ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি
যুগ ও উম্মাহর চাহিদার প্রতি দৃষ্টি রেখে গবেষণা করতে হবে
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২০ পিএম
দেশের মাদ্রাসা অঙ্গনের ২০৬ জন পিএইচডি এবং এমফিল ডিগ্রিধারী শিক্ষক-শিক্ষিকাকে সম্মাননা জানিয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের একমাত্র অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীস্থ গাউসূল আজম কমপ্লেক্সে তাদেরকে বিশেষ সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. শামছুল আলম।
তিনি বলেন, আলেমদের মধ্যে এতো ডক্টরেট ডিগ্রিধারী একসঙ্গে একত্রিত হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম। এর আগে কখনো এমনটি হয়নি।
ডিগ্রিধারীদের উদ্দেশে আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বলেন, অনেক শ্রমের ফল হলো একটি ডিগ্রি। তবে এসব ডিগ্রি এবং গবেষণা যাতে দ্বীনের জন্য কাজে আসে এটা মাথায় রাখতে হবে। এমন বিষয়ে মাঝে মাঝে গবেষণা করা হয় যেটি নিয়ে হাসাহাসি হয়। বরং যুগ ও উম্মাহর চাহিদার প্রতি দৃষ্টি রেখে সেসব বিষয়ের ওপর গবেষণা করেন, ডিগ্রি অর্জন করেন। আপনাদের গবেষণা, প্রবন্ধ, লেখা যাতে প্রত্যেক মানুষকে আকৃষ্ট করে।
প্রফেসর ড. মো. শামছুল আলম বলেন, গবেষণা ছাড়া পৃথিবীর কোন জাতি উন্নত হতে পারেনি। ইউরোপ-আমেরিকা বিশ্বে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে এর অন্যতম কারণ গবেষণা। প্রতিবছর যে নোবেল দেওয়া হয় তা উন্নত বিশ্বের লোকেরা পায়। কারণ তারা প্রতিনিয়ত গবেষণা করছেন। এজন্য গবেষণা ও চিন্তা দরকার। শুধু ইনক্রিমেন্ট পাওয়ার জন্য কিংবা মাহফিলে বক্তব্য দিতে গিয়ে নামের আগে ডক্টরেট বসানোর জন্য যাতে ডিগ্রি অর্জন না হয়। গবেষণা এমন বিষয়ে করেন, এমন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন যা উম্মাহর জন্য, দ্বীনের জন্য কাজে লাগবে।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, আমরা যে সমাজ চাই, যে সমাজের স্বপ্ন দেখি আগামী দিনে বাংলাদেশে সেরকম সমাজ হবে। ছায়ানট, উদীচী বা ৫৪ বছরের ভারতের হিন্দু সাংস্কৃতি আদলে যে সমাজ গড়ার চেষ্টা হয়েছিল সেরকম কিছুই থাকবে না। তবে এর জন্য আমাদের আরো লড়াই করতে হবে, লড়াই করেই আমরা বিজয়ী হব।
ইসলামী সমাজ বিনির্মাণে নারীদের ভূমিকার কথা তুলে ধরে ইনকিলাব সম্পাদক বলেন, নারীরা এই সমাজের ৫০ শতাংশ। তাদেরকে কর্মক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, সম্মান দিতে হবে। তবে তাদের যোগ্যতার বলে আসতে হবে, কোটার বলে না।
তিনি বলেন, সমাজ গঠনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে মায়েদের। মা যদি শক্তিশালী, ঈমানদার না হয় তাহলে রাষ্ট্রের সম্পদ বাড়িয়েও কোন কাজ হবে না। কারণ প্রতিটি সন্তানকে সু-সন্তান হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মূখ্য ভূমিকা পালন করেন একেকজন মা।
জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ ড. মাওলানা এ কে এম মাহবুবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. শাহনওয়াজ দিলরুবা খান, জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী, অধ্যক্ষ মাওলানা আ ন ম আবুবকর সিদ্দিক, অধ্যক্ষ ড. মাওলানা সৈয়দ শরাফত আলী, মাওলানা আব্দুল লতিফ শেখ, অধ্যক্ষ মাওলানা মনোয়ার আলী, অধ্যক্ষ ড. মাওলানা মোর্শেদ আলম ছালেহী, অধ্যক্ষ মাওলানা এজহারুল হক, ড. মাওলানা ইদ্রিস খান, অধ্যক্ষ ড. মাওলানা আব্দুল বাতেন, ড. মাওলানা ইবরাহীম আনোয়ারী।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দেশের আলিয়া মাদ্রাসা অঙ্গনের পিএইচডি ও এমফিল ডিগ্রিধারীগণ এবং জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সর্বস্তরের নেতারা।