হাতিরঝিলে তামিম হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি মামুন বরখাস্ত

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১০ পিএম

রাজধানীর হাতিরঝিলে তানজিল জাহান তামিম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মামুনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মকর্তা তামিম হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি ওই ঘটনার পর থেকে পলাতক। একই ঘটনার অন্যতম আসামি পলাতক বিএনপি নেতা শেখ রবিউল আলম রবির সাংগঠনিক পদ স্থগিত করেছে বিএনপি। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মাদক কর্মকর্তা মামুনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। ওই মামলায় তাকে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে তাকে ক্লোজ করে আমরা সদর দফতরে নিয়ে এসেছি। তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
চাঞ্চল্যকর তামিম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- মো. আব্দুল লতিফ, মো. কুরবান আলী, মাহিন, মোজাম্মেল হক কবির, বাঁধন ও মো. রাসেল। তারা সবাই ৪ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।
এদিকে তামিম খুনের ঘটনায় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম রবির সাংগঠনিক পদ স্থগিত করেছে বিএনপি। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে তাকে।
গতকাল বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রবির সব সাংগঠনিক পদ স্থগিত থাকবে। গত ১১ অক্টোবর রবিকে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। পরবর্তীতে শেখ রবি যে জবাব দিয়েছেন তা সন্তোষজনক না হওয়ায় সব সাংগঠনিক পদ স্থগিত করা হলো। এ হত্যা মামলায় তিন নম্বর আসামি শেখ রবিউল আলম রবি পলাতক।
বৃহস্পতিবার সকালে হাতিরঝিল এলাকায় খুন হন তানজিল জাহান ইসলাম। এ ঘটনায় ১৬ জনকে আসামি করে মামলা করেন নিহত তানজিল জাহান ইসলাম ওরফে তামিমের বাবা। বাড়ি নির্মাণ ও ফ্ল্যাট ভাগাভাগি নিয়ে আবাসন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিরোধের জেরে জমির মালিকের ছেলেকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
১১ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডে বিএনপি নেতা শেখ রবিউল আলমের সম্পৃক্ততা প্রাথমিকভাবে পাওয়া গেছে। তিনি কোম্পানির মালিক। তার সঙ্গে জমির মালিকের দ্বন্দ্ব ছিল। এ ছাড়া এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মামুনের প্রাথমিক সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। মামুন তার শ্বশুরের নামে ওই ভবনে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন।
ডিএনসির সূত্র বলেছে, মামুন চট্রগ্রাম মেট্রোর উপ-পরিচালক থেকে ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে উপ-পরিচালক (প্রশাসন), এরপর ঢাকা বিভাগীয় গোয়েন্দার উপ-পরিচালক, তারপর ফের চট্রগ্রাম মেট্রোর উপ-পরিচালক হন। সেখান থেকে তাকে কয়েক মাস আগে নারায়ণগঞ্জে বদলি করা হয়। গত ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর বৈষম্যের শিকার এমন দাবি করায় তাকে ঢাকায় এনে দক্ষিণের ডিসি করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. রুহুল কবির খান জানান, তামিমকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাটি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হাতিরঝিল থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্তে যার নামই আসুক, সে যেই হোক কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।