শিক্ষার্থী নির্যাতন: কুয়েট ছাত্রলীগের ১০ নেতাকর্মীকে স্থায়ী বহিষ্কার
খুলনা ব্যুরো
প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৩৯ পিএম
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ড. এম এ রশিদ হলে ইসিই বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুর রহমানকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনায় কুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ ১০ নেতাকর্মীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া তিন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদের সাজা দেওয়া হয়েছে। তারাও ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।
কুয়েটের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, ২০২২ সালে ১১ সেপ্টেম্বর রাতে ড. এম এ রশিদ হলের ১১৫ নম্বর রুম ও গেস্ট হাউসে পৃথকভাবে শিবির সন্দেহে জাহিদুর রহমানের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এই অমানবিক নির্যাতনের পর জাহিদুর রহমানকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পাশাপাশি হলের তৎকালীন প্রোভোস্ট জাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বছর ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। উক্ত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও সুপারিশের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটি গত ২৭ জানুয়ারি এ সিদ্ধান্ত নেয়।
বহিষ্কার ১০ শিক্ষার্থী হলেন- মো. রায়হান আহমেদ (লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ), কুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাদমান নাহিয়ান সেজান (কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং), সাদ আহমেদ তূর্য (লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ), সাজেদুল কবির (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ), আদনান রাফি (লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ), রিজুয়ান ইসলাম রিজভী (লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ), ফুয়াদুজ্জামান ফাহিম (টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ), রশিদ হল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান মিঠু (টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ), মো. সাফাত মোরশেদ (টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ) এবং রশিদ হল ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো. ফখরুল ইসলাম ফারিসকে (বিইসিএম বিভাগ) পাঁচ বছরের জন্য সনদ প্রদান না করা এবং চিরতরে প্রশংসা পত্র দেওয়া যাবে না মর্মে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এছাড়া মোস্তাক আহমেদ তুষারকে (লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ) তিন বছরের জন্য সনদ না দেওয়া এবং চিরতরে প্রশংসা পত্র নাদিয়ার না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি সুভেন্দ দাস (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ) এবং ফারিয়ার জামিল নিহালকে (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ) তিন বছরের জন্য সনদ না দেওয়াসহ চিরতরে প্রশংসাপত্র না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়াও একই সভায় শাহ মোহাম্মদ রায়হানকে (ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ) পরীক্ষার সময় অসৎ উপায় অবলম্বন করার জন্য ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কুয়েটের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সুলতান মাহমুদ যুগান্তরকে বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সকল শিক্ষার্থীকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে।