জাবিতে ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে তালা ভেঙে কক্ষ দখলচেষ্টার অভিযোগ
জাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৪, ১০:২২ পিএম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলের একটি কক্ষের তালা ভেঙে দখলের চেষ্টা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের তিন কর্মীর বিরুদ্ধে। সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে হলের অষ্টম তলার ৮০৮নং কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই কক্ষের শিক্ষার্থীরা হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগপত্র দায়ের করেছেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- ৪৭ ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী অনুরাগ দাস, ৪৯ ব্যাচের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের মোস্তাকিম রহমান রাফি এবং ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির আরমানুল আলম। তারা সবাই হল ছাত্রলীগের কর্মী এবং শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী বলে পরিচিত।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে ও অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে অনুরাগ দাসের নেতৃত্বে রাফি ও আরমানসহ নাম না জানা ৪-৫ জন মিলে ৮০৮নং কক্ষের দরজা ও তালা ভেঙে হামলা করে কক্ষ দখলের চেষ্টা করে। ওই সময় ওই কক্ষের বৈধ শিক্ষার্থীরা তাদের বাধা দিতে গেলে দুইজন গুরুতর আহত হন। এ সময় অভিযুক্ত রাফি উচ্চস্বরে চেঁচিয়ে জানায় হল প্রাধ্যক্ষের নির্দেশে তিনি তালা ভাঙতে এসেছে। তালা ভাঙার সময় তাদের হাতে রড দেখতে পায় প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ওই কক্ষের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তানজিম আহমেদ বলেন, রাফি সন্ধ্যার দিকে কয়েকজন নিয়ে আমাদের রুমে তালা ভাঙতে আসে। তারপর তাদের সঙ্গে কথা বলার পর রাফি বলে বিষয়টা দেখছি। তারপর রাতের দিকে আবার তালা ভাঙতে আসে। এ সময় সে চায়ের কাপ ছুড়ে মারায় আমার পা কেটে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত অনুরাগ দাস বলেন, আমরা তথ্য পেয়েছিলাম ওই রুমে কেউ থাকে না। তাই তালা ভেঙে ভিতরে যাই। রুমে কেউ থাকে না এটি মিস ইনফরমেশন ছিল। তালা ভাঙার বিষয়টা আমার ভুল হয়েছে। আমি অপরাধ স্বীকার করছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নেবে তা মাথা পেতে নেব।
কক্ষ বণ্টন ও ফাঁকার খোঁজ রাখার দায়িত্ব প্রাধ্যক্ষের, আপনি কেন তা করতে গিয়েছেন- জানতে চাইলে অনুরাগ বলেন, চারতলা ও পাঁচতলা তো ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি পোর্শন ঘোষণা করা হয়েছে। এই ব্লকে যারা এলোটেড তারা অনেকেই নন-পলিটিক্যাল। আবার নন-এলোটেড অনেকেই পলিটিক্যালি এখানে এসেছে, সিট নিয়েছে। এই একটা ঝামেলা হয়েছে। প্রশাসন শুরু থেকে চার ও পাঁচতলা ফাঁকা করে নাই। এলোট দিয়ে ফেলেছে। এখন নন-পলিটিক্যাল যাদের আর্জেন্সি আছে ও ব্লকে থাকতে চায় না তাদের থাকার জন্য ওই কক্ষটিতে ব্যবস্থা করতে গিয়ে তালা ভেঙেছি।
অপর দুই অভিযুক্ত রাফি ও আরমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলমগীর কবীর বলেন, আমি বিষয়টি জানার পরপরই রাত আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে রাতেই এ ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছি। রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।