শ্যামলী খেলার মাঠে মেলা বসিয়েছেন যুবলীগ নেতা
মোহাম্মদপুর (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৪, ১০:৫১ পিএম
শ্যামলী রিং রোডের খেলার মাঠ দখল করে বসানো হয়েছে মাসব্যাপী বস্ত্রমেলা। ছবি: যুগান্তর
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শ্যামলী খেলার মাঠ দখল করে ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে মাসব্যাপী পাট ও বস্ত্রমেলা বসিয়েছেন স্থানীয় যুবলীগ নেতা রিয়াজ আহমেদ। মাঠটি মেলার দখলে যাওয়ায় খেলাধুলা করতে পারছে না স্থানীয় শিশু-কিশোররা। তারা চাপা কষ্ট নিয়ে এখন গলির সড়কেই ক্রিকেট-ফুটবল খেলছে।
খেলার মাঠ দখল করে মেলা বসানো রিয়াজ আহমেদ ঢাকা মহানগর উত্তর ৩০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। স্থানীয়দের দাবি, মাঠের জায়গা দখল করে এই যুবলীগ নেতা মাঠের ভেতরেই দীর্ঘদিন ধরে ক্লাব বানিয়ে রেখেছেন।
সরেজমিন শ্যামলী মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, পুরো মাঠে বসা মেলার দোকানপাটে যাতায়াতের জন্য মাঠ নষ্ট করে ইট বসিয়ে শুকনা বালি ও সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই দেওয়া হয়েছে। ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় কয়েক শতাধিক গর্ত করে বাঁশ, লোহার খুঁটি ও পাকা পিলার বসিয়ে কয়েকশ দোকানসহ শিশুদের বিভিন্ন খেলনা নাগরদোলা, সুইমিং পুল, পুতুল নাচ, মোটরসাইকেল রাইডসহ বেশ কয়েকটি খেলনা বসানো হয়েছে। এভাবে খেলার পুরো মাঠটি দখলের পাশাপাশি নষ্ট করা হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাঠের পাশে গড়ে ওঠা ক্লাবের নেতারা খেলার মাঠে মাসব্যাপী এ মেলা বসিয়েছেন। খেলার মাঠকে পুঁজি করে কয়েক লাখ টাকা চাঁদাবাজি করছে চাঁদাবাজ চক্র। মাঠে খেলাধুলা বন্ধ করে মেলা বসালেও যুবলীগ ওই নেতার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছেন না।
মাঠ দখল করে এ মেলা বসানোর নেপথ্যে রয়েছেন আদাবর থানার যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক আরিফুর রহমান তুহিন, হাসানুজ্জামান হিটু, আলমগীর হোসেনসহ বেশ কয়েকজন যুবলীগ নেতা। তারা আনুষ্ঠানিকভাবে রোববার (১৭ মার্চ) বেলুন উড়িয়ে মেলা উদ্বোধন করেছেন। এছাড়াও, যুবলীগ নেতাদের ছত্রছায়ায় মেলার দোকানগুলো দেখভাল করেন শ্যামলী মাঠের কথিত সহসভাপতি হাফিজুর রহমান ও ট্রেজারার ইদ্রিস আলীসহ কয়েকজন।
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ নূর ইসলাম রাষ্ট্রন জানান, এ মাঠ আমার ওয়ার্ডের আওতাধীন হলেও এর নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। যারা নিয়ন্ত্রণ করে, তারাই এ মাঠের ব্যাপারে ভালো জানে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন অঞ্চল-৫ এর নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বির আহমেদ জানান, খেলার মাঠ কারা দখল করে মেলা বসিয়েছে সে বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে আমরা ব্যবস্থা নেব। উত্তর সিটি করপোরেশনের ভেতর কোনো খেলার মাঠ দখল করে মেলা বা কোনো কিছু বসানোর অনুমোদন কারও নেই।