জবিতে আবরারের স্মরণসভায় ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি
জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১৩ পিএম
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ উপলক্ষ্যে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। এ সময় ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী ও দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়ে সংগঠনটির রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
আবরার ফাহাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বাক-স্বাধীনতাকামী শিক্ষার্থীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই হক আদায়ের জন্য হলেও ছাত্রলীগের বিচার করতে হবে। ছাত্রলীগের অমানবিক নির্যাতনে আবরার ফাহাদের মৃত্যু হয়েছে। এই খুনিদের বিচার করতে হবে। তাদের ছাত্রসমাজ বয়কট করেছে।
ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকারের বর্ণনা দিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম আলী বলেন, ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজনীতি করেছে। শিক্ষার্থীদের মুখ চেপে ধরেছে। বাক-স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করলেই তাদের শিবির ট্যাগ দেওয়া হয়েছে। কোনো প্রমাণ ছাড়াই জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। অবৈধভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব বাতিল করেছে। এসব অবৈধ ফ্যাসিস্টদের জবাব দিতে হবে।
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ বলেন, আবরার ফাহাদ ভাই আমাদের গর্ব। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আবরার ফাহাদ প্রথম শহিদ। দেশের ভালোর জন্য কথা বলায় ছাত্রলীগের গুন্ডারা আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে। কতটা অমানবিক হলে একজন মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করে তা ভাবতেও ভয় লাগে। বাংলাদেশে এই ছাত্রলীগ নামে গুন্ডা লীগকে কোনো প্রকার রাজনীতি করতে দেওয়া যাবে না। প্রতিটা ক্যম্পাসে ছাত্রলীগের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী আবরার হামিম বলেন, একটা সময় ছিল শিক্ষার্থীদের জন্য আতঙ্কজনক। ছাত্রলীগের হাতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সব সময় মারধরের শিকার হয়েছেন। ছাত্রলীগের পাশাপাশি জগন্নাথে কাজ করত শিক্ষক লীগ। এর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও জড়িত ছিল। আমাকে শিবির ট্যাগ দিয়ে হয়রানি করেছে ডিবি দিয়ে। অনেক শিক্ষার্থী আছে যাদের সব সময় হয়রানি করেছে। নূর নবীকে ক্যাম্পাস থেকে প্রশাসন ডিবির হাতে তুলে দেয়। এর বিচার করতে হবে।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান হাসান ইমন বলেন, স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে কথা বলায় ছাত্রলীগের দালালরা বাসে আটকে আমাকে অমানবিক নির্যাতন করেছে। এই সন্ত্রাসীরা আমাকে মেরে ফোন মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়েছে। ন্যায় কথা বললেই তারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন- ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহিদ খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাহিয়ান বিন অনিক, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হিমেল, ইভান তাহসিব প্রমুখ।