
প্রিন্ট: ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:১৩ পিএম
ছাত্রদল নেতাকে ফাঁসানোর অভিযোগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২২ এএম

ফাইল ছবি
আরও পড়ুন
পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় একটি হাসপাতালের জন্য ভাড়া নেওয়া ফ্লোর দখলে নিয়েছেন ঢাকার ন্যাশনাল মেডিক্যালের এনেস্থিসিয়া বিভাগের প্রধান ডা. মোশাররফ হোসেন। বিষয়টির সমাধানে জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল উভয়পক্ষের সঙ্গে দেখা করতে গেলে ডা. মোশাররফ হোসেন উলটো তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলেন।
জানা যায়, এর
পূর্বে ডাক্তার হারিসসহ মোট ছয়জন চিকিত্সক ‘এভার হেলথ হাসপাতাল’ নামে একই ফ্লোরে
একটি প্রাইভেট হাসপাতাল পরিচালনা করতেন। সেই সময়কার কিছু চিকিত্সা সরঞ্জামের যৌথ মালিকানা
বিষয়টি পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয় এবং ডাক্তার মোশাররফ তার অংশের মালামাল
বুঝে নেন। কিন্তু ২০২৫ সালের ১ মার্চ ডাক্তার মোশাররফ ফ্লোরে তালা দেন এবং ৫ মার্চ
ভোরে ফ্লোরে থাকা সব চিকিত্সা সরঞ্জাম ও মালামাল বেআইনিভাবে লুট করে নিয়ে যান। এমনকি
ফ্লোরে ভাঙচুর ও নতুন করে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটান। অথচ ডাক্তার মোশাররফ ওই
ফ্লোরের বৈধ মালিক নন। ডা. মোশাররফ হোসেনের লুটপাটের কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ এই প্রতিবেদকের
কাছে এসেছে। দেখা যাচ্ছে তিনি ট্রাকে করে হাসপাতালের মালামাল সরাচ্ছেন।
উক্ত ঘটনায়
ভুক্তভোগী মালিকপক্ষের লোকজন ডা. হারিস মেহেদী হাসান হিমেলের মামা। বিষয়টি সমাধানের
জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেলের শরণাপন্ন হলে তিনি
বিষয়টির সমাধানে উভয়পক্ষের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। সমস্যা সমাধানে মালিকপক্ষ ও ভাড়া
দেওয়া ফ্লোরের বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ল্যান্ডস্কেপ সিদ্ধান্ত নেয় মঙ্গলবার ও বুধবার
(১৫ ও ১৬ এপ্রিল) আলোচনায় বসে বিষয়টির সমাধান করবে। এরমধ্যেই জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক
মেহেদী হাসান হিমেলে বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলেন।
অভিযোগের বিষয়ে
মেহেদী হাসান হিমেল জানান, ডা. হারিস আমার মামা হন, তার সঙ্গে আমার রক্তের সম্পর্ক।
আমাদের বাড়িও পাশাপাশি। আমার মামার সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে, এটা শোনার পর আমি ঘটনার খোঁজ নিতে গিয়েছিলাম। উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা
বলেছি, সমাধানের জন্য দিন তারিখ ঠিক করা হয়েছে। তিনি আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির যেই
অভিযোগ এনেছেন এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তিনি কারো চাপে পড়ে আমার রাজনৈতিক
সুনাম নষ্ট করতে আমার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন। তিনি নিজের অপকর্ম ঢাকতে
আমার ওপর দোষ চাপাচ্ছেন।'
এই বিষয়ে দখল
হওয়া ফ্লোরের মূল মালিকদের সঙ্গে কথা বললে মালিক ডা. হারিস বলেন, মোশাররফ জোর করে
আমাদের ক্রয়কৃত ফ্লোরে তালা লাগিয়ে উলটো আমাকে ও আমার অন্যান্য পার্টনারদের মেরে
ফেলার হুমকি দিচ্ছে। একই সঙ্গে আমার খোঁজ নিতে আসা আমার আত্মীয় হিমেলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির
অভিযোগ এনেছেন। যেই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
ডা. মুর্শিদা
পারভীন বলেন, মোশাররফ আওয়ামী আমলে ফারুক খানের ভাতিজি জামাই পরিচয় দিয়ে আমাদের অত্যাচার
করেছে এবং ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ এ মেডিকেল অফিসার থেকে প্রফেসর ও হেড অব ডিপার্টমেন্ট
হয়েছে। এখন আবার বিএনপির নাম ভাঙিয়ে আমার ফ্লোর জোর করে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। আমরা
তার অত্যাচারের কাছে অসহায়।’
ডা. রাজিব বলেন,
আমি ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একই ডিপার্টমেন্ট চাকরি করার কারণে আমার বিরুদ্ধে
ডিরেক্টর, ডেপুটি ডিরেক্টর উনাদের কাছে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ করে আমাকে হেনস্তা করে।
সঙ্গে আমার ফ্লোর জোরপূর্বক দখল করে রেখে আমাদেরকেই মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। যারা
আমাদের বিপদে পাশে দাঁড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও মিথ্যা অভিযোগ করছে।’
আরেকজন মালিক
ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা ওর মতো ভূমিদস্যুদের হাত থেকে আইনগত বা সামাজিক হস্তক্ষেপ
কামনা করছি। তার মত লোক দেশের জন্য ক্ষতিকর, আমরা চাইনা পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার কোনো
দোসর পুনরায় আর কারও সম্পদ দখল করুক।