আমরণ অনশনে বসছেন জাবির অস্থায়ী কর্মচারীরা
জাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৩, ০৬:৫৪ পিএম
চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে টানা ১৩ দিন অবস্থান ধর্মঘট পালন শেষে আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীরা। চাকরি স্থায়ীকরণের ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন আশ্বাস না পাওয়ায় রোববার থেকে এ কর্মসূচি পালন করবেন তারা।
গত বৃহস্পতিবার কর্মচারীরা এ সম্পর্কিত একটি স্মারকলিপি উপাচার্য বরাবর জমা দিয়েছেন।
কর্মচারীরা বলছেন, চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে ২০২০ সাল থেকে এ পর্যন্ত তারা তিনবার প্রশাসনকে স্মারকলিপি প্রদান এবং একই দাবিতে কয়েকবার মানববন্ধন করেছেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ২ জানুয়ারি আমরণ অনশনে বসলে প্রশাসন ৬ মাসের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন হল, বিভাগ ও অফিসসমূহে তাদের নিয়োগের মৌখিক আশ্বাস দেন। তবে আশ্বাসের ৬ মাস অতিবাহিত হলেও প্রশাসন নিয়োগের ব্যাপারে কোনো আগ্রহ দেখায়নি। বিভিন্ন পদে অন্যদেরকে নিয়োগ দিলেও অস্থায়ী এসব কর্মচারীদেরকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন কর্মচারীরা।
অনশনের ব্যাপারে কর্মচারীরা বলেন, চাকরি স্থায়ীকরণে প্রশাসনের জোরালো কোনো পদক্ষেপ না থাকায় আমরা সর্বসম্মতিক্রমে আমরণ অনশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ৩০ জুলাই থেকে আমাদের এই কর্মসূচি চলতে থাকবে। চাকরির জন্য প্রয়োজনে আমরা জীবন দিয়ে দিব।
তবে এর আগে, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার সাংবাদিকদের বলেন, আমরাও চাই তাদের নিয়োগ দিতে। কিন্তু যোগ্যতা ছাড়া তো নিয়োগ দেওয়া যায় না। নতুন হলে ইলেক্ট্রিশিয়ান ও প্লাম্বারসহ কয়েকটি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সেসব পদে আবেদনের যোগ্যতা না থাকায় বর্তমান কর্মচারীরা আবেদনই করেননি। যেসব পদে কর্মচারীরা নিয়োগ চাইছেন, সেসব পদ খালি নেই। আবার নিয়োগের ক্ষেত্রে হল প্রভোস্টদেরও একটা চাওয়া থাকে। কর্মচারীদের বয়স হয়ে যাওয়ায় হল প্রভোস্টরা তাদের নিতে চাইছে না। তারপরও তাদের কয়েকজনকে স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম বলেন, দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীরা বর্তমানে যেসব পদে কর্মরত, সেসব পদে নিয়োগের ব্যাপারে ইউজিসির অনুমতি নেই। নতুন করে পদ সৃষ্টি করে নিয়োগেরও সুযোগ নেই। তাই তাদের নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। এসব পদে নিয়োগের অনুমোদন পেলে তাদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
এর আগে, ১৭ জুলাই সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন কর্মচারীরা। পরদিন ১৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম এবং সাবেক উপাচার্য ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরসহ প্রশাসনের অন্যান্য শিক্ষকরা কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন। তবে নিয়োগের ব্যাপারে তারা কর্মচারীদেরকে কোনো আশ্বাস দেননি। এমনকি ধর্মঘটের ১৩ দিন পেরিয়ে গেলেও কর্মচারীদের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।