শিক্ষার্থীদের গ্রেফতারের নিন্দা ও মুক্তির দাবি চবির ৫৮ শিক্ষকের
চবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৪ পিএম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ (চবি) দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের গ্রেফতারের নিন্দা ও অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন চবির ৩০টি বিভাগের ৫৮ জন শিক্ষক। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকদের পক্ষে একটি বিবৃতি দিয়ে এ প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা উল্লেখ করেন- কোটা সংস্কারের যৌক্তিক আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু দিন ধরে দেশে চরম অরাজকতা চলছে। শিক্ষার্থীদের ওপর বর্বরোচিত হামলাও অব্যাহত রয়েছে। এখন পর্যন্ত আন্দোলনরত শিক্ষার্থীসহ শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত ২০০ জনের অধিক নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে।
পাশাপাশি বর্তমানে আন্দোলন দমানোর লক্ষ্যে দমনপীড়নমূলক হয়রানি, মামলা ও গণগ্রেফতার জারি রয়েছে। দমনপীড়নের এ ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত তিনজন ছাত্রকে গ্রেফতার/আটক বা ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে আমরা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি। এদের ছাড়া আরও কিছু শিক্ষার্থীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলেও বিভিন্ন সূত্র থেকে দাবি করা হচ্ছে। এসব ঘটনা অন্ত্যন্ত উদ্বেগজনক।
আমরা বিশ্বাস করি, চলমান আন্দোলনে আমাদের এই ছাত্ররা যদি অংশগ্রহণ করেও থাকেন তা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকারের অংশ হিসেবেই করেছেন এবং তারা কোনোভাবেই সহিংসতার সঙ্গে জড়িত নয়।
এ পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষক হিসেবে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি, সব রকম পুলিশি হয়রানির নিন্দা জানাচ্ছি এবং তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
পাশাপাশি আমরা চলমান আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আজ পর্যন্ত সংঘটিত সব হামলা-মামলা, ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড, গণগ্রেফতার ও হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ যেই হোক না কেন সব হত্যাকারীকে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানাই। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আটক/গ্রেফতারকৃত ছাত্রসহ দেশের সব নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা শিক্ষকরা হলেন- যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের খ. আলী আর রাজী, সায়মা আলম, ড. মো. শহীদুল হক, রওশন আক্তার ও ফারজানা করিম, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তারিকুল হাসান চৌধুরী, অধ্যাপক ড. মো. আলাউদ্দিন মজুমদার ও ড. নঈম উদ্দিন হাছান আওরঙ্গজেব চৌধুরী, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ শফিউর রহমান চৌধুরী, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ জাহেদ, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রভাষক আব্দুল মান্নান।
প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক, অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমান, ড. সুনন্দা বৈদ্য, ড. শ্রাবন্তী সাহা, ড. সুমন মজুমদার, ড. জান্নাতুল আকলিমা, ড. মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ মহিব, ড. তানিম জাবিদ হোসাইন ও মৌরি ঢালী।
মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন ও ড. মো. কামাল উদ্দিন। মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম ও ড. মো. ইমাম হোসাইন।
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. ইকবাল আহমেদ ও মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন ফারুকী। ইসলামিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সাখাওয়াত হুসাইন ও মুনমুন নেছা চৌধুরী। পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম ও ড. কাজী মুহম্মদ রাশেদ-নিজাম।
ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হাসমত আলী ও অধ্যাপক ড. শাহাদাত হোছাইন, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আদনান মান্নান ও অধ্যাপক ড. লুলু ওয়াল মরজান।
মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আফতাব উদ্দিন, মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এইচএম কামরুল হাসান, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সাঈদ বিন কামাল চৌধুরী, ইংরেজি বিভাগের যাকীয়াহ্ তাসনিম ও গোলাম হোসেন হাবীব, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. ফুয়াদ হাসান।
রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, আইন বিভাগের অধ্যাপক আসমা বিনতে হক ও আইন অনুষদের ইংরেজির প্রভাষক সৈকত দাশ, ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হারিসুর রহমান হাওলাদার।
লোকপ্রশাসন বিভাগের শামীম নূর (শিক্ষা ছুটি) ও মো. মাহবুবুর রহমান। নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. খাদিজা মিতু ও ড. মোশরেকা অদিতি হক। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের নুসরাত ইয়াছমিন পুষ্প ও মো. মহিউদ্দিন।
আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল চৌধুরী, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের এজিএম নিয়াজ উদ্দিন, সমাজতত্ত্ব বিভাগের নাজমা জাহান সরকার, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ড. তাপস কুমার ভৌমিক, ওশানোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. সালমা বিনতে শফিক, ফলিত রসায়ন এবং কেমিকৌশল বিভাগের ড. মো. দিদারুল আলম চৌধুরী।