জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে আছে, নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়নি: ডিএমপি কমিশনার
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৩, ১২:০১ পিএম
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ডিএমপি কমিশনার
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, দেশে জঙ্গিবাদ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়নি, বরং আমরা বলব নিয়ন্ত্রণে আছে। জঙ্গিবাদের সুপ্ত বীজ লুকিয়ে থাকতে পারে বলেও মনে করেন তিনি।
শনিবার সকালে গুলশানে হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় শহীদ দুই পুলিশ সদস্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, আজ থেকে সাত বছর আগে ২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিজানে বিদেশি নাগরিকদের অতর্কিতভাবে জঙ্গিদের জিম্মি করা ও তাদের হত্যা করা হয়। এ সময় তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে আমাদের দুইজন সিনিয়র পুলিশ সদস্য শহীদ হন। আজকেও আমাদের মনে এইটা দগ্ধ ঘায়ের মতো জ্বলে। দেশি-বিদেশি আন্তর্জাতিক চক্রান্তে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করতে ২০১৫-১৬ সালে বিভিন্ন জঙ্গি হামলা ঘটানো হয়। হলি আর্টিজান হামলার পর আমাদের উন্নয়ন সহযোগীরা উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে ভয়ে দেশ ছেড়ে চলে যেতে থাকে।
খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুলিশ ও জনগণ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। সব উন্নয়ন সহযোগীদের স্পষ্ট দেওয়া হয়, বাংলাদেশ থেকে জঙ্গিদের উৎখাত করব, আপনারা ফিরে আসেন। তার পর আমাদের উন্নয়ন সহযোগীরা ফিরে আসেন এবং আমাদের উন্নয়ন যাত্রা অব্যাহত রয়েছে। এর পর থেকে বাংলাদেশ থেকে জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণ করা, গ্রেফতার ও বিচারে সোপর্দ করা অব্যাহত ছিল। যারা ফলে সমগ্র বাংলাদেশে জঙ্গি নিয়ন্ত্রণে আছে। জঙ্গিবাদ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়নি, আমরা বল, যে এটা নিয়ন্ত্রণে আছে।
হলি আর্টিজান হামলায় বিদেশিসহ মোট ২২ জন নিহত হন। এ ঘটনায় সিটিটিসি তদন্ত করে। তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। যদিও এ ঘটনার অনেক অভিযুক্ত বিভিন্ন সময় জঙ্গি হামলা করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যান। আর বাকিদের সাজা হয়ে গেছে। আমরা এখন অনেকটা বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি। আশা করি, ভবিষ্যতে জঙ্গিমুক্ত বাংলাদেশ ধরে রাখতে পারব।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, জেএমবি, নব্য-জেএমবিসহ জঙ্গিবাদ নেই বললেও চলে। তবে জঙ্গিবাদের সুপ্ত বীজ লুকিয়ে থাকতে পারে। নতুন কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছিল। নতুন জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া একটি। এ সংগঠনের ডাকে অনেক তরুণ হিজরত করেছিল পাহাড়ে ও প্রশিক্ষণ নিয়েছিল।
তিনি বলেন, আমাদের পুলিশ, র্যাব নতুন জঙ্গি সংগঠনের অনেককে গ্রেফতার করেছে। আবার অনেকে ভুল বুঝতে পারে আত্মসমর্পণ করেছে। আমরা কয়েক দিন আগেও শারক্বীয়ার প্রধানকে গ্রেফতার করেছি। তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। আমরা আশা করছি, তারা যে নামেই আসুক না কেন তারা বাংলাদেশ স্থান পাবে না।
অপর আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটিইউ, সিটিটিসি ও র্যাব জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অনবরত কাজ করে যাচ্ছে। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহ ও খোঁজখবর নেওয়া কাজ করছে। এ ছাড়া জঙ্গিবাদের বিষয়ে মানুষ জনকে সচেতন করার লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন সময় নানা প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছি এবং কাজ করেছি।