গ্যাসের লিকেজ থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, নেপথ্যে অবৈধ সংযোগ
মোহাম্মদপুর (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৩, ০৫:৪২ পিএম
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গ্যাসের লিকেজ থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুইজন দগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহতরা হলেন- শাওন (২৫) ও আশরাফ (৪৫)।
মঙ্গলবার মোহাম্মদপুরের কাটাসুর রহিম ব্যাপারী ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মঙ্গলবার দুপুরের দিকে হঠাৎ করে বিকট শব্দে গ্যাস বিস্ফোরণ হয়। এ সময় পাশের একটি কাঁচামালের দোকানের দেয়াল ধসে পড়ে যায়। বিস্ফোরণের ঘটনায় দুইজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এই গ্যাস বিস্ফোরণের একমাত্র কারণ বেশ কয়েকটি অবৈধ সংযোগ। বিস্ফোরণ ঘটার পর পুরো এলাকায় গ্যাসের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। তিতাস গ্যাসের লোকদের বিষয়টি জানানোর পর তারা এসে এই এলাকার গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে রাখে। পরে এই রোডের ১৪৪ নম্বর বহুতল একটি নতুন ভবনে গিয়ে দেখে ওই বাড়িতে পুরোটাই অবৈধ সংযোগ। সেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর পুরো এলাকায় গ্যাসের গন্ধ কমে এসেছে।
স্থানীয়রা বলেন, এর আগেও এ বাড়িসহ আশপাশে বেশ কয়েকটি বাড়ির গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল। কিন্তু তারা কিভাবে আবারো সেই অবৈধ সংযোগ নিল। আমরা চাই, এই বাড়িসহ আশপাশে যত অবৈধ গ্যাস সংযোগ আছে- তা তিতাস গ্যাস দ্রুত বিচ্ছিন্ন করে দিক। না হয় পুরো মোহাম্মদপুরে আরও ভয়াবহ বিস্ফোরণে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় ফার্মেসির মালিক আজিমুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে হঠাৎ করে আমার দোকানের পাশেই বিকট শব্দ হয়। এ সময় আমরা আতঙ্কে দোকান থেকে দৌড়ে বের হয়ে যাই। পরে দেখি আমার পাশেই একটি শাক-সবজির দোকান ছিল, সেটির দেয়াল ধসে পড়েছে। এ সময় পথচারীসহ দুইজন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে কয়েকজন মিলে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী আরেক দোকানদার সেলিম বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ করে বিকট শব্দ হলে আমরা ঘটনাস্থলে দ্রুত দৌড়ে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি একটি সবজি দোকানের দেয়াল ধসে গেছে। এ সময় সামনে থাকা একটি বিরিয়ানি দোকানের মালিক শাওনসহ আরেকজন আহত হন।
ধসে পড়া সবজি দোকানের মালিক গিয়াস উদ্দিন বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ করে বিকট শব্দ হয়। এ সময় আমার দোকানটি বন্ধ ছিল। বিকট শব্দের সঙ্গে সঙ্গে দোকানটি খুলে দেখি দোকানের ভেতরের দেয়াল পুরোপুরি ধসে পড়েছে।
এদিকে বিস্ফোরণের পর তিতাস গ্যাস (উত্তর) জরুরি শাখার প্রকৌশলী আনোয়ার পারভেজ ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি বলেন, বিকাল ৪টার দিকে আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। আমাদের বেশ কয়েকটা টিম কাজ করে যাচ্ছে। আমরা পুরো এলাকার গ্যাস বন্ধ রেখেছি। পাশাপাশি একটি বহুতল নতুন বাড়িতে গিয়ে তাদের গ্যাস সংযোগের কোনো কাগজপত্র পাইনি। পরে ওই বাড়ির গ্যাস সংযোগ আমরা বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছি। এছাড়াও আমরা এই এলাকায় বিভিন্ন বাসা-বাড়ির পানির ট্যাংকি ও সুয়ারেজ লাইনে গ্যাসের দুর্গন্ধ পাচ্ছি। বিষয়টি সমাধানের জন্য আমরা দ্রুত কাজ করে যাচ্ছি।
তিতাস জরুরি ইউনিটের (উত্তর) আরেক প্রকৌশলী মোক্তার আহমেদ বলেন, আমরা এখানে লিকেজ খুঁজতে গিয়ে বেশ কয়েকটি বাড়ি পেয়েছি। যেগুলোর কোনো রাইজার বা মিটার নেই। যা অবৈধভাবে সরাসরি লাইন থেকে সংযোগ নেওয়ার কারণে আশেপাশে গ্যাস জমে এমন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আমরা আসার পর থেকে ওই বাড়িগুলোর মালিকরা ইতোমধ্যে গা ঢাকা দিয়েছেন। আমরা সংশ্লিষ্ট জোনকে খবর দিয়েছি। তারাও ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।