নেই অনুমোদন ও নিরাপত্তার বালাই
মোহাম্মদপুরে আবাসিক ভবনে হোটেল-রেস্তোরাঁ
মোহাম্মদপুর (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ মার্চ ২০২৪, ১০:৪৫ পিএম
রাজধানীর মোহাম্মদপুরজুড়ে মূল সড়ক ও গলিতে গলিতে প্রতিটি বাড়ি বাণিজ্যিক ভবনে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে তাজমহল রোড, নূরজাহান রোড, সলিমুল্লাহ রোড ও রিং রোড এলাকায় এমন কোনো বাড়ি নেই যেখানে ছোট বড় হোটেল কিংবা রেস্তোরাঁ খোঁজে পাওয়া যাবে না। এসব হোটেল-রেস্তোরাঁয় নিরাপত্তার কোনো বালাই নেই। এগুলোর নেই কোনো অনুমোদনও। বেইলি রোডের দুর্ঘটনার পর এসব অনুমোদনহীন হোটেল-রেস্তোরাঁ নিয়ে আতঙ্কে দিন পার করছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মোহাম্মদপুরের রিং রোডের শিয়া মসজিদ মোড়ে নূরানী টাওয়ারে বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁ ও দোকান গড়ে উঠেছে। ভবনটির উপরের অংশে একটি মাদ্রাসাও রয়েছে। স্থানীয়দের মতে, ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে ২০২২ সালের ২৭ মার্চ ভবনটির দ্বিতীয়তলায় ‘নবাবী ভোজ’ রেস্তোরাঁয় সিলিন্ডার গ্যাসের লিকেজ থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় পাঁচ কর্মচারী গুরুতর দগ্ধ হয়। তাদের মধ্যে একজন মারা যায়। একই রোডে ২৪/৬ নম্বর ভবনটি পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণ। এ ভবনের নিচতলায় এসি, ফ্রিজ ও টেলিভিশনের শোরুম, দ্বিতীয়তলায় কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট, তৃতীয়তলায় ব্যায়ামাগার এবং চতুর্থতলায় গুদাম।
চারতলা এ ভবনটিতে ৩ ফুটের একটি সিঁড়ি ছাড়া জরুরি বহির্গমনের নেই কোনো ব্যবস্থা। পাশাপাশি, ভবনটিতে গড়ে ওঠা রেস্তোরাঁর রান্নার কাজে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডার নিচতলায় ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় রাখা হয়েছে। পাশের তাজমহল রোডে ২৩-২৪ নম্বর ভবনটিতে টেক আউট রেস্টুরেন্ট, বেস্ট বাই শপ, কয়েকটি ব্যাংক ও আন্ডারগ্রাউন্ডে সুপারশপ রয়েছে।
ভবনটির চতুর্থতলা পর্যন্ত বাণিজ্যিক হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। পঞ্চমতলা থেকে আবাসিক হিসাবে বেশ কয়েকটি পরিবার বসবাস করছে। বাসিন্দাদের মতে, নিচতলাগুলো বাণিজ্যিক হওয়ায় তারা আতঙ্ক নিয়ে দিনপার করছেন। এ ভবনটির পাশেই আরেকটি ভবনের একই দশা। ওই ভবনটির নিচতলায় কেএফসি, দ্বিতীয়তলায় ব্যাংক, তৃতীয়তলায় মুঘল রেস্টুরেন্ট, চতুর্থতলায় ক্লাব মিক্স নামে আরেকটি রেস্তোরাঁ রয়েছে। এ ভবনটির জরুরি বহির্গমনের সিঁড়িতে জেনারেটর ও সিঁড়ির পাশেই রাখা হয়েছে গ্যাস সিলিন্ডার। ভবনটির ষষ্ঠতলা থেকে বেশ কয়েকটি পরিবার বসবাস করছে।
আবাসিক ভবনে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে ওঠা এসব রেস্তোরাঁ বন্ধ করে মালিকদের বিরুদ্ধে রাজউক কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ৩ এর পরিচালক তাজিনা সারোয়ার জানান, যেসব রেস্টুরেন্ট আইনবহির্ভূতভাবে চলছে সেগুলোর বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।