দেশের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশসেরা শিক্ষক ও গবেষকদের নেতৃত্বে অসংখ্য অর্জনের মাধ্যমে খ্যাতি অর্জন করেছে এ বিদ্যাপীঠ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ ৫৪ বছরের এ যাত্রায় দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বাক্ষর রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
রোববার দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালন করা হয়েছে জবির ৫৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ উপলক্ষে এদিন সকাল ১০টায় বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের সামনে থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে এসে শেষ হয়।
শোভাযাত্রায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসানের নেতৃত্বে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবদুর রব, রেজিস্ট্রার আজিজুর রহমানসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্যে ছিল- বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত এবং শহিদদের জন্য দোয়া, রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণ, বিকালে পুতুল নাচ ও কলতান বিদ্যানিকেতনের শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনা।
এছাড়া কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রীতি ফুটবল এবং নারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রীতি হ্যান্ডবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও সন্ধ্যা ৬টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এবং শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া চত্বরে পিঠা মেলা এবং চারুকলা বিভাগের আয়োজনে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে বৈষম্যবিরোধী আল্পনা ও গ্রাফিতি প্রদর্শন করা হয়।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান বলেন, প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘ ৫৪ বছর পার করেছে। বয়স আমাদের দেশের বয়সের সমান। ফলে দেশের প্রতি আবেগ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেগ মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। প্রাণ-প্রকৃতির আবাসস্থল, প্রকৃতির লীলাভূমি এ বিশ্ববিদ্যালয় আজ ৫৫ বছরে পদার্পণ করল। দুর্ভাগ্যক্রমে এ পরিবেশ আমরা হারিয়ে ফেলেছি। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সারা দেশের মতো এ প্রাঙ্গণ বৈষম্যমুক্ত, অবিচারমুক্ত একটা বিদ্যাপীঠ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ তারই বহিঃপ্রকাশ।
এ সময় সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভেচ্ছা জানান উপাচার্য।