যমুনা ফিউচার পার্কে জমজমাট ঈদ কেনাকাটা, সকাল থেকেই উপচেপড়া ভিড়
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫৫ পিএম
ঈদ ঘিরে জমজমাট দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্ক। শপিংমলে দেশি-বিদেশি সব ব্র্যান্ড একসঙ্গে থাকায় কেনাকাটায় ব্যাপক সুবিধা পান ক্রেতারা। তাই সকাল থেকেই আসতে থাকেন তারা। বিকাল নাগাদ লোকে লোকারণ্য হয় চারপাশ। রাতে ভিড় আরও বাড়ে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সুবিশাল এ শপিংমলে ভিড় থাকলেও রোজা রেখে স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করতে পারছেন ক্রেতারা। আর উন্নতমানের সব পণ্য পেয়ে খুশি তারা।
বুধবার সন্ধ্যায় অনেকে শপিংমলের ফুডকোর্টে ইফতার সেরে আবার কেনাকাটায় মেতে ওঠেন। ইফতারের পর ফের ঢল নামে আস্থার শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্কে। মধ্যরাত পর্যন্ত চলে কেনাকাটা। এ সময় যমুনা ফিউচার পার্কের মেট্রো ফ্যাশন, দেশের শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড হুর, ইনফিনিটি, কে ক্রাফট, অঞ্জনস, আড়ং, জিন্স অ্যান্ড কোম্পানি, টুয়েলভ, রেড, জেন্টল পার্ক, টিন’স ক্লাব, প্লাস পয়েন্ট, কান্ট্রি বয়, রেঞ্জ, সিক্স লাইফ স্টাইল, লা রিভ, আর্টিসান, টপ টেন মার্ট পোশাকের ব্র্যান্ড ও শপগুলোতে প্রচুর ক্রেতা সমাগম দেখা যায়।
এদিকে যমুনা ফিউচার পার্কে ঈদ কেনাকাটায় আকর্ষণীয় ক্যাম্পেইনের আয়োজন করেছে স্বনামধন্য শিল্পগোষ্ঠী যমুনা গ্রুপ। শপিংমলের যে কোনো শোরুম থেকে ন্যূনতম ৫০০ টাকার পণ্য কিনলেই পুরস্কার জেতার সুযোগ পাচ্ছেন ক্রেতা। লটারিতে প্রতিদিনই স্বর্ণ, মোটরসাইকেল, টিভি, ফ্রিজ, ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক পণ্যসহ নানা আকর্ষণীয় ও নিশ্চিত পুরস্কার পেয়ে হাসিমুখে তারা বাড়ি ফিরছেন। এতে ক্রেতাদের ঈদ আনন্দে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা।
দুপুরে আড়ং আউটলেটে কেনাকাটা করছিলেন খিলগাঁও থেকে আসা লাকি আক্তার। তিনি যুগান্তরকে বলেন, যমুনা ফিউচার পার্ক উদ্বোধনের পর থেকে আমি এখান থেকে কেনাকাটা করি। কারণ এখানে একই ছাদের নিচে সবকিছু পাওয়া যায়। ঈদ ঘিরে পরিবারের সবার জন্য কিছু কেনাকাটা করছি। তিনি বলেন, বাইরে অনেক গরম। আর এখানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সুবিশাল শপিংমলে স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করা যায়। বিশাল জায়গা হওয়ায় এই শপিংমলে ক্রেতার ভিড় থাকলেও কোনো সমস্যা হয় না। তাই যে কোনো উপলক্ষ্য পেলেই এখান থেকে কেনাকাটা করি। আর দেশি-বিদেশি সব ব্র্যান্ড একসঙ্গে থাকায় কোনো চিন্তা নেই। এক শোরুম থেকে অন্য শোরুমে ঘুরে ঘুরে কেনাকাটা করা যায়।
শপিংমলের ইনফিনিটি শোরুমে কেনাকাটা করছিলেন গুলশান-২ থেকে আসা নাজমুল। তিনি বলেন, আমি আমার স্ত্রী ও ছোট বাচ্চাকে নিয়ে এখানে ঈদ কেনাকাটা করতে এসেছি। বাবুটার জন্য দুই সেট পোশাক কিনেছি। এবার আমার ও আমার স্ত্রীর পোশাক কেনার পালা। যমুনা ফিউচার পার্কে কেনাকাটা করতে আসি কারণ এখানে সবকিছু সুলভ মূল্যে সাধ্যের মধ্যে পাওয়া যায়।
এদিন বিকালে অঞ্জন্স আউটলেটে গিয়ে দেখা যায়, বাবা-মার সঙ্গে ঈদ কেনাকাটা করতে এসেছে শিশুরাও। যার যার পছন্দ অনুযায়ী পোশাক কিনছে। মা-বাবার সঙ্গে আসা মালিহা (৯) বলে, আমি ঈদের জন্য নতুন জামা কিনতে এসেছি। জামা কেনা শেষ। এখন জুতা কিনতে যাব।
এদিকে কে ক্রাফটের শোরুমে প্রবেশ করতেই দেখা গেল পাঞ্জাবির বাহার। যেগুলোর দাম পড়বে ১২০০-১৫০০ টাকা। এখানে ফতুয়া পাওয়া যাচ্ছে ৮০০-১২০০ টাকায়। পায়জামা ৭০০-১০০০ টাকায়। ছেলেদের পোলো শার্ট পাওয়া যাচ্ছে ৬৯০-১২০০ টাকায়। মেয়েদের বাহারি এবং অসাধারণ সব মটিফের সালোয়ার-কামিজ পাওয়া যাচ্ছে ৩৫০০-৮৫০০ টাকায়। কুর্তি পাওয়া যাচ্ছে ১২০০-৫৫০০ টাকায়। সুতি শাড়ি ২২০০-৩৫০০ টাকায়, হাফ সিল্ক ২৫৯৫-৬৫০০ টাকায়, সিল্কের শাড়ি ৭৫০০-১৫০০০ টাকায়। এখানে আরও আছে ঈদের বিশেষ আকর্ষণ ফ্যামিলি ড্রেস।
ইনফিনিটিতে ঈদ উপলক্ষ্যে মেয়েদের জন্য এসেছে সালোয়ার-কামিজ। যেগুলোর দাম রাখা হয়েছে ৩৫০০-৬০০০ টাকা। সুতি শাড়ি ২২০০-৯০০০ টাকা। সিঙ্গেল কামিজ ১৬০০-৩০০০ টাকা, ওয়েস্টার্ন টপ ১৪৫০-২০০০ টাকা। ইনফিনিটিতে ছেলেদের জন্য নানা ধরনের পাঞ্জাবি এসেছে। সাদা, এমব্রয়ডারি এসব পাঞ্জাবির দাম পড়বে ২৫০০-৬০০০ টাকা।
সন্ধ্যায় শপিংমলের বাটা শোরুমে কথা হয় গুলশান-১ থেকে আসা জারার সঙ্গে। তিনি বলেন, এবার জুতার দাম আগের তুলনায় অনেক বেশি। তারপরও বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন এনেছে। সবচেয়ে ভালো লেগেছে বাটা শোরুমে দামি ও ফ্যাশনেবল জুতা পাওয়া যাচ্ছে।
যমুনা বিল্ডার্সের পরিচালক (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) ড. আলমগীর আলম বলেন, যমুনা ফিউচার পার্কে ক্রেতারা দেশি-বিদেশি সব ব্র্যান্ড একই ছাতার নিচে পাচ্ছেন। প্রথম থেকেই এখানে যারা ব্যবসা করছেন তারা স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবসা করছেন। সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করছেন। ক্রেতারাও ভালোমানের পণ্য পাচ্ছেন। এজন্য সবার পছন্দের শীর্ষে এখন যমুনা ফিউচার পার্ক। তাই সবাইকে দক্ষিণ এশিয়ার এই সর্ববৃহৎ শপিংমলে এসে ঈদ কেনাকাটা করতে স্বাগত জানাচ্ছি।
কোটি টাকার ঈদ উপহার : ঈদ ঘিরে যমুনা ফিউচার পার্কে কেনাকাটা করে কোটি টাকার উপহার জেতার সুযোগ করে দিয়েছে শপিংমল কর্তৃপক্ষ। আর এ অফারের আওতায় শপিংমলের যে কোনো শোরুম থেকে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকার কেনাকাটা করলেই থাকছে এক ভরি স্বর্ণ, মোটরসাইকেল, টিভি, ফ্রিজ, ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক পণ্যসহ নানা ধরনের আকর্ষণীয় উপহার জেতার সুযোগ। এই ক্যাম্পেইন চলবে চাঁদরাত পর্যন্ত। ক্রেতারা যাতে সহজে উপহার পেতে পারেন সেজন্য শপিংমলের সেন্টার কোর্টে গিফটের পৃথক বুথ করা হয়েছে। পণ্য ক্রয়ের রসিদ নিয়ে সেখানে থাকা কিউআর কোড অথবা gift.jamuna.info এ তথ্য দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতা উপহার জিতলে বুথ থেকে সংগ্রহ করতে পারছেন। বুধবারও এই আয়োজনে যারা অংশ নিয়েছেন তাদের মাঝে উপহারসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়েছে।
এদিন যারা ঈদ উপহার বিজয়ী হয়েছেন তাদের মধ্যে গোল্ড নোজ পিন পেয়েছেন মো. মিরাজ, রাইস কুকার পেয়েছেন মো. এনামুল, শাম্মি, বাবুল সরকার, মাহবুবা, মো. বাবু, মো. রহিত, সুমাইয়া। ব্লেন্ডার অ্যান্ড জুসার পেয়েছেন মো. শাহদাত, মোহাম্মদ আসাদ, মো. রবিন, মো. গোলাম রাব্বানী। ইলেকট্রিক কেটলি পেয়েছেন মো. উমর ফারুক, মো. বিজয়, মো. রবিউল, মো. গোলাম রাব্বানী। ড্রাই আয়রন পেয়েছেন মো. শান্ত, মো. মেহেদি, মো. তরিকুল, মো. তানজীম হোসেইন, মো. শান্ত, মো. সাইদ আকন্দ সোহান প্রমুখ।