
প্রিন্ট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২৪ এএম
জবিতে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচি, যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি দূতাবাসে স্মারকলিপি প্রদান

জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২৬ পিএম

আরও পড়ুন
ফিলিস্তিনে ইসরাইলি নৃশংস হত্যাযজ্ঞ বন্ধের দাবিতে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচি পালন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বর থেকে একটি গণমিছিল বের হয়ে কোর্ট প্রাঙ্গণ সড়ক হয়ে তাঁতিবাজার মোড় পর্যন্ত অগ্রসর হয়। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মিছিলটি থামিয়ে দেন। সারা দেশে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা চলমান থাকায়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে পুলিশ মিছিলকারীদের ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানায়। পরে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে ক্যাম্পাসে ফিরে যান।
মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ইসরাইলি বর্বরতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তারা বলেন—‘তুমি কে আমি কে, প্যালেস্টাইন প্যালেস্টাইন’, ‘ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ কর’,
‘ওহুদের হাতিয়ার, গর্জে উঠো আরেকবার’, ‘জাতিসংঘ জবাব চাই, ওআইসি জবাব চাই’, ‘ইসরাইল নিপাত যাক, ফিলিস্তিন মুক্তি পাক।’
ক্যাম্পাসে ফিরে ভাষা শহিদ রফিক ভবনের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
সমাবেশ শেষে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসাইনের নেতৃত্বে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের দূতাবাস এবং বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
সমাবেশে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক নূর নবী বলেন, ‘মুসলিম বিশ্ব আজ নীরব। অনেক মুসলিম নেতা যেন মোসাদের এজেন্টের মতো কাজ করছেন। আমরা বাংলাদেশ থেকে তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই—তোমাদের আমরা বয়কট করলাম। পশ্চিমা নেতারা মুখে মানবতার কথা বলেন, অথচ তারাই ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করছে। এই গণহত্যার দায় তাদেরই নিতে হবে।’
জবি শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি একেএম রাকিব বলেন, ‘ইন্টেরিম সরকারকে আহ্বান জানাই—সরকারিভাবে ইসরাইলি পণ্য বয়কট করুন। না হলে জনগণ নিজেরাই তা বয়কট করবে। একইসঙ্গে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করে ইসরাইলি পণ্যের বিকল্প উৎপাদন করতে হবে।’
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, জবি শাখার সেক্রেটারি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, আমরা মুসলিম জাতি, খালিদ বিন ওয়ালিদের উত্তরসূরি। কিন্তু আমরা তা ভুলে গেছি। আজ আমরা শুধু ফতোয়াবাজিতে ব্যস্ত, যার সুযোগে ইহুদি-খ্রিস্টানরা মুসলিম ভাই-বোনদের হত্যা করছে। আমি মুসলিম যুবকদের জাগরণের আহ্বান জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের জবি শাখার সভাপতি মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ইসরাইলের আগ্রাসন যুগের পর যুগ ধরে চলছে। স্বাধীনতার নামে তারা ফিলিস্তিনে নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে। তথাকথিত শান্তিকামী জাতিসংঘ, ওআইসি এবং পশ্চিমা বিশ্ব চুপ করে আছে বলেই এই আগ্রাসন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেন, ইসরাইলি গণহত্যার মদদদাতা যুক্তরাষ্ট্র। এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধে আমরা মার্কিন দূতাবাসে স্মারকলিপি দেব। একইসঙ্গে সৌদি আরবের নিস্ক্রিয় ভূমিকার কারণে তাদের দূতাবাস এবং বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।”
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের নেতা ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।