‘পরেরবার হাত-পা-মাথা আলাদা করে দিয়ে যাবে, তার আগেই টাকা রেডি রাখ’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ০৯:২৬ পিএম
অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক। ছবি- যুগান্তর
রাজধানীর আদাবর এলাকায় চাঁদা না দেওয়ায় অনুসারীদের দিয়ে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক চা দোকানির ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এ সময় তার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদেরও মারধর করা হয়। এরপরও চাঁদা না দিলে তাকে হত্যার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।
শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় আদাবর ১৬ নম্বর কাঁচা বাজারের সামনের এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেছেন তোফাজ্জল হোসেন।
অভিযুক্ত যুবলীগ নেতার নাম আব্দুর রাজ্জাক। তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর আদাবর থানার ৩০ নাম্বার ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি।
ভুক্তভোগী তোফাজ্জল হোসেন যুগান্তরকে বলেন, আদাবর ১৬ নম্বর ব্রিজের ওপর আমার চা দোকান রয়েছে। পাশাপাশি কয়েকটি রিকশাও আছে। কয়েকদিন আগে আমার দোকানে এসে যুবলীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক ও তার সহযোগী সোহাগসহ আরও ৪-৫ জন আমার কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। দোকান চালাতে হলে এককালীন ২০ হাজারসহ প্রতি মাসে এক হাজার টাকা চাঁদা দিতে বলে হুমকি দিয়ে যায়।
তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর গত শুক্রবার রাজ্জাকের অনুসারী সোহাগ, শাকিল ও তার ভগিনীপতি, অটো জামাল ও তার ভগিনীপতিসহ প্রায় ৭০-৮০ জনের একটি বাহিনী আমার এক রিকশাচালককে রিকশাসহ আটক করে মারধর করে। আমি তাকে বাঁচাতে গেলে আমাকেও আটকে মারধর করা হয়। এ সময় আমার চিৎকার শুনে আমার স্ত্রী, ছেলে, খালা শাশুড়ি ছুটে আসলে তাদেরও মারধর করে গুরুতর আহত করা হয়। পাশেই কাঁচা বাজারের ৩-৪ জন দোকানদার আমাকে বাঁচাতে এলে তাদেরও মারধর করে।
এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না জানিয়ে ভুক্তভোগী এই চা দোকানি বলেন, এখন পর্যন্ত পুলিশের কোনো ভূমিকা চোখে পড়েনি। পুলিশ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে, হামলার পর রাতে যুবলীগ নেতা রাজ্জাক তার দোকানে এসে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে গেছে বলেও অভিযোগ করেন তোফাজ্জল হোসেন। যাওয়ার সময় যুবলীগের ওই নেতা বলে গেছেন ‘আজকে মাল (ধারাল অস্ত্র) ছাড়া পোলাপাইন হালকার ওপর দিয়ে গেছে। এরপর আবার আসতে হলে হাত-পা-মাথা আলাদা করে দিয়ে যাবে। তার আগেই টাকা রেডি রাখ।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে যুবলীগ নেতা রাজ্জাকের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ৩০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, মারামারির খবর আমরা পেয়েছি। বিষয়টি সমাধানের জন্য দুপক্ষকে নিয়ে বসব।
ডিএমপি আদাবর থানার ওসি মাহবুবুল হক যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিচ্ছি।