জবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে প্রশ্ন সরবারহের অভিযোগ
জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:২৫ এএম
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জুয়েল কুমার সাহার বিরুদ্ধে নিজ বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার প্রশ্ন সরবারহের অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ছাত্রী ও শিক্ষক উভয়ের শাস্তির দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা।
ঘটনার বিষয়ে বিভাগের একাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অভিযুক্ত জুয়েল সাহা স্নাতক চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রীকে তার নিজ কোর্স ‘ক্লাসিকাল ইলেকট্রো ডাইনামিকস: ১’সহ আরো বেশ কয়েকটি কোর্সের প্রশ্ন সরবারহ করেন।
গত ৪ ডিসেম্বর এই কোর্সের মানোন্নয়ন পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ওই ছাত্রী নকলসহ ধরা পড়েন। পরবর্তীতে তার নকলের সাথে প্রশ্নের অধিকাংশ উত্তর মিল থাকায় বিভাগের শিক্ষকরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি শিক্ষক জুয়েল সাহার নাম বলে দেন।
এ ঘটনায় পরে বিভাগীয় একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে ঐ শিক্ষককে সকল-ক্লাস পরীক্ষা থেকে ৩ বছরের জন্য মৌখিকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তবে তাকে অফিসিয়াল কোনও শাস্তির মুখোমুখি করা হয়নি এবং অজানা কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও অবহিত করা হয়নি। এই শাস্তি প্রদানের আগে কয়েক দফা বৈঠকে বসেন শিক্ষকরা।
এঘটনায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, বিষয়টি খুবই সেন্সিটিভ হওয়ায় আমি চাইব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরপেক্ষ তদন্তের ব্যবস্থা করুক। তদন্তে প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি থাকবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে। পাশাপাশি ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধেও যেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
এ বিষয়ে বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আঞ্জুমান আরা বলেন, এটা বিভাগের অভ্যন্তরীন বিষয় দেখিয়ে চেয়ারম্যান আমাদের কাছ থেকে কোন লিখিত অভিযোগ নেননি। এরপর বিভাগের সকল শিক্ষকদের নিয়ে একাডেমিক সভায় এ মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত শিক্ষককে তিন বছরের জন্য ক্লাস পরীক্ষা থেকে অব্যহতি দেয়া হয়। কিন্তু তার এই শাস্তির বিষয়ে চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত নির্দেশনা জানতে চাওয়া হলে তিনি তা দিতে অস্বীকৃতি জানান।
এ বিষয়ে বিভাগে ২য় বর্ষের পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. কানিজ ফাতেমা কাকলী বলেন, আমি বিষয়গুলো জানার পরই বিভাগের চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। এরপর বিভাগের সকল শিক্ষকরা মিলে একাডেমিক মিটিংএ তাকে তিন বছর ল্যাব ব্যতিত সকল ক্লাস পরীক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যহতি দেয়া হয়। কিন্তু আমি লিখিত অভিযোগের কথা বললে বিভাগের চেয়ারম্যান বলেন, বিভাগের বিষয় বিভাগেই সুরহা হোক। তাই আর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয় নি।
এ বিষয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান নূর আলম আবদুল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে লিখিত কোন অভিযোগ না আসায় আমি একাডেমিক শাস্তি কার্যকর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে অবিহিত করতে পারি নি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক জুয়েল সাহার সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোন সাড়া মিলেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি আজ অবগত হয়েছি। আমি এ বিষয়টি নিয়ে বিভাগে খোঁজ নিব। পরে তদন্ত সাপেক্ষে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এসব একাডেমিক বিষয়ে আমরা সর্বদা জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করব। কোন ছাড় দেয়া হবে না।