ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেও হত্যা মামলার আসামি
উত্তরা পশ্চিম (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০৮ পিএম
রাজধানীর উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পানি খাওয়ানোসহ নানারকম সহযোগিতা করেও ছাত্রহত্যা মামলায় নাম এসেছে সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী এম শরীফ উদ্দিনের।
এঘটনায় মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার ও উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরা।
রোববার দুপুর ১টায় উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে উত্তরা প্রেসক্লাবের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক হত্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগীর স্ত্রী আখিসহ পরিবারের সদস্যরা।
জানা যায়, ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা ও সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী এম শরীফ উদ্দিন। কিন্তু তারপরও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় বর্তমানে অন্যায়ভাবে জেলে রয়েছেন তিনি।
ভুক্তভোগী এম শরীফুর উদ্দিনের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী কখনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না থেকেও তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। তিনি একজন ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক। গত কিছু দিন আগে যৌথ বাহিনী তাকে তুলে নিয়ে যায়। বর্তমানে সে অন্যায়ভাবে জেলখানায় আছে।
তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীদের পানি, খাবার, স্যালাইন দিয়ে অনেকভাবে সহযোগিতা করেছেন এমন অনেক প্রমাণই আমার কাছে আছে। সে উত্তরা ৪নম্বর সেক্টর কল্যাণ সমিতির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় প্রতিপক্ষরা তাকে ফাঁসাতে মামলার আসামি করা হয়েছে। আমি আমার স্বামীর নামে দেওয়া মিথ্যা মামলার প্রত্যাহার ও দ্রুত মুক্তি চাই।
শরীফ উদ্দিনের ভাতিজি উর্মি বলেন, আমরা মামলার বাদির সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছে আমরা শরীফ উদ্দিন নামে কাউকে চিনি না। আমাদের মামলার আসামি ছিল ১৬ জন পরে শুনি ২০০ এর বেশি মানুষকে আসামি করা হয়েছে। কে বা কারা এসব নাম মামলায় যুক্ত করেছে তার কিছুই আমরা জানি না।
সংবাদ সম্মেলনটিতে উপস্থিত থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি খাওয়া উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থী আকাশ বলেন, আন্দোলন করতে গিয়ে ৫ আগস্টে আমি গুলিবিদ্ধ হই। আমাকে হাসপাতালে নেওয়াসহ চিকিৎসা বাবদ অনেক সহযোগিতা করেছেন এম শরীফ উদ্দিন। আর এখন শুনি তিনিই নাকি হত্যা মামলার আসামি। মামলা থেকে শরীফ উদ্দিনের নাম প্রত্যাহার করে দ্রুত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ সময় উপস্থিত থাকা প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী এম শরিফ উদ্দিন আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে সক্রিয় থাকার ব্যাপারে সাক্ষ্য দেন।
উত্তরা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সিফাত বলেন, আমার বাসা এম শরীফর উদ্দিনের বাসার পাশেই। যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয় তখন চাচা আমাকে আন্দোলন করার পরামর্শ দেন এবং আমাকে বলে তাদের যখন যা লাগবে আমাকে বললে আমি ব্যবস্থা করে দিব। আজমপুর থেকে এপিবিএন পর্যন্ত আমরা যারা ছিলাম তাদের খাবার, পানিসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন তিনি। আজকে দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, যাদের নিয়ে আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন করেছি তারাই আজ মিথ্যা মামলায় জেলে। এমন দেশতো আমরা চাইনি।