়ারি কার্ড ফেরত দেওয়ার জন্য লিজার কাছে অতিরিক্ত টাকা চাওয়া হয়।
এদিকে অতিরিক্ত টাকা না দিয়ে ঘটনাটি মার্কেট কর্তৃপক্ষকে লিজা জানাতে চাইলে তার ওপর চড়াও হয় পার্লারের মালিক। ওইদিন লিজাকে বাঁচাতে তার বোন মাহফুজা গেলে তার ওপরও চড়াও হয় হামলাকারীরা।
এ ঘটনার ৩ দিন পর লিজা ও মাহফুজার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। ৮ ফেব্রুয়ারি মামলায় জামিনে বেরিয়ে এসে মাহফুজা সাজিয়াস পার্লারের পাশে আরেকটি বিউটি পার্লারে চাকরি নেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি মাহফুজা ডিউটি শেষে মার্কেটের নিচে নামলে তার ওপর পূর্বপরিকল্পিত হামলা চালায় সাজিয়াসের মালিকপক্ষ ও তাদের লোকজন।
এ ঘটনার কয়েকটি ভিডিও যুগান্তরের হাতে এসেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, মাহফুজাকে চুলের মুঠি ধরে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাচ্ছেন হামলাকারীরা। তাকে বাঁচাতে মার্কেটের লোকজন এগিয়ে এলে তাদের ওপর চড়াও হন সাজিয়াস পার্লারের মালিকের স্বামী মেজর (অব.) সালাউদ্দিন।
পল্লবী থানার এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, পার্লারের মালিকের স্বামী অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা। তিনি খুব অ্যাগ্রেসিভ। থানায় এসে হুমকি-ধমকি দিয়ে পুলিশকে অনেক চাপে রেখে ২ বোনের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছেন।
লিজা বলেন, ঘটনার পর থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ তা আমলে নেয়নি। পরে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডে অভিযোগ দিলে দুপক্ষকে ডাকলেও তারা হাজির হয়নি।
সাংবাদিক পরিচয়ে জানতে চাইলে পার্লারের মালিক ফারজানা আফরিন বলেন, ‘আপনি অনুমতি ছাড়া কোনো খবর ছাপাতে পারবেন না। যদি ছাপান, আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেব আর আপনার ফোন নম্বর পুলিশকে দিচ্ছি।’
পল্লবী থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, ভিডিওগুলো দেখেছি। অভিযোগকারীরা এলে মামলা নেব।