সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে জিপিএ-৫ বাড়লেও কমেছে পাশের হার
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:১৮ পিএম
চলতি বছরের ৩০ জুন থেকে সারা দেশে একযোগে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। এবার সারা দেশে পরীক্ষার্থী ছিল ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার কারণে গত ১৮, ২১, ২৩ ও ২৫, ২৮ জুলাই এবং ১ ও ৪ আগস্টের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
সবশেষে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন সময়সূচি প্রকাশ করে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। এরপর অবশিষ্ট পরীক্ষা না নেওয়ার দাবি করে পরীক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পরীক্ষা না নিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফলাফল ঘোষণার দেয় সরকার।
সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের ফলে জিপিএ ৫ বেড়েছে অর্ধলাখেরও বেশি। তবে এবারের এইসএসসি ও সমমানে পাসের হার আগের বছরের চেয়ে কিছুটা কমেছে।
বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. তপন কুমার সরকার বলেছেন, সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের কিছুটা প্রভাব শিক্ষার্থীদের মধ্যে থাকবেই। তবে সেটা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সমস্যা হবে না। কারণ যেখানেই তারা ভর্তি হতে যাক না কেন তাদের এডমিশন টেস্টের মধ্য দিয়ে তাদের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। আর এ বিষয়ে লেখাপড়ারও প্রস্তুতি থাকে। ইন্টারন্যাশনালি এই সাবজেক্ট ম্যাপিং বিষয়টি রয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত ফলে দেখা যাচ্ছে, ১১টি বোর্ড মিলিয়ে এবার গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এই হার গত বছরের চেয়ে দশমিক ৮৬ শতাংশ কম।
গত পাঁচ বছরের ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২০ সালে অটোপাসে শতভাগ সাফল্য ঘোষিত হওয়ার পর থেকে প্রতি বছরই পাসের হার ক্রমান্বয়ে কমেছে। ২০২১ সালে পরীক্ষা নেওয়া হয় সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে, বাছাই করা বিষয়ে। তাতে স্বভাবতই পাসের হার কমে যায়। সেবার ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেন।
পরের বছর ২০২২ সালে গড় পাসের হার কমে হয় ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ। সিলেবাস ও পরীক্ষার বিষয় বাড়ানোয় গত বছর বা ২০২৩ সালে পাসের হার আরো নেমে ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ দাঁড়ায়। এ বছর তা আরো দশমিক ৮৬ শতাংশ কমলো।
তবে পাসের হার কমলেও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা আগের চেয়ে বেড়েছে। এ বছর মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন। গত বছর ৯২ হাজার ৫৯৫ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। এর মানে, গত বছরের চেয়ে এবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৩ হাজার ৩১৬ জন বেশী।
এর আগে শতভাগ অটোপাশের পরের বছর ২০২১ সালের এইচএসসি ও সমমানে রেকর্ড ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। ২০২২ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ জন।
এ বছর গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ হলেও মোট ১১টি শিক্ষাবোর্ডের পাসের হারে এগিয়ে আছে মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডে। এই বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত আলিম পরীক্ষায় এবার পাসের হার ৯৩ দশমিক ৪০। এর পরেই অবস্থান বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের।
এই বোর্ডের অধীন এইচএসসি ভোকেশনাল, বিএম, ডিপ্লোমা ইন কমার্স পরীক্ষায় পাসের হার ৮৮ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। আর পাসের হার সবচেয়ে কম ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে। এসব বোর্ডে গড় পাসের হার ৭৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ।