শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে কুবি শিক্ষকদের মানববন্ধন, বাধার অভিযোগ আ.লীগের বিরুদ্ধে
কুবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৪, ১০:০৬ পিএম
সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের হত্যা, গ্রেফতার ও হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষকরা। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পথে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার অভিযোগ তোলেন।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিভিন্ন বিভাগের ৬ জন শিক্ষক এ মানববন্ধনে অংশ নেন। শিক্ষকদের দাবি- কোটবাড়ি, ক্যাডেট কলেজের সামনে, আনসার ক্যাম্প মোড়সহ বিভিন্ন জায়গায় তাদের বাধা দেওয়া হয়। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন চেক করে রেখে দিতে দেখা যায়।
মানববন্ধনে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুল হক ভূঁইয়া বলেন, আমাদের অনেক সহকর্মী জানিয়েছেন, কোটবাড়িতে তাদের আটকে দেওয়া হয়েছে, তারা শিক্ষক পরিচয় দিয়েও ক্যাম্পাসে আসতে পারেননি। প্রক্টরকে জানিয়েছেন, তারা আসতে চান কিন্তু তিনিও কোনো ব্যবস্থা নেননি।
আমার প্রশ্ন যারা শিক্ষকদের আটকে দিয়েছেন তারা আসলে কারা? তারা কী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী? এটা কোন ব্যবস্থার মধ্যে বাস করছি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের ক্যাম্পাসে আসতে পারবেন না।
বাধাপ্রাপ্ত হওয়া নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শামিমা নাসরিন বলেন, মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করার জন্য আমি সিএনজি করে ক্যাম্পাসে আসার পথে প্রায় দুইশ ছেলে আমার সিএনজি আটকায়। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিচয় দেওয়ার পরেও ওরা আমাকে বাধা দেয়। সিএনজি ঘুরিয়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। যখন আমি ফিরে যেতে চাচ্ছিলাম না তখন কয়েকজন আমার শরীরে হাত দিতেও এগিয়ে আসে। এরপর অনেকক্ষণ চেষ্টা করে আমি তাদের কাছ থেকে ক্যাম্পাসে আসার অনুমতি পাই; কিন্তু আমি আসতে পারলেও আমার অনেক সহকর্মী আজকে চেষ্টা করেও ক্যাম্পাসে আসতে পারেননি। পথে পথে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা তাদের ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে।
এছাড়াও গত ১৮ জুলাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গুলিবিদ্ধ হওয়া সন্তানের মা ও বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কামরুন নাহার বলেন, আমার সন্তান গুলিবিদ্ধ হয়েছে এজন্য আমি এখানে আসিনি, শুরু থেকেই আমার শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষদের ওপর নিপীড়ন, হত্যা এসব ঘটনা নিয়ে আমি মর্মাহত ছিলাম অন্যান্য শিক্ষকদের মতোই।
তিনি আরও বলেন, আমার সন্তান গুলিবিদ্ধ হওয়ায় আমি নিতে পারছিলাম না, আর যাদের সন্তানদের হত্যা করা হয়েছে তারা যে কী মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন! আমরা দেখেছি নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে গুলি করা হচ্ছে। এই যে নৈরাজ্য অবস্থা, তার দ্রুত নিরসন চাই আমরা। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে বলি তারা যেন আন্দোলনের পাশে থাকে সবসময়।
এ বিষয়ে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমাকে একজন শিক্ষক মোবাইল ফোনে এ অভিযোগ দিয়েছেন। এরপরই আমি প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি৷ তারা খোঁজ নেবেন বলে জানায়।