সাভারের আশুলিয়ার কোনাপাড়া এলাকার নিউ পপুলার হাসপাতালে ভুয়া ডাক্তারের ভুল অপারেশনে পারভীন বেগম (৩৬) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত হাসপাতাল মালিক মুজিবুর রহমানকে (৫৫) দুই মাস পর গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে র‍্যাব-৪ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

গ্রেফতার মজিবুর রহমান আশুলিয়ার নাল্লাপোল্লা গ্রামের মৃত ইসমাইল মিয়ার ছেলে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ৬ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে পারভিন বেগমকে প্রসব বেদনার কারণে আশুলিয়া থানাধীন জিরানী কোনাপাড়া এলাকার নিউ পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সিজার বাবদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে ১৭ হাজার টাকায় চুক্তি করা হয়। পরবর্তীতে দুপুর ১টার দিকে পারভিনকে সিজারের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায় এবং চার ব্যাগ রক্ত লাগবে বলে তার পরিবারকে জানানো হয়।

বিকেল পৌনে ৪ টার দিকে হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানায় যে, পারভিনের একটি কন্যা সন্তান হলেও তার (পারভিন) অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিতে হবে এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কৌশলে পারভীনকে গাড়ীতে উঠানোর সময় তার পরিবারের সদস্যরা জানতে পারে, সে মারা গেছে।

এসময় তার পরিবারের লোকজন উত্তেজিত হয়ে উঠলে হাসপাতালের স্টাফরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে পারভিনের স্বামী জানতে পারেন, যে ডাক্তার সিজার করেছে সেই ডাক্তার একজন ভুয়া চিকিৎসক। এই ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ঘটনার পর থেকে হাসপাতালের মালিক মুজিবুর রহমান পলাতক ছিলেন। ঘটনার দুই মাস ১২ দিন পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকার ধামরাই বাজার থেকে র‌্যাব-৪, সিপিসি-২ এর একটি আভিযানিক দল তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় নিউ পপুলার হাসপাতালের মালিককে গ্রেফতার করে।

র‌্যাব আরও জানায়, আসামী জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন যে, নিউ পপুলার হাসপাতাল দীর্ঘদিন যাবৎ ভুয়া চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসার নামে বাণিজ্য করে আসছিল। গত ৬ সেপ্টেম্বর ভুয়া চিকিৎসক দিয়ে ভিকটিম পারভিনকে সিজার করা হলে তার মৃত্যু হয়েছে।

নিহত পারভিন রাজবাড়ীর লক্ষ্মী নারায়ণপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী। সে তার স্বামী ও চার সন্তান নিয়ে আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের গোহাইলবাড়ি দীঘিরপাড় এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।