চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের এক নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রদলের অনুসারীদের বিরুদ্ধে। মারধরের শিকার ছাত্রলীগ নেতার নাম শফিকুর রহমান মেঘ। তিনি ছাত্রলীগের উপগ্রুপ সিএফসির অনুসারী ও শাখা ছাত্রলীগের উপ-প্রচার সম্পাদক ছিলেন বলে জানা যায়।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে চবির কলা ঝুপড়ির পিছন থেকে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রক্টরিয়াল বডি।
জানা গেছে, ছাত্রলীগ নেতা মেঘ ইতিহাস বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। সে তার চতুর্থ বর্ষের মৌখিক পরীক্ষা শেষে কলা অনুষদ থেকে বেরিয়ে জারুলতলার সামনে আসলে তার গতিরোধ করে শাখা ছাত্রদলের অনুসারীরা। এরপর কলা ঝুপড়ির পিছনে নিয়ে তাকে মারধর করা হয়। পরে প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তাকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে।
ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের লিখিত পরীক্ষা শুরু হয় গত ১৪ নভেম্বর এবং শেষ হয় ৩০ ডিসেম্বর। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এই বর্ষের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
ওই ছাত্রলীগ নেতাকে মারধরে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার নাম মোহাম্মদ রেদোয়ান। রেদোয়ান প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি নিজেকে শাখা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুনের অনুসারী বলে দাবি করেন।
মোহাম্মদ রেদোয়ান বলেন, ২০১৯ সালে মেঘ আমার মোবাইল চেক করে ছাত্রদলের সাথে সম্পৃক্ততা পেয়ে আমাকে গেস্টরুমে নিয়ে মারধর করে। আমাকে মেরে এক পর্যায়ে হল থেকে বের করে দেয়।
শাখা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মামুনুর রশীদ মামুন যুগান্তরকে বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ওই ছেলে রেদোয়ানকে মারধর করে শহিদ আব্দুর রব হল থেকে বের করে দিয়েছিল। আজকে রেদোয়ান ওই ছেলেকে দেখতে পেয়ে আমাকে ফোন করলে আমি ক্যাম্পাসে না থাকার কারণে আমাদের সেক্রেটারি নোমানের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে বলি।
তিনি আরও বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠনের সাথে আমাদের কোনো আপস নাই। প্রক্টরিয়াল বডি ওই ছেলেকে সেইফ এক্সিট দিয়ে মেডিকেলে পাঠিয়ে দিয়েছে।
তবে মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান। তিনি বলেন, আমরা জানার পর ওখানে কী হয়েছিলো তা দেখতে গিয়েছিলাম। যে মেরেছে সে কার রাজনীতি করে তা আপনারা খোঁজ নিলে জানতে পারবেন।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে ছাত্রলীগনেতা শফিকুর রহমান মেঘের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নাজমুল হোসাইন যুগান্তরকে বলেন, আমরা খবর পেয়ে ওই ছেলেকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে নিয়ে যাই। ডাক্তার তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয় ও অবস্থা গুরুতর বিবেচনা করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। তার বিরুদ্ধে কোনো নির্দিষ্ট অভিযোগ কিংবা মামলা থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।