ঢাকায় ভারতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে নতুন মুক্তিযুদ্ধ গ্যালারি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৩, ০৩:২৫ এএম
মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের আত্মত্যাগ, অবদান সংরক্ষণের লক্ষ্যে ঢাকার ভারতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে একটি অত্যাধুনিক মুক্তিযুদ্ধ গ্যালারি উদ্বোধন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা এ গ্যালারির উদ্বোধন করেন। এসময় বীরমুক্তিযোদ্ধা, গণমান্য ব্যাক্তিবর্গ, সাংবাদিক, সংস্কৃতি কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
গ্যালারির উদ্বোধনকালে হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের জন্যই ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ঐতিহাসিকভাবে তাত্পর্যপূর্ণ। দুদেশের বন্ধুত্ব ও সংহতির চেতনা অটুট। যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভারতের সমর্থনকে নির্দেশ করে।
তিনি বলেন, নতুন গ্যালারিটি বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের বীরত্বপূর্ণ গল্প, ছবি ও নথি প্রদর্শন করার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্থায়ী বন্ধুত্বের সাক্ষ্য বহন করবে। এটি দর্শনার্থীদের এ দুদেশের ইতিহাসের অভ্যন্তরে একটি অনুপ্রেরণামূলক ভ্রমণের সুযোগ করে দেবে এবং বাংলাদেশের জনগণের বীরত্ব, প্রাণোচ্ছলতা ও অদম্য চেতনার প্রতীক হিসেবে কাজ করবে।
হাইকমিশনার আরও বলেন, গ্যালারিটি ১৯৭১ সালের চেতনাকে রক্ষা ও উদযাপন করতে ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ অঙ্গীকারকে তুলে ধরবে, যা আমাদের সম্পর্ককে দিকনির্দেশনা প্রদান অব্যাহত রেখেছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, গ্যালারিটি বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বের একটি স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে কাজ করবে, যেখান থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অনুপ্রেরণা পেতে থাকবে।
গ্যালারিটির সূক্ষ্মভাবে কিউরেট করা বিপুল সংখ্যক প্রদর্শনী সামগ্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াইকারীদের সাহসিকতা, সংকল্প ও আত্মত্যাগকে তুলে ধরে। এটি নিপীড়ন ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা সব বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এবং জীবন উৎসর্গকারী অজ্ঞাতপরিচয় লাখো মানুষের স্মৃতিকে সম্মান জানায়।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পূর্ব ও পশ্চিম রণাঙ্গণে মুক্তি বাহিনীর সঙ্গে কাধে কাধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে প্রায় ৩৬৩০ জন ভারতীয় সেনা সদস্য শহীদ হয়েছেন। তাদের রক্ত স্বাধীন বাংলার মাটিতে মিশে আছে। ভারত আমাদের অকৃতিম বন্ধু। এ বন্ধুত্ব আত্মার, রক্তের। চিরজীবন এ বন্ধন থাকবে। আমার তাদের ঋণ আমরা সারা জীবন মনে রাখবো।
তিনি বলেন, যুদ্ধের সময় আমি বহুবার ভারতে গিয়েছি, নিজ চোখে দেখেছি ভারত আমাদের জন্য কী করেছেন। নিজের খাবার, থাকার জায়গা আমাদের দিয়েছেন। চিকিৎসা, বস্ত্রসহ সব ধরণর সহযোগিতা করেছেন। এখনও ভারত বাংলাদেশের উন্নয়নে সহযোগিতা করছেন।
তারা ১ কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছেন। ভারতীয় হাইকমিশন এ গ্যালারী উদ্ভোধনের মধ্যে দিয়ে আমাদের ঋণি করেছেন। ভারত হচ্ছে আমাদের সত্যিকারের বন্ধু। যতদিন এ দুটি দেশ থাকবে, ততদিন আমাদের এ অকৃত্রিম বন্ধুত্ব অটুট থাকবে।