Logo
Logo
×

শিক্ষাঙ্গন

শিক্ষার্থীকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে

Icon

বাকৃবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪৭ এএম

শিক্ষার্থীকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) আবাসিক শাহজালাল হলের এক শিক্ষার্থীকে মারধর এবং সংখ্যালঘু ট্যাগ দিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। 

অভিযুক্তরা হলেন-একই হলের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ফাহিম-উল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম পলাশ, জাকারিয়া সাঈদ এবং সানজান ইসলাম মুন্না। 

অভিযোগকারী শিক্ষার্থী দাবি করেছেন-অভিযুক্তরা নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী ও তার দোসর। তবে অভিযুক্তরা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে হত্যার হুমকির বিচার এবং জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত আবেদনপত্র জমা দেন ভুক্তভোগী কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের চতুর্থ বর্ষের এবং শাহজালাল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী অনুপ পাল।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর আবেদন পত্র থেকে জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর রাতে শাহজালাল হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রভোস্ট স্যারের উপস্থিতিতে হলের সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য একটা  সাধারণ মিটিংয়ের আয়োজন করা হয়। মিটিংয়ে একই হলের ছাত্র সাইফুল ইসলাম পলাশ অজানা কারণে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদেরকে যেতে নিষেধ করেন। পরবর্তীতে তার নিষেধ অমান্য করে কয়েকজন শিক্ষার্থী মিটিংয়ে উপস্থিত হলে সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী ফাহিম-উল ইসলামকে সঙ্গে ‎‬‎নিয়ে সাইফুল ইসলাম পলাশ ও তার সহপাঠীরা আমাকে এবং অন্যান্য শিক্ষার্থীকে হেনস্থা করে।

তখন এর প্রতিবাদ জানালে কিছু সময় পর ফাহিম-উল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম পলাশ, জাকারিয়া সাঈদ এবং সানজান ইসলাম মুন্নাসহ আরও অনেকে আমার নিজ কক্ষ ২০১/ক তে প্রবেশ করে আমাকে মেঝেতে ফেলে এলোপাতারি ভাবে কিল, ঘুষি ও লাথি দিতে থাকে। পরবর্তীতে রুমমেট ও অন্যান্য সহপাঠীদের বাঁধা পেয়ে তারা চলে যেতে থাকে এবং আমাকে হিন্দু ধর্মের ও সংখ্যালঘু ট্যাগ দিয়ে হত্যার হুমকি দেয়।

অভিযোগের বিষয়ে ফাহিম-উল ইসলাম বলেন, নিজেদের অভ্যন্তরীণ গ্রুপের মেসেজ সিনিয়রকে দেওয়ায় পলাশ রাগ করে। কিন্তু এখানে আমি তার গায়ে কোনো ধরনের হাত তুলিনি। আমরা লেভেলের সবাই ছিলাম, এখানে সংখ্যালঘুর কোনো বিষয় নেই। আর তার সঙ্গে তর্ক হয়েছিল কেবল, কিন্তু গায়ে হাত তোলা হয়নি। আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছিলাম। আমাদের হলে ২য় বর্ষে জোর করে সবাইকে ছাত্রলীগে রাখা হতো এবং আমাকে ১ম ও ২য় বর্ষে নির্যাতনও করা হয়েছিল।

বিষয়টি নিয়ে সানজান ইসলাম মুন্না বলেন, ব্যাচমেটদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছিল, কিন্তু হিন্দু ধর্ম নিয়ে কোনো গালি দেওয়া হয়নি। আপনারা চাইলে যাচাই করে দেখতে পারেন। কোনো ধরনের মারধর হয়নি তার ওপর, আপনারা চাইলে জিজ্ঞাসাবাদ করে দেখতে পারেন। বরং তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে যে, সে আগে ছাত্রলীগ করত এবং জুনিয়রদের পেটাতো। আমার সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।

অভিযোগের বিষয়ে জাকারিয়া সাঈদ বলেন, আপনারা হলে এসে দেখেন কি হয়েছে। আমি কখনোই ছাত্রলীগে ছিলাম না, ১ম বর্ষে ছাত্রলীগের শো-ডাউনে যেতে হয়েছিল এই।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম পলাশ বলেন, এ ধরণের কোনো কাজ হয় নি। ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণেও অভিযোগ দিতে পারে। আমি এমন কিছু করি নি। আমার হলে আর ক্যাম্পাসে সবাই আমাকে চিনে, আমি এখনো হলে আছি আমার সাথে ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততা নেই।

শাহজালাল হলের হল প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ বদিউজ্জামান খান বলেন, ওই ছাত্রের অভিযোগ আমরা পেয়েছি। কিন্তু ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে এখনি কিছু বলা যাচ্ছে না। প্রক্টর স্যার আর আমরা মিলে আলোচনা করে পরবর্তীতে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

আবেদন পত্রের বিষয়ে বাকৃবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম বলেছেন, আমরা তার পত্রটি গ্রহণ করেছি। ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে এখন সুন্দর পরিবেশ বজায় রয়েছে। এই অবস্থাকে কেউ যদি অস্থিতিশীল করে ক্লাস-পরীক্ষার পরিবেশ ব্যাহত করতে  চাই, তাহলে আমরা ব্যবস্থা নিবো।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম