রাজধানীর ওয়ারীতে দুই ভাইকে খুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

গ্রেফতাররা হলেন- মো. আকবর হোসেন (৬০), মো. আসিফ সুলতান সিফাত (২৭) ও আজাহারুল ইসলাম খান রিয়ান (২৮)। ওয়ারী থানা পুলিশ শুক্রবার ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে।

ফ্ল্যাট ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে পূর্বশত্রুতার জেরে দুই ভাইকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিহত দুই ভাই হলেন- আলামিন ভূঁইয়া (৪২) ও নুরুল আমিন ভূঁইয়ার (৩২)। আলামিন গার্মেন্টসের ব্যবসা করতেন এবং নুরুল আমিন ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন বলে জানা গেছে।

শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. ছালেহ উদ্দিন।

তিনি বলেন, নিহত নুরুল আমিন ভূঁইয়ার (৪০) আপন মেজো ভাই আলামিন ভূইয়া (৩৮)। ওয়ারী থানাধীন ১০নং হাটখোলা রোডের ক্লাসিক রিয়েল এস্টেট কোম্পানির কাছ থেকে একটি ফ্ল্যাট ক্রয়ের চুক্তি করেন আলামিন। ওই ফ্ল্যাটের ল্যান্ড ওনার (জমির মালিক) অ্যাডভোকেট আকবর গং-এর সঙ্গে ২০১৪ সালে রিয়েল এস্টেট কোম্পানির মালিক রিপনের চুক্তি হয়।পরে ১০ বছরেও নির্ধারিত স্থানে ভবন নির্মাণ না করায় ল্যান্ড ওনার নিজেদের অর্থায়নে ভবন নির্মাণ করেন।যেহেতু আলামিন ভূঁইয়ার সঙ্গে ক্লাসিক রিয়েল এস্টেট কোম্পানির ফ্ল্যাট ক্রয়ের চুক্তি হয়েছিল, সেহেতু আলামিন ভূঁইয়া তার ভাই নুরুল আমিন ভূঁইয়াকে সঙ্গে নিয়ে গত ১৪ আগস্ট ঘটনাস্থলে নির্মাণাধীন ফ্ল্যাট দেখতে যান।

ডিসি জানান, ওই সময় আসামি সিফাতের নেতৃত্বে আসামি আকবর, রিয়ান ও পলাতক অন্যান্য আসামিদের সহযোগিতায় ভিকটিম আলামিন ও নুরুল আমিনকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে স্টিলের ব্যাটন, স্টিলের চাকু, চাইনিজ কুড়াল দিয়ে বুক, পিঠ, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে এলোপাতাড়ি গুরুতর জখম করে।আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার বিষয়ে নিহতদের আপন বড় ভাই রুহুল আমিন ভূঁইয়া একটি হত্যা মামলা করেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, মামলার পর ওয়ারী থানার একটি বিশেষ টিম ঘটনাস্থলের আশেপাশের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে এবং সোর্সের দেওয়া তথ্য মোতাবেক আসামিদের শনাক্ত করে। পরে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আসামিদের অবস্থান নির্ণয় করে গতকাল (২০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।এরপর তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওয়ারী থানাধীন ১০নং হাটখোলা রোডের নির্মাণাধীন ভবনের বাসা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ১টি চাইনিজ কুড়াল, ১টি বৈদ্যুতিক শক স্ট্যান্ড, ১টি চাকু, একটি স্টিলের ব্যাটন উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।