ট্রেনের জন্য দেরিতে পৌঁছলেও রাবিতে পরীক্ষা দিলেন ১২৫ শিক্ষার্থী
রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২৪, ০৬:৫৮ পিএম
ট্রেনের ইঞ্জিনের সমস্যার কারণে দেরিতে পৌঁছলেও মানবিক দিক বিবেচনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথমবর্ষে বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেয়েছেন অন্তত ১২৫ জন শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন ফেল করলে দুপুর সাড়ে ৩টার শিফটের পরীক্ষার্থীদের গন্তব্যে পৌঁছতে চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের লোকোমোটিভ খুলে ধূমকেতু এক্সপ্রেসকে গন্তব্যে পৌঁছানো হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার অসীম কুমার তালুকদার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন।
অসীম কুমার তালুকদার লিখেছেন- ‘৫ মার্চ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এটাকে পরীক্ষা না বলে ভর্তিযুদ্ধ বলা যেতে পারে। প্রায় ৭০০ ছাত্রছাত্রী আজকে ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকা থেকে এসে বিকাল সাড়ে ৩টার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। রেল ব্রোকেনের জন্য ধূমকেতু এক্সপ্রেস ঢাকা থেকেই বিলম্বে রওনা হয়। বেলা ১১টায় হিসেব করে দেখা গেল, ট্রেনটি বিকাল ৩টা নাগাদ রাজশাহী পৌঁছবে। পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ট্রেনটি অন্য ট্রেনগুলোকে বসিয়ে দিয়ে এগিয়ে আনছিলাম।’
তিনি লেখেন- ‘ভাগ্য এতই খারাপ, লাহেড়ী মোহনপুর স্টেশনে এসে ধূমকেতুর ইঞ্জিন ফেল করে, চাকা ঘুরছে না। কী করা যায়, কী করা যায়। পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে শরৎনগরে বসা চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন কেটে এনে ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন আবার চালু করলাম। হিসেবে করে দেখলাম, ট্রেনটি বিকাল ৪টায় রাজশাহী পৌঁছবে, তখন পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে। ভিসি মহোদয়কে পরীক্ষার সময় পেছানোর বিনীত অনুরোধ করলাম। তিনি আমাকে অন্তত ৪ বার ফোন করে ট্রেনের খবর নিলেন।’
‘ট্রেন সর্বোচ্চ অনুমোদিত গতিতে চলছে, দুশ্চিন্তা ছাড়ছে না। পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। উপায়ন্তর না দেখে আড়ানী স্টেশনের স্টপেজে ট্রেন না থামিয়ে থ্রু পাস করলাম। ঈশ্বরকে খুব একটা ডাকি না, পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে জোরে জোরে ডাকা শুরু করলাম, একটু মানতও করলাম। ঈশ্বর মনে হয় সদয় হলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে ট্রেন থামিয়ে দিলাম বিকাল ৩টা ৩৮ মিনিটে। হলে ঢুকতে হবে ৪টার মধ্যে। ভিসি মহোদয়কে বিনীত অনুরোধ করলাম, ছেলেমেয়েদের হলে ঢোকার সুযোগ দেওয়ার জন্য। তিনি কথা রাখলেন এবং রেলওয়ের সবাইকে ধন্যবাদ দিলেন। ট্রেন পরিচালনায় পাকশী কন্ট্রোলে সার্বক্ষণিকভাবে মনিটরিং করেন ডিআরএম (পাকশী)। এখন নিজেকে বেশ হালকা লাগছে।’
এ বিষয়ে বুধবার ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, মানবিক দিক বিবেচনায় আমরা পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশের সুযোগ দিয়েছি। নিয়মানুযায়ী পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট পরে কেন্দ্রে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। বিলম্বে ছাড়া এবং পথিমধ্যে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ট্রেনটি পৌঁছতে বিলম্ব হয়। তাই ওই ট্রেনের আনুমানিক ১২৫ জন শিক্ষার্থীকে আমরা কেন্দ্রে প্রবেশের সুযোগ দিয়েছি। তাদের প্রায় ২০ মিনিট মতো দেরি হয়েছিল। তবে তাদের অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়নি।