নানা আয়োজনে জমজমাট গুলশানের ইফতার বাজার
নাজমুল হক, ভাটারা (ঢাকা)
প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৪, ১০:২৯ পিএম
রাজধানীর অভিজাত এলাকা হিসাবে পরিচিত গুলশানের ইফতারির বাজার এখন নানা আয়োজনে জমজমাট। মঙ্গলবার রোজা শুরুর প্রথম দিন থেকেই মুখর হোটেল ও রেস্তোরাঁ। কেউ হোটেল ও রেস্তোরাঁর সামনের ফুটপাত, কেউ ত্রিপল আবার কেউ শামিয়ানা টানিয়ে মুখরোচক ইফতারির পসরা সাজিয়ে বসেছেন। দুপুরের পর ইফতারসামগ্রীর এসব দোকানে উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়ার মতো। শুক্রবার চতুর্থ রমজানেও ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ের জমজমাট দৃশ্য দেখা গেছে অভিজাত গুলশানের বিভিন্ন ইফতারির বাজারে।
গুলশানের শাহজাদপুর, দক্ষিণ পাড়া, ঝিলপাড়, গুলশান-১, নিকেতন ও গুলশান-২ সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ইফতারসামগ্রীর অস্থায়ী দোকানগুলোতে বিক্রি হচ্ছে ছোলা, পেঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি, ফালুদা, মুঠি জালি কাবাব, নারগিস চাপ, টিকা কাবাব, শাহি জিলাপি ও বোম্বে জিলাপি, সুতি কাবাব, দই, বড়া, হালিম, নূরানি লাচ্ছি, জালি কাবাব, ডিম চপ, রোস্ট, পনির, পেস্তা বাদামের শরবত, লাবাং, পরোটা, বড় বাপের পোলায় খায়সহ নানা মুখরোচক খাবার।
গুলশান নিকেতন বাজারে ইফতারের পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতা পারভেজ ইকবাল সোহেল। তিনি যুগান্তরকে বলেন, প্রতি বছরই ইফতারি বিক্রি করি। মানুষ সাধারণত আসরের নামাজ পড়ে ইফতারি কিনতে আসতে শুরু করেন। ইফতারের দুই ঘণ্টা আগে থেকে ভিড় জমতে শুরু করে। আর আধা ঘণ্টা আগে সবচেয়ে বেশি ভিড় হয়। সবচেয়ে বেশি বিক্রির তালিকায় পেঁয়াজু, ছোলা, মুড়ি আর বেগুনি রয়েছে। অনেকে জিলাপিও কেনেন।
গুলশান-১ এর রেস্তোরাঁ ও দোকানিরা জানান, প্রতি পিস চিকেন ফ্রাই ১২০, চিকেন চাপ ১২০, চিকেন স্টিক ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি সুতি কাবাব এক হাজার ৪০০ টাকা, খাসির লেগপিস ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে গত বছর এই ইফতারসামগ্রীর দাম কিছুটা কম ছিল। গত বছরের ৩৪০ টাকার হালিম এবার হয়েছে কেজি ৩৭০-৩৮০ টাকা। চিকেন পরোটা, সবজি পরোটার দাম বেড়েছে ১০ টাকা করে। ১০০ টাকার দইবড়া হয়েছে ১২০ টাকা। শাহি জিলাপি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়।
গুলশানের তৃপ্তি হোটেলের আল-আমিন যুগান্তরকে বলেন, দোকানে ভিড় আগের মতোই আছে। রোজা হলেও আমরা বাইরে পর্দা দিয়েছি। দিনের বেলায়ও মানুষ খাবার খেতে আসছে। অনেকে অসুস্থতাজনিত কারণে আবার অনেকে ইচ্ছে করে রোজা থাকে না। শাহি মোরগ পোলাও ২৯০ টাকা, খাশির কাচ্চি ৩৭০, গরুর তেহারি ২৫০ টাকা, গরুর চাপ পোলাও ৩০০ টাকা পে্লট বিক্রি করছি। রোজার প্রথম দিন থেকেই ভালো বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
দক্ষিণ পাড়ার নূরু কনফেকশনারিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে হালিম, জিলাপি, জালি কাবাব, নানরুটি, সামী কাবাব, চিকেন চাপ, শিক কাবাবসহ বেশ কয়েকটি ইফতারসামগ্রী। দোকানের বাইরে বিকাল থেকে মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তারা বলছেন, সন্ধ্যার কিছু সময় আগে সবকিছু গরম পাওয়া যায় তাই সেসময় ভিড় জমে। রোজায় অন্য সময়ের চেয়ে বেশি ভিড় হয়।
ইফতার কিনতে আসা আব্দুল মতিন হিরা যুগান্তরকে বলেন, ঢাকার গুলশানের রাস্তা, ফুটপাতে মোড়- যেখানে যাবেন ইফতারির দোকান চোখে পড়বেই। আবার মসজিদের সামনেও ইফতারির দোকান থাকে। ইফতারি কিনতে যে চিরচেনা ভিড় সেটি থাকবেই। এসব ইফতারসামগ্রী খুবই মুখরোচক।
বিক্রেতারা বলছেন, রোমের জিলাপির কেজি ৪০০ টাকা, ইন্ডিয়ান ছোলা বটোরা ৪০০ টাকা, ছোলাবুট ৩৮০ টাকা, গরুর কলিজা ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গরুর তেহারি ২৯০ টাকা, মোরগ পোলাও ২৮০ টাকা প্লেট, চিকেন তান্দুরি ১৯০ টাকা, চিকেন টিকা বারবিকিউ ২৯০ টাকা, চিকেন বটি কাবাব, চিকনে আচারি কাবাব, চিকেন রেশমি কাবাব, চিকেন শুলে কাবাব, চিকেন টিক্কা কাবাব ও চিকেন হরিয়ালি কাবাব ৩৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিফ চিকেন শিক কাবাব ২২০ টাকা, দইবড়া (বড়) ৩৯০ টাকা, ফালুদা (বড়) ৪৮০ টাকা, চিকেন বাফেলো উইংস পিস ৭০ টাকা, চিকেন টিক্কা রোল ১৮০ টাকা, ফিস ফিংগার ৭০ টাকা, চিকেন হ্যাজেল ব্রেক ১৯০ টাকা, চিকেন ছাতে ৮০ টাকা, চিকেন কাটলেট ৯০ টাকা, চিকেন ফিংগার ৬০ টাকা ও ক্ষির লুচি ৫০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে।