শ্যামপুরে জালটাকা প্রস্তুতকারী চক্রের মূলহোতা গ্রেফতার
শ্যামপুর (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২৪, ০৩:০৪ পিএম
রাজধানীর শ্যামপুর থেকে জালটাকা প্রস্তুতকারী চক্রের মূলহোতা হৃদয় মাতব্বরকে (২২) গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে পশ্চিম ধোলাইপাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় জালনোট তৈরিতে ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি এবং বিপুল পরিমাণ জালনোট উদ্ধার করা হয়।
সম্প্রতি ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে জালনোটের অবাধ কারবার নিয়ে দেশব্যাপী বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হলে এসব সংঘবদ্ধ জালটাকা প্রস্তুতকারী চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে বিশেষ গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে র্যাব।
র্যাবের গোয়েন্দা সূত্র জানতে পারে আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু জালনোট প্রস্তুতকারী চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। পরে র্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ধোলাইপাড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এই চক্রের মূলহোতা হৃদয়কে গ্রেফতার করে।
এ সময় গ্রেফতার আসামির হেফাজত থেকে জালনোট তৈরিতে ব্যবহৃত ১টি সিপিইউ, ১টি মনিটর, ১টি প্রিন্টার, ১টি কী-বোর্ড, ১টি মাউস, ১টি রাউটার, ২টি মাল্টিপ্লাগ, ১টি পেপার কাটার, ৯টি ভুয়া এনআইডি কার্ড, ৩টি ভুয়া ভারতীয় এনআইডি কার্ডের ফটোকপি এবং ৬০,৭০০ টাকা মূল্যমানের জালটাকা (৬০২ টি ১০০ টাকার নোট এবং ০১ টি ৫০০ টাকার নোট) উদ্ধার করেন।
সহকারী পুলিশ সুপার মো: শামিম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতার আসামি অনেক আগ থেকেই কম্পিউটারে পারদর্শী ছিল। সে ধোলাইপাড় এলাকার একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ করত। ইউটিউব থেকে জালটাকা বানানোর প্রক্রিয়া দেখে এবং নিজের অর্জিত কম্পিউটার দক্ষতা কাজে লাগিয়ে জাল নোট তৈরিতে পারদর্শিতা অর্জন করে।
পরে হৃদয় কম্পিউটার, প্রিন্টার, পেপার কাটার এবং জালটাকা তৈরির কাঁচামাল সংগ্রহ করে নিজ গৃহে জালটাকা ছাপানোর কাজ শুরু করে। বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া ও অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করে জাল টাকা বিক্রয়ের জন্য নেটওয়ার্ক তৈরি করে এবং এসব পেইজ প্রমোট ও বুস্টিং করে অনেক পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা সংগ্রহ করে।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে জাল নোট প্রস্তুত ও বিক্রয় করে আসলেও আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহাকে টার্গেট করে বিপুল পরিমাণ জাল নোট বাজারে সরবরাহ করার প্রস্তুতি নিয়েছিল।
গ্রেফতারকৃত হৃদয় ১ লক্ষ টাকা মূল্যমানের জাল নোট ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করত।
ঈদ উপলক্ষে জাল নোটের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে সে প্রতি ১ লাখ টাকার জাল নোট ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে।
এ ছাড়া গ্রেফতার আসামি অবৈধভাবে দেশি ও বিদেশি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে সেগুলো বিভিন্ন অপরাধী চক্রের নিকট বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে বিক্রয় করে আসছিল। এসকল জালনোট প্রস্তুতকারী চক্রের বিরুদ্ধে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।
গ্রেফতার আসামির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।