সিট উদ্ধারের দাবিতে প্রশাসন ভবনে রাবি শিক্ষার্থীর অবস্থান
রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৬:৪২ এএম
সিট উদ্ধারের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রশাসন ভবনে অবস্থান নেন জাকির হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের মূল ফটকে বিছানা-চাদর বিছিয়ে অবস্থান নেন তিনি।
ভুক্তভোগী জাকির হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ১৩৫ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র।
জাকির হোসেনের অভিযোগ, হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোমিন ইসলাম তিন দিন ধরে তার সিট দখলে নিয়েছেন। হলের অন্য কক্ষের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে তার সিটে তুলে দিয়েছেন। এ ঘটনায় হল প্রাধ্যক্ষকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরেও স্থায়ী সমাধান না পাওয়ায় তিনি অবস্থান নিয়েছেন।
এর আগে গত বুধবার হল প্রাধ্যক্ষকে দেওয়া লিখিত অভিযোগে জাকির হোসেন উল্লেখ করেন, গত ২২ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে ছাত্রলীগের হল সেক্রেটারি (সাধারণ সম্পাদক) মোমিন ও তার অনুসারীরা এসে জিজ্ঞেস করেন, ‘তোমাকে কে এই রুমে তুলেছে?’ উত্তরে প্রাধ্যক্ষ স্যারের কথা বললে মোমিন বলেন, ‘এটা আমার সিট, প্রাধ্যক্ষ তোলার কে?
’ এরপর মোমিন আমাকে ও প্রাধ্যক্ষ স্যারকে গালিগালাজ করেন এবং ২৯ জানুয়ারির পর কক্ষ ছেড়ে দিতে বলেন। কক্ষ না ছাড়লে মারধরের হুমকি দেন। তার কথামতো কক্ষ না ছাড়ায় মঙ্গলবার সে কক্ষে এসে আমার বিছানাপত্র ফেলে দিয়ে অন্য একজনকে তোলেন।
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা মোমিন ইসলাম জানান, তাকে বের করে দেওয়া বা অন্য কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি। হলে প্রাধ্যক্ষ স্যার বরাবরের মতো সিট বরাদ্দের বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে রাতারাতি নিজের পছন্দের ব্যক্তিকে তুলে দেন; কিন্তু ওই রুমে একজন ছাত্রলীগকর্মী আবাসিক থাকার পরও অন্য একজনকে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়। হল প্রাধ্যক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা আর ছাত্রলীগের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ আচরণের জন্য এ রকম হয়েছে।
গালিগালাজের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৩৫ নম্বর কক্ষে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোমিন ইসলামের তোলা নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ওই কক্ষের নন। হল কার্ড অনুযায়ী তিনি ৩০৭ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র। আবার হলের ৩০৭ নম্বর কক্ষে গিয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের ওই শিক্ষার্থীর আসনে একজন অনাবাসিক শিক্ষার্থীকে পাওয়া যায়। তাকে হল শাখা সাধারণ সম্পাদক মোমিন ইসলাম ওই সিটে তুলেছেন বলে জানান ওই অনাবাসিক শিক্ষার্থী।
এ ঘটনার সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক একরামুল ইসলাম বলেন, জাকিরকে ১৩৫ নম্বর কক্ষে সিট দেওয়া হয়; কিন্তু একটি সংগঠনের কিছু ছাত্র তাকে সেই সিট ছেড়ে দিতে বলে। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়। সে প্রশাসন ভবনে অবস্থান নেওয়ার আগেই বিষয়টির সমাধান হয়েছে। জাকির তার সিটেই থাকবে।