বৃষ্টি ও শ্রমিক বিক্ষোভ
অসহনীয় যানজটে নাকাল নগরবাসী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:২৪ পিএম
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজধানীর আকাশ ছিল মেঘে ঢাকা। সকালে ছিল গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে বৃষ্টির তোড়। অন্যদিকে সকালের দিকে মিরপুরে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন পোশাক শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের বিক্ষোভ আর দিনভর বিরতিহীন বৃষ্টির কারণে রাজধানীজুড়ে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। এতে নগরবাসীর ভোগান্তি চরমে ওঠে। শ্রমিকরা অবস্থান নেওয়ায় শেওড়াপাড়ার দুদিকের সড়কে দীর্ঘ যানজট দেখা দেয়। মিরপুর থেকে গুলিস্তানমুখী যানবাহনগুলোকে মিরপুর ১০ নম্বর সড়ক থেকে ১ নম্বর সড়ক হয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।
আর গুলিস্তান থেকে মিরপুরমুখী যানগুলোকে আগারগাঁও বেতার ভবনের সামনের রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। এর প্রভাব পড়ে নগরজুড়ে। এর মধ্যে বৃষ্টি যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা। প্রচণ্ড যানজটে নাকাল হয়ে পড়ে নগরবাসী।
সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই বিভিন্ন সড়কে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। যেন স্থবির হয়ে পড়ে যানবাহন। মিরপুর-১, ১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, ফার্মগেট, মিরপুর, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, বাংলামোটর, গুলিস্তান, পুরানা পল্টন, মৎস্যভবন, কাকরাইল, শাহবাগ, এলিফ্যান্ট রোড, সিটি কলেজসহ রাজধানীজুড়ে সৃষ্টি হয় অসহনীয় যানজট।
রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়িতে বসেছিল অনেক যাত্রী। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যতিক্রম হলেও এখানকার টোলপ্লাজা ঘিরেও ছিল যানজট।
মৎস্য ভবন এলাকায় গাড়িচালক রিয়াদ বলেন, আজ সব সড়কেই যানজট। আধাঘণ্টা ধরে বসে আছি মৎস্য ভবন এলাকায়। গাড়ি কোনো দিকে যাচ্ছে না। গুলিস্তান থেকে এই পর্যন্ত আসতে ঘণ্টাখানেক লেগেছে।
বাংলামোটর এলাকায় সুমন নামের এক উবার চালক বলেন, মিরপুরের দিকে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। পুরো রাস্তা ব্লক। তাই ক্ষ্যাপ নিয়ে আপাতত ওই পথে যাচ্ছি না।
বিকালে সেগুনবাগিচায় অপেক্ষারত একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা বলেন, আমার অফিস ভাটারায়। দুপুরে একটি কাজে সেগুনবাগিচায় এসেছিলাম। এসেই বৃষ্টিতে আটকা পড়েছি। জানি না, আজ অফিসে যেতে পারব কিনা।
মগবাজার এলাকার গৃহবধূ সামসুন নাহার জানান, যানজট অলিগলিতেও ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্বিষহ যানজটের কারণে তার সন্তানকে নিয়ে স্কুল থেকে হেঁটে বাসায় ফিরছেন। বাড়তি ভাড়া দিতে চাইলেও গলির ভেতর আটকে যাওয়ার ভয়ে যেতে রাজি হচ্ছিল না রিকশাচালকরা।
খামারবাড়ি এলাকায় স্কুলফেরত শিশুকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া এক বিক্ষুব্ধ অভিভাবককে বলতে শোনা যায়, ‘শহরটা পরিত্যক্ত হয়ে গেছে।’ ওই সময় মনিপুরীপাড়া, রাজাবাজার, ইন্দিরা রোডের সব প্রবেশপথ আটকে ছিল গাড়িতে।
আনোয়ার নামের এক পথচারী জানান, যানজটের কারণে তিনি চাকরির ইন্টারভিউ মিস করেছেন। তার বাসা উত্তরায়। বৃষ্টি এবং যানজটের কারণে সময়মতো বাসা থেকে ইন্টারভিউস্থল কাকরাইলে যেতে পারেননি।