রাবি প্রো-ভিসির প্রশ্ন, শিক্ষক রাজনীতি রেখে ছাত্র রাজনীতি সংস্কার কতটা সম্ভব
রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৬ পিএম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন খান। ছবি: সংগৃহীত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপ-উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন খান বলেছেন, বাংলাদেশে ছাত্র রাজনীতির জন্ম লেজুড়বৃত্তি করার জন্য। তাহলে আমি কিভাবে সেটিকে রেখে ছাত্র রাজনীতি সংস্কার করবো?
শনিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে ‘ছাত্র রাজনীতি সংস্কার প্রস্তাবে ছাত্র নেতৃবৃন্দের বোঝাপড়া’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। রাবির ‘স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশন’ এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
এ সময় ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, আলোচনার বিষয় হচ্ছে ছাত্র রাজনীতি সংস্কার। তাহলে আমার প্রশ্ন হচ্ছে রাজনীতি থাকবে এটা কি আমরা ধরে নিলাম? যদি ধরে নেই তাহলে ওকে। আর যদি না ধরে নিই তাহলে সংস্কার কেন। আগে প্রশ্নটি আসা উচিত ছাত্র রাজনীতি থাকবে কিনা? আমরা যদি ছাত্র রাজনীতির সংজ্ঞা খুঁজতে যাই তাহলে এই ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে পৃথিবীর আর কোথাও এটি পাওয়া যাবে না। একই সাথে আমাদের যে প্রচলিত শিক্ষক রাজনীতি আছে সেটিকে রেখে ছাত্র রাজনীতি যতই সংস্কার করি তা কি কার্যকর করা সম্ভব?
সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী, ইসলামি ছাত্রশিবিরের সভাপতি আব্দুল মোহাইমিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক তাসিন খান, পিডিএফ’র সাবেক সভাপতি আশিকুর রহমান ও রিসার্চ সোসাইটির সাবেক সভাপতি শাকিবুল হাসান প্রমুখ।
সভায় রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আব্দুল মোহাইমিন বলেন, যে ছাত্র রাজনীতি দেখে আমি বড় হয়েছি সেই ছাত্র রাজনীতি আমিও নিষিদ্ধ চাই। তবে সবাই যদি একাডেমিশিয়ান হয় তাহলে ভবিষ্যতে কারা নেতৃত্ব দিবে? ছাত্র রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য ছাত্রবান্ধব কাজ করা। এ কারণে ছাত্র রাজনীতির প্রয়োজন। ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হলে পরে একটি দল ক্ষমতায় এসে আবারও আগের মতো তার দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে।
তিনি বলেন, যদি আমরা যৌক্তিকভাবে ছাত্ররাজনীতির একটি মডেল উপস্থিত না করতে পারি তাহলে ভবিষ্যতে আবার আগের মত চলবে। এজন্য যেসব কারণে আমরা ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ চাই সেই সকল জায়গায় সংস্কার প্রয়োজন।
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, গত ১৫ বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেই রাজনৈতিক চর্চা ছিল আমরা তাকে রাজনৈতিক চর্চা বলি না। আমরা দেখেছি কেউ ছাত্রলীগের সভাপতি বা কোনো পদ পেলে সে নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক মনে করতো। প্রকৃত ছাত্র রাজনীতি এটি নয়। আমরা এতে বিশ্বাস করি না।
তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আগামী ছাত্র রাজনীতি হবে মানবিক রাজনীতি। যে রাজনীতি হবে শিক্ষার্থীবান্ধব। রাজনীতি হবে শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের জন্য, শিক্ষার্থীদের কল্যাণের জন্য। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কোনো নেতা-কর্মী হলে গিয়ে আধিপত্য বিস্তার করবে না। ছাত্রদলের কেউ কোনো অন্যায় করলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ২৪ ঘন্টার কম সময়ে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করবে।'
স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম রেজার সঞ্চালনায় সভার সভাপতিত্ব করেন স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী সজীব। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার ও প্রক্টর অধ্যাপক মো. মাহবুবর রহমান। এ সময় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী এ মতবিনিময় সভায় অংশ নেয়।