জাবিতে পাখিমেলা অনুষ্ঠিত
পাখির উপযোগী পরিবেশ ধরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে: জাবি উপাচার্য
জাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:২৮ পিএম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য নূরুল আলম বলেছেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাখির বসবাস উপযোগী পরিবেশ ধরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এজন্য কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ক্যাম্পাসের প্রকৃতি ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে শুক্র ও শনিবার বিভিন্ন ব্যাচ ও সংগঠনের অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি বন্ধ রাখা হয়েছে। এরপরও ছুটির দিনে ক্যাম্পাসে প্রচুর সংখ্যক দর্শনার্থী আসেন। জনসমাগম রোধ সম্ভব হলে পাখির অভয়ারণ্য আরও নিশ্চিত করা যাবে।
পাখি সংরক্ষণে জনসচেতনতা বাড়াতে শুক্রবার সকাল ৯টায় জাবির জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনে পাখিমেলার উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য এসব কথা বলেন। ‘পাখপাখালি দেশের রত্ন, আসুন করি সবাই যত্ম স্লোগানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে ২৩তম বারের মতো এ মেলার আয়োজন করা হয়।
উপাচার্য বলেন, ক্যাম্পাসে প্রকৃতি ও পরিবেশ ঠিক রাখতে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। পাখির প্রতি ভালোবাসা নতুন প্রজন্মর মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। পাখির প্রতি দায়িত্বশীল ও যত্নবান হতে হবে।
ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক এটিএম আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন পাখিমেলার আহ্বায়ক ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান। আরও বক্তব্য দেন উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মনজুরুল হক, উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, পাখি বিশারদ ইনাম আল হক, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসেন চৌধুরী, আইসিইউএন এর প্রতিনিধি সারোয়ার আলম দিপু, আরণ্যক ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি আরিফুর রহমান প্রমুখ।
মেলা উপলক্ষ্যে ক্যাম্পাসে প্রচুরসংখ্যক পাখিপ্রেমীর আগমন ঘটে। সকাল থেকেই দর্শনার্থীরা পাখিবিষয়ক নানা অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। ঢাকা থেকে আসা অতিথিদের একজন বলেন, এর আগেও বেশ কয়েকবার মেলায় এসেছি। তখন লেকগুলোতে পাখি ছিল। তবে এবার কোনো পাখি নেই।
দিনব্যাপী এ মেলায় ছিল আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পাখি দেখা প্রতিযোগিতা, পাখিবিষয়ক আলোকচিত্র প্রদর্শনী, শিশু-কিশোরদের জন্য পাখির ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, টেলিস্কোপ ও বাইনোকুলার দিয়ে শিশু-কিশোরদের পাখি পর্যবেক্ষণ, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পাখি চেনা প্রতিযোগিতা ও পাখিবিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা এবং সব শেষে পুরস্কার বিতরণী পর্ব। এছাড়া জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনে বিভিন্ন স্টলে পাখিবিষয়ক বই ও সংরক্ষিত বিভিন্ন প্রজাতির পাখির প্রতিকৃতি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
মেলায় এক বছরে গণমাধ্যমে পাখি ও জীববৈচিত্র্য সম্পর্কিত প্রকাশিত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কনজারভেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড এবং এক বছরে বাংলাদেশের পাখির ওপর প্রকাশিত সায়েন্টিফিক জার্নাল, প্রবন্ধ পর্যালোচনা করে সায়েন্টিফিক পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড এবং বিগ বার্ড অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।
এদিকে নাটোর প্রতিনিধি জানান, পাখি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে বিশেষ অবদানের জন্য ‘চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি’ এবং চারটি ক্যাটাগরিতে অবদান রাখায় নয় ব্যক্তিকে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের পক্ষে চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও যুগান্তরের সিংড়া উপজেলা প্রতিনিধি সাইফুল ইসলামের হাতে অ্যাওয়ার্ড ও সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি আকতার হোসেনসহ সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।