Logo
Logo
×

ক্যাম্পাস

রাবির ডাইনিং ও ক্যান্টিন

টাকা না দিয়ে  ৫ বছর খাচ্ছেন দুই ছাত্রলীগ নেতা

Icon

রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৪৫ পিএম

টাকা না দিয়ে  ৫ বছর খাচ্ছেন দুই ছাত্রলীগ নেতা

খাবারে তেলাপোকা ও মাছি ফেলে আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে ৫ বছর ধরে ডাইনিং ও ক্যান্টিনে টাকা না দিয়ে খাবার খাওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ হবিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। এছাড়া হলের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে ৩ মাস ধরে ডাইনিং থেকে দুপুর-রাত দুই বেলা টাকা ছাড়াই খাবার খাওয়ার অভিযোগ উঠেছে একই হলের আরেক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী হলেন হবিবুর রহমান হল ক্যান্টিনের মালিক আলতাফ হোসেন ও ডাইনিং কর্তৃপক্ষ।

অভিযুক্তরা হলেন, হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও হলের বর্তমানে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মো. মিনহাজুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী। অভিযুক্ত আরেক ছাত্রলীগ নেতা সোহান আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি হবিবুর রহমান হলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা। সোহান শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারী।

এ বিষয়ে শহীদ হবিবুর রহমান হলের ক্যান্টিন মালিক আলতাফ হোসেন বলেন, হলে উঠার পর থেকে আমার ক্যান্টিনে বাকি খাচ্ছেন মিনহাজ। বাকির টাকা লিখতে লিখতে হতাশ; তাই এখন আর লিখি না। একবার টাকা চেয়েছিলাম বিধায় হুমকি দিয়েছিল তেলাপোকা ও মাছি মেরে খাবারে দিয়ে দেবে। এরপর আর টাকা চাইনি। প্রভোস্টদের জানিয়েও সমাধান পাইনি। আমি হার্টের রোগী, বলার পরও ফল হয়নি।
হবিবুর রহমান হলের ডাইনিং কর্মচারী আব্দুস সামাদ, জামাল উদ্দিন, নুরুল ইসলাম, সাদ্দাম হোসেন নিপু, আলাউদ্দিন, শফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন জানান, প্রায় ৩ মাস প্রতিদিন দুজনকে চারটা খাবার পাঠান তারা। এভাবে চলতে থাকলে নিজেরা মারা যাবেন বলে জানিয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

টাকা না দিয়ে খাবার খাওয়ার বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা মিনহাজুল ইসলাম বলেন, ক্যান্টিনে আমার এত টাকা বাকি নেই। বাকি খাচ্ছি এবং মাঝে মাঝে টাকা পরিশোধও করছি। তিন-চারশ টাকা হয়তো বাকি থাকতে পারে। ডাইনিং থেকে কখন আমার রুমে খাবার আসে বিষয়টি আমার জানা নেই।

আরেক ছাত্রলীগ নেতা সোহান আহমেদ বলেন, এমন অভিযোগ দিয়ে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমার রুমে কোনো খাবার আসে না। এসব অভিযোগ এনে ছাত্রলীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। আমার সামনের ক্যারিয়ার নষ্ট করতে এমন অভিযোগ আনা হচ্ছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, উভয়পক্ষকে ডেকে বিষয়টির সমাধান করে দিয়েছি। কিছু টাকা বাকি ছিল, দেওয়ার জন্য বলে দিয়েছি।

ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে বাকি খাওয়ায় ঘটনায় মিনহাজের বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা? এ প্রশ্নের উত্তরে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, ‘এক-দুই হাজার টাকা একটা হলের ছেলে বাকি খেতেই পারে। আমি সেটার সমাধান করে দিয়েছি। সোহানের বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, আমি তার কাছে জেনেছি সে একজন প্রতিবন্ধী আর সাংবাদিকতার এক শিক্ষার্থীর জন্য এটার ব্যবস্থা করেছে। আমি সেটা হল প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে বসে লিখিত আকারে করতে বলেছি।

তবে টাকা না দিয়ে খাবার নিয়ে প্রতিবন্ধী ও সাংবাদিকতার শিক্ষার্থীকে খাওয়ানোর বিষয়টি অবগত নন বলে জানান হবিবুর রহমান হল ডাইনিংয়ের প্রধান বাবুর্চি আব্দুস সামাদ। হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শরীফুল ইসলাম বলেন, ডাইনিং ও ক্যান্টিনের কর্মচারীরা এ বিষয়ে আমার কাছে অভিযোগ করেছেন। আমি তাদের অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের বাকি বা ফ্রিতে খাবার দিতে নিষেধ করে দিয়েছি। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম