চুরির অপবাদে শিশু গৃহকর্মীকে ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে নির্যাতন
যুগান্তর প্রতিবেদন, সাভার
প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৪, ০৮:২৩ পিএম
ঢাকার সাভারে চুরির অপবাদে এক শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক দম্পতির বিরুদ্ধে। শিশুটিকে ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে ও ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। শনিবার বিকালে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পৌর এলাকার রাজাশন মহল্লায় এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ওই দম্পতিকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নির্যাতনের শিকার শিশুটি (১০) রাজাসন এলাকার কাজী ইসমাইল হোসেন ও মাহমুদা খাতুন দম্পতির বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করত। কাজী ইসমাইল হোসেন বরগুনা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক। তার স্ত্রী মাহমুদা খাতুন গৃহিণী। শিশুটিকে তাদের বরগুনার বাসাতেই বেশিরভাগ সময় নির্যাতন করা হয়েছে। কয়েক দিন আগে শিশুটিকে নিয়ে ইসমাইল ও তার স্ত্রী রাজাশনের বাসায় আসেন। ওই এলাকায় শিশুটির বাবা ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকেন।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ওই শিশু বলে, আমি প্রায় এক বছর আগে ওই বাসায় কাজে যাই। প্রথম অবস্থায় স্যার ও স্যারের স্ত্রী আমাকে খুব আদর করত। কিন্তু কিছুদিন পর থিকা কাজে ভুল ধইরা ধইরা তারা প্রায়ই আমারে ছুরি দিয়ে আঘাত করত। মারপিট করত।
শিশুটি আরও বলে, কয়েকদিন আগে দুই হাজার টাকা চুরির অপবাদ দিয়া স্যার ও স্যারের স্ত্রী আমার পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছুরি দিয়া খুঁচাইয়া খুঁচাইয়া নির্যাতন করে। ব্যাট দিয়া আমার পায়ে ও মাথায় বাইরাইচে। আমি অসুস্থ হইয়া পড়লে গতকাল আমারে আমাগো বাড়িতে দিয়া যায়। আমরা যাতে এই কথা কাউরে না কই, সেইজন্য বাবারে হুমকি দিয়া গেছে। পরে কিছু লোক খবর পাইয়া আইজ শনিবার দুপুরে আমারে হাসপাতালে আইনা ভর্তি করছে।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সায়েমুল হুদা বলেন, শিশুটির সারা শরীরে নতুন ও পুরাতন ভোঁতা এবং ধারালো অস্ত্রের ক্ষত রয়েছে। তাকে আজ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সে হাসপাতালে ভর্তি থাকবে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাভার থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারনুক বলেন, চিকিৎসকের বর্ণনা অনুযায়ী শিশুটি নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তার সারা শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। নির্যাতনের অভিযোগে গৃহকর্তা কাজী ইসমাইল হোসেন ও তার স্ত্রী মাহমুদা খাতুনকে পুলিশ শনিবার বিকালে রাজাশনের বাসা থেকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে শিশুটির মা সাভার থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।