Logo
Logo
×

রাজধানী

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা

বিদেশিদেরও পছন্দ যমুনা রেফ্রিজারেটর

Icon

এ হাই মিলন, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:২০ পিএম

বিদেশিদেরও পছন্দ যমুনা রেফ্রিজারেটর

ছবি: যুগান্তর

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ভেতরে-বাইরে হকার আর ভিক্ষুকদের উৎপাতে অতিষ্ঠ দর্শনার্থী, ক্রেতা-বিক্রেতারা। এ ব্যাপারে অভিযোগ করেও কোনো সমাধান পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। অন্যদিকে হাতবদলের মাধ্যমে স্টল পেতে এবার খরচ বেশি হওয়ায় লোকসানের আতঙ্কে আছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। 

সরেজমিন মেলা ঘুরে সোমবার ১৬তম দিনেও দেখা গেছে পণ্য বিক্রির ধুম। এতে খুশি ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে একই প্রাচীরে হরেক পণ্য পেয়ে খুশি ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা।  

মেলায় যমুনা ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড অটোমোবাইলস প্যাভিলিয়নের ম্যানেজার রাজীব সাহা বলেন, হোম অ্যাপ্লায়েন্সে আমরা বেশ ভালো সাড়া পেয়েছি। আমরা যুগলবন্দী অফার দিয়েছি একটি কিনলে একটি ফ্রি। এ অফারে বেশ সাড়া পাচ্ছি। নতুন দম্পতিরা এসে মনের খুশিতে হোম অ্যাপ্লায়েন্স সামগ্রী কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। 

আরও পড়ুন: আরও বাড়ল এলপি গ্যাসের দাম

রূপগঞ্জের যাত্রামুড়া থেকে আগত মনির হোসেন ৮০ সিসির যমুনা পেগাসাস ভিক্টরি মোটরসাইকেল কিনেছেন। তিনি বলেন, জ্বালানি খরচ কম এবং টেকসই এজন্যই আমি যমুনা মোটরসাইকেল কিনেছি। মানে ও গুণে যমুনার বাইক অতুলনীয়। এদিকে যমুনার রেফ্রিজারেটর দেখেন এক ভারতীয় দম্পতি। ফ্রিজের নানা ফিচার দেখে তারা কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

মেলা ঘুরে দেখা যায়, প্রবেশ ফটকের সামনেই শত শত হকার তাদের পসরা নিয়ে বসে আছে। কেউ কেউ হেঁটে হেঁটে পানি, আচার, শিশুদের খেলনা, কৃত্রিম ফুলের মালা বিক্রি করছে। দর্শনার্থীদের বিরক্ত ও বিব্রত করে হকারদের হাঁক-ডাক। 

অনেককে জোর করে হকারদের পণ্য দেখতে বাধ্য করতে দেখা গেছে। মেলার প্রবেশ ফটকে লাইন ধরে দর্শনার্থীরা প্রবেশ করছেন। সেখানে হকারদের ভিড় কিছু কম হলেও ভিক্ষা করতে দেখা গেছে পেশাদার ভিক্ষুকদের। এমনকি, ৫০ টাকায় টিকিট কেটে মেলার ভেতরে প্রবেশ করে ভিক্ষা করতে দেখা গেছে। এমনই এক ভিক্ষুুক ছিদ্দিক (৬৫) বলেন, ৫০ টাকার টিকিট কেটে মেলায় এসেছি। মানুষের কাছে চেয়ে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পাই। তাতেই চলে। 

অপর ভিক্ষুক ফরিদ মিয়া (৫৫) বলেন, এখানে ধনীরা আসে, তাদের দয়া পাওয়া যায় বেশি। কথা বলে জানা যায়, এভাবে মেলায় শতাধিক ভিক্ষুক কৌশলে ভিক্ষা করছে। 
স্থানীয় ইউপি সদস্য রিটন প্রধান বলেন, মেলায় ভিক্ষুক ও হকাররা দর্শনার্থীদের বিরক্ত করে। একটি আন্তর্জাতিক মানের মেলায় এ চিত্র শোভনীয় নয়। তাই এ বিষয়ে আয়োজকদের নজর দেওয়া দরকার।    

মেলা ঘুরে দেখা যায়, ভাসমান হকাররা হেঁটে হেঁটে পানি বিক্রি করছে। আবার ব্যাগ আর ফুল বিক্রি করছে কেউ। এদের বেশির ভাগই শিশু-কিশোর। কথা হয় বোতলজাত পানি বিক্রেতা মফিজ মিয়ার সঙ্গে। 

সে জানায়, যাত্রাবাড়ী এলাকায় বাসে পানি বিক্রি করে সে। মেলায় শুক্র ও শনিবার বেশি মানুষ হয়। সেদিন তারা সব হকার বন্ধুরা মিলে মেলায় আসে। টিকিট কেটে মেলায় প্রবেশ করে। সোমবার তাদের হকার বন্ধুর সংখ্যা ছিল ২০ জন। ছুটির দিনে ৩০ জনই চলে আসে মেলায়। গার্ডরা আটকালে কিছু টাকা দিলেই প্রবেশের সুযোগ করে দেয় বলে জানায় হকার রমজান আলী। 

মেলায় আগত দর্শনার্থীরা জানান, মেলায় আসার জন্য আলাদা গণপরিবহণ চালু রাখলেও এ লাইনে নিয়মিত চলাচলকারী বাসগুলো বেশি ভাড়া রাখছে যাত্রীদের কাছ থেকে। 
মেলায় এবার স্টল পেতে অতিরিক্ত খরচ হওয়ার কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মেলায় খাবার হোটেল ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বলেন, স্টলগুলো বরাদ্দ হয় টেন্ডারের মাধ্যমে।

যারা স্টল পায় তারা আগে থেকেই নানা কৌশল ও লবিং করে নিজেদের লোকজনের নামে স্টল নিয়ে নেয়। পরে বেশি দামে হাতবদল করে। আমরা যারা প্রকৃত ব্যবসায়ী, বাধ্য হই তাদের কাছ থেকে স্টল নিতে। এতে অতিরিক্ত লাভ দিতে হয় তাদের। এভাবে খরচ বেড়ে যায়। টেক্সটাইল ব্যবসায়ী লিটন ভুইয়া বলেন, বাণিজ্যমেলায় এবার ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হবে। কর্তৃপক্ষের ভাবা দরকার,  মেলার স্টল কোন প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া উচিত। 

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মেলার পরিচালক ও ইপিবি সচিব বিবেক সরকার বলেন, মেলায় ভিক্ষুক ও হকারদের বিষয়ে ইতোমধ্যে সতর্ক করা হয়েছে দায়িত্বরত লোকদের। কাউকে ভিক্ষা করতে কিংবা হকারি করতে দেখলেই বের করে দেওয়া হচ্ছে। তবে মেলার বাইরের বিষয়ে আমার কিছু করার নেই। সেখানে দায়িত্বরত পুলিশরা দেখবে। 

মেলার স্টল বরাদ্দে হাতবদল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মেলায় স্টল ও প্যাভিলিয়ন যারা পায় তারা টেন্ডার প্রক্রিয়ায় পায়। পেয়ে হাতবদল করে কিনা তা আমাদের জানা নেই। তবে এসব বিষয় নোট করা হচ্ছে। বিষয়গুলোতে নজর দেওয়া হবে। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম