Logo
Logo
×

রাজধানী

কর্মবিরতি ঘোষণা এআই টেকনিশিয়ানদের

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৫৬ পিএম

কর্মবিরতি ঘোষণা এআই টেকনিশিয়ানদের

সাত দফা দাবিতে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি খাতে কৃত্রিম প্রজনন সেবা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছেন কৃত্রিম প্রজনন কর্মীরা।

রোববার সকালে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ টেকনিশিয়ান (এ আই) কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. আজাদ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা আমাদের কর্মজীবনের বড় একটি দুঃসময়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। ১৯৯৬ সালে আমাদের দেশের বর্ধিত জনসংখ্যার প্রাণিজ পুষ্টির চাহিদা মেটাতে গো-সম্পদের জাত উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা জরুরি হয়ে পড়ে। বর্ধিত জনগোষ্ঠীর জন্য বর্ধিত দুধ এবং বর্ধিত মাংসের চাহিদার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। অর্গানোগ্রামে (জনবল কাঠামো) নিয়োগের সুযোগ না থাকায় পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন প্রকল্পে প্রশিক্ষণ দিয়ে সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে জাত উন্নয়নের জন্য প্রায় পাঁচ হাজার এআই টেকনিশিয়ান (স্বেচ্ছাসেবী) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর মনোনয়ন দান করে। একটি ইউনিয়নের একজন কাজ করবে এই কারণে আমরা বিনা বেতনে হলেও এটিকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিলাম।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, ১৯৯৬ সালে রাজস্ব খাতের ৯৫৭ জন জনবল দিয়ে পাঁচ লাখ গাভিকে কৃত্রিম প্রজনন করা হতো সেখানে বর্তমানে বিনা বেতনের এআই টেকনিশিয়ান দ্বারা ৪১ লাখ ৮০ হাজার গাভিকে কৃত্রিম প্রজননের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণ না হলেও মাংস উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। বিগত কোরবানির ঈদগুলো এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

কালের বিবর্তনে দেশে প্রজননক্ষম গবাদিপশুর সঠিক সংখ্যা নিরূপণ না করে বেসরকারি সিমেন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে কৃত্রিম প্রজনন কাজ করার অনুমোদন দিয়ে আমাদের পেশাকে হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। যথাযথ প্রশিক্ষণ না দিয়ে এসব কর্মীদের অধিকাংশকে মাঠে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে যা ভবিষ্যতে আমাদের জাত উন্নয়নকে ব্যাহত করবে। কৃত্রিম প্রজনন নীতিমালায় আমরা সবাই আটকে আছি অথচ বেসরকারি কর্মীরা তা মানছে না। মাঠ পর্যায়ে যথাযথ তদারকির ব্যবস্থা নিতান্তই অপ্রতুল।

বিরাজমান কঠিন বাস্তবতা মোকাবিলা করে প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও পেশাদারিত্ব ও দায়িত্ববোধের কারণে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে আসছে জানিয়ে মো. আজাদ হোসেন বলেন, আমাদের আন্দোলন সংগ্রামের মুখে বিগত ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ৫০০ টাকা প্রতীকী ভাতা শুরু করে পরবর্তীতে দুই হাজার টাকায় উন্নীত হওয়া ন্যূনতম এই ভাতাটি ০৯ (নয়) মাসের বকেয়া রেখে গত ২০২৪ সালের ৩০ জুন থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিনা বেতনে কাজ করেও প্রতি বছর আমরা সরকারকে প্রায় ৩০ কোটি টাকা রাজস্ব প্রদান করি।

তিনি আরও বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে আমরা অসহায়, জীবন ও জীবিকার বৃহত্তর স্বার্থে বাস্তবতার নিরিখে আমরা ৭ দফা দিয়েছি। আমাদের দাবি সমূহ কর্ণপাত না করায় আগামীকাল ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি খাতে কৃত্রিম প্রজনন সেবা বন্ধ হয়ে যাবে অর্থাৎ অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ এআই টেকনিশিয়ান কল্যাণ সমিতির কার্যকরী সভাপতি মাসুদ করিম, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দাবিগুলো হলো-

১. এআইটি কল্যাণ সমিতির নেতাদের সঙ্গে ইতিপূর্বে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অনুষ্ঠিত বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল (সম্মানজনক ভাতা/দৈনিক হাজিরা) তার দৃশ্যমান অগ্রগতি পরিলক্ষিত

করতে হবে।

২. একই ইউনিয়নে একাধিক এআইটি নিয়োগ প্রক্রিয়া (নিজ খরচ, যথাযথ প্রক্রিয়া বিহীন প্রশিক্ষণ) বাতিল করতে হবে।

৩. বেসরকারি কোম্পানিকে কৃত্রিম প্রজনন কাজ করার অনুমতি দিয়ে টার্গেট প্রথা বহাল রাখা অযৌক্তিক। টার্গেট পূরণের বাধ্যবাধকতা শিথিল করতে হবে।

৪. এআইটিদের চাহিদা মোতাবেক সিমেন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

৫. সরকারি সিমেনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার রোধ করতে হবে। সেক্ষেত্রে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস, জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস ও জেলা ডিডি (এআই) অফিসকে যথোপযুক্ত ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে।

৬. বেসরকারি এআই কর্মীদের উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসে মাসিক রির্পোট প্রদান নিশ্চিত করতে অফিস আদেশ জারি করতে হবে।

৭. সর্বোচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী যোগ্য এআইটিদের এফএ (এআই) পদে নিয়োগ প্রদান ত্বরান্বিত করতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম