Logo
Logo
×

রাজধানী

প্রথম রমজানে রাজধানী: সকাল ও দুপুরে ফাঁকা, বিকালে তীব্র যানজট

Icon

ইমন রহমান

প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২৪, ০৯:৪৪ পিএম

প্রথম রমজানে রাজধানী: সকাল ও দুপুরে ফাঁকা, বিকালে তীব্র যানজট

ছবি-যুগান্তর

রমজানে রাজধানীবাসীকে একটু স্বস্তি দিতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছে। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার সকাল থেকে সড়কে ট্রাফিক পুলিশের সরব উপস্থিতি ছিল। যানবাহন কম থাকায় এবং ট্রাফিক বিভাগের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন পেশার মানুষ অনেকটা স্বস্তিতে কর্মস্থলে পৌঁছান। তবে বেলা ৩টার পর থেকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কের দৃশ্যপট পালটে যেতে থাকে। ক্রমশ যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। ৪টার পর থেকে অসহনীয় যানজটের মুখে পড়েন রাজধানীবাসী। এ সময় অনেককেই যানবাহন থেকে নেমে হেঁটে বাসায় ফিরতে দেখা গেছে। মূল সড়কের প্রভাব পড়ে পাড়া-মহল্লার সড়কগুলোয়ও। দীর্ঘসময় যানজটের কারণে অনেকে সড়কে ইফতার করতে বাধ্য হন। মূল সড়কের যানজট এড়াতে অনেকে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার নিয়ে পাড়া-মহল্লার সড়কে ঢুকে পড়েন। ফলে ওইসব সড়কেও তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার দিনভর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। 

ট্রাফিক পুলিশের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, বেলা ৪টার দিকে অফিস ছুটি হলে সড়কে যানবাহনের তীব্র চাপ বাড়ে। এতে তারা অনেকটাই অসহায় হয়ে ওঠেন। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা করেছেন। বাংলামোটরে সার্জেন্ট মাসুদ রানা যুগান্তরকে বলেন, অতীতে ১৫ রমজান থেকে যানজট অসহনীয় পর্যায়ে চলে যায়। এর আগে এমন যানজট অনেকটা সাধারণ সময়ের মতোই।

রাজধানীর মগবাজার, ফার্মগেট, তেজগাঁও, হাতিরঝিল, নিউমার্কেট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পল্টন, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, মোহাম্মদপুর, গুলশান, শাহবাগ, পল্টন, নিউমার্কেট, ধানমন্ডি, কাকরাইল, জাতীয় প্রেস ক্লাব ও শান্তিবাগ এলাকা সরেজমিন ঘুরে এবং ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। সকাল থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত রাজধানীর সড়কগুলোয় যানবাহনের তেমন উপস্থিতি ছিল না। দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিকের দুই কনস্টেবলকে সড়কের পাশে বসে থাকতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে একজন মজিবুর যুগান্তরকে বলেন, সড়কে অন্যদিনের চেয়ে গাড়ি কম। তাই বসে আছেন। তবে বিকালে দৃশ্যপট পালটে যায়। ৪টার দিকে মগবাজার ফ্লাইওভার থেকে তেজগাঁও-মহাখালীগামী সড়কে তীব্র যানজট দেখা যায়। রাজধানীর হাতিরঝিল হয়ে গুলশান পর্যন্ত তীব্র যানজটে আটকে থাকে গাড়ি। এ সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মনির হাসান জানান, অন্যদিন এমন যানজট চোখে পড়েনি।

কুড়িল বিশ্বরোড থেকে মালিবাগের প্রগতি সরণিতেও তীব্র যানজট দেখা গেছে। বিকাল ৫টার দিকে রাজধানীর ভাটারা থানার নতুনবাজার এলাকায় তীব্র যানজট দেখা যায়। এ সময় অতিরিক্ত গাড়ির চাপে পুরো এলাকা স্থবির হয়ে যায়। অফিস ফেরত অনেককে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। বাসের জন্য অপেক্ষমাণ আবদুল গফুর জানান, কুড়িল বিশ্বরোড সংলগ্ন এলাকায় তার বাসা। গুলশান-২ এ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তিনি চাকরি করেন। রমজানের প্রথম দিন অফিস ছুটি শেষে বিকাল ৪টায় বের হয়ে তিনি বেকায়দায় পড়েছেন। একদিকে তীব্র যানজট, অন্যদিকে বাস পেলেও ওঠার সুযোগ পাচ্ছেন না। 

মিরপুর-সদরঘাট রুটের বিহঙ্গ পরিবহণের চালকের সহকারী হাসান জামান জানান, সকাল ৮টায় গাড়ি নিয়ে বের হয়েছেন তারা। দুপুর পর্যন্ত রাস্তা ফাঁকাই ছিল। কিন্তু বিকাল থেকে যানজটে পড়েন। মতিঝিলের একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা মাহবুব জানান, অফিস থেকে বের হয়ে তীব্র যানজটে পড়েন। পরে ভাড়ার মোটরসাইকেলে মূল সড়ক এড়িয়ে বিভিন্ন অলিগলি দিয়ে মোহাম্মদপুরের বাসায় পৌঁছান। ওইসব অলিগলিতেও যানজটে পড়েন তিনি। বাসায় ফিরতে অন্যদিনের চেয়ে দ্বিগুণ সময় লেগেছে। 

ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট শরীফ বলেন, সকাল থেকে তেমন গাড়ির চাপ ছিল না। কিন্তু ৪টার পর অফিস ছুটি হওয়ায় তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আপনি তো দেখছেনই আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। কিন্তু সড়কে গাড়ির সংখ্যা অনেক বেশি। অনেকটাই অসহায় আমরা।’ ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মুনিবুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, সব কর্মকর্তা সড়কে ছিলেন। কমিশনার নিজেও ছিলেন। পুলিশের ক্রাইম বিভাগের সদস্যরাও আমাদের সহায়তা করেছেন। প্রতিটি জায়গায় আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। বিজয় সরণি, সোনারগাঁওসহ অধিকাংশ এলাকায় যানজট ছিল না। 

ডিএমপির একাধিক ট্রাফিক ইনস্পেকটরের (টিআই) সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যানজট নিরসনে বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে। এর অন্যতম হলো-পিক আওয়ারে ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি করা। এক্ষেত্রে ডিএমপির সদস্যদের আনা হচ্ছে। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রিজার্ভ ফোর্স থাকবে। কনস্টেবল থেকে ডিসি পর্যন্ত সবাই পিক আওয়ারে রাস্তায় থাকবে। সড়কের পাশে ট্রাফিক পুলিশের ইফতারির ব্যবস্থা করা হবে। এতে যাতে কোনো গাফিলতি না থাকে সে বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম