চাকরিতে বৈষম্যের অবসান চান পেট্রোবাংলার অস্থায়ী কর্মচারীরা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৫ পিএম
পেট্রোবাংলা ও পেট্রোবাংলার আওতাধীন ১৩টি কোম্পানির চাকরিতে বৈষম্য দূর করার এক দফা দাবি জানিয়েছেন অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োজিত আউটসোর্সিং, মাস্টাররোল, চুক্তিভিত্তিক, দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরতরা।
তাদের দাবি- আউটসোর্সিং, মাস্টাররোল, চুক্তিভিত্তিক, দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরত সবাইকে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানে বয়স শিথিল করে স্থায়ীকরণ করতে হবে।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘পেট্রোবাংলা ও এর আওতাধীন সব কোম্পানির অস্থায়ী কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
এ সময় বলা হয়, স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারি গ্রেডে বেতন, প্রফিট বোনাস, উৎসব বোনাস, চিত্তবিনোদন ভাতা, এক্সজেসিয়া বোনাস, ইনসেনটিভ বোনাস, পোশাক ভাতা, সন্তানদের জন্য চিকিৎসা ভাতা, বৈশাখী ভাতা, ইনক্রিমেন্ট ও সব ধরনের ছুটিসহ নানা সুযোগ-সুবিধা পেলেও অস্থায়ী কর্মচারীরা কেবল মাসিক বেতন পেয়ে থাকেন। এ বিষয়টি সুস্পষ্ট বৈষম্য, এর অবসান হওয়া দরকার। আউটসোর্সিং নীতিমালা ২০১৮ বলবৎ থাকলে এ বৈষম্য অব্যাহত থাকবে, যা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অন্তরায়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, স্থায়ী কর্মচারীদের বাৎসরিক ইনক্রিমেন্টের ব্যবস্থা থাকলেও এ নীতিমালা অনুযায়ী আমাদের বাৎসরিক ইনক্রিমেন্টের ব্যবস্থা নেই। ফলে আমরা বছরের পর বছর একই বেতনে কাজ করে যাচ্ছি। ‘আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবাগ্রহণ নীতিমালা, ২০১৮’ প্রণয়ন করার ফলে একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত একই পদের স্থায়ী ও আউটসোর্সিং-এর মধ্যে বেতন বৈষম্য তৈরি হয়েছে। এছাড়া বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বছরের দুটি ঈদ, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উৎসব
এবং বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে আমাদের কোনোপ্রকার ভাতা দেওয়া হয় না।
বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর নবম অধ্যায়ের ‘কর্মঘণ্টা ও ছুটি’ এর ১০৮ নম্বর ধারায় অধিকাল কর্মের জন্য অতিরিক্ত ভাতা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নের নাম করে আমাদের অতিরিক্ত কাজের জন্য অতিরিক্ত ভাতা দেওয়া থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আমাদের অস্থায়ী কর্মচারীদের কোনো ছুটির ব্যবস্থা নেই। আমরা অস্থায়ী কর্মচারী হওয়ার কারণে আমাদের কোনো প্রকার ছুটি দেওয়া হয় না। আমাদের মধ্যে যারা নারী কর্মচারী রয়েছেন, তাদের মাতৃত্বকালীন ছুটির ব্যবস্থা নেই। এক্ষেত্রে চাকরি বাঁচাতে সন্তানকে কোরবানি দিতে হয় অথবা সন্তান বাঁচাতে নিজের আয়-উপার্জনের একমাত্র পথ চাকরি হারাতে হয়। পক্ষান্তরে কোম্পানির স্থায়ী কর্মকর্তা ও কর্মচারী হওয়ার কারণে চিত্ত বিনোদনের জন্য স্বপরিবারে ৭ দিন প্রমোদ ভ্রমণ, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাসহ প্রাপ্ত বেসিকের সমপরিমাণ টাকা পেয়ে থাকেন, যা আমাদের দেওয়া হয় না।
অস্থায়ী কর্মচারীরা বলেন, আউটসোর্সিং-এর নীতিমালা অনুযায়ী আমাদের কোনো ভবিষ্যত নেই। চাকরি শেষে বৃদ্ধ অবস্থায় খালি হাতে ফিরে পরিবারের বোঝা হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
এসময় দেশের সংবিধানের আলোকে পেট্রোবাংলা ও এর আওতাধীন সব কোম্পানিকে সব ধরনের বৈষম্যমুক্ত করতে জোর দাবি জানায় ‘অস্থায়ী কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ’।