Logo
Logo
×

সাহিত্য সাময়িকী

আমি কেবল গণহত্যার অবসানের জন্য অপেক্ষা করছি

Icon

মেজবাহ উদ্দিন

প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

আমি কেবল গণহত্যার অবসানের জন্য অপেক্ষা করছি

হৃদয়ের যে জারণ রসে বেঁচে থাকে মানবিকতা, সাহিত্য তার অনুঘটক। যার অনেকটা জায়গাজুড়েই আছে আরবি সাহিত্য। আর সাহিত্যের সেই দুনিয়াকে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজটা দীর্ঘ সময় ধরেই করে চলেছেন ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়ার আরবি সাহিত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হুদা ফাখরুদ্দিন। লেখক, অনুবাদক এবং মেটাপোয়েসিস ইন দ্য অ্যারাবিক ট্র্যাডিশন এবং দ্য অ্যারাবিক প্রোস পোয়েম : পোয়েমটিক থিওরি অ্যান্ড প্র্যাকটিসের এ লেখক আরবিতে লেখা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং গভীর অর্থবহ কবিতাগুলোর অনুবাদ করেছেন। আধুনিক আরবি কবিতা এবং তার ঐতিহ্যের সঙ্গে সংযোগের ক্ষেত্রে হুদা ফাখরুদ্দিনের গভীর দক্ষতা রয়েছে। তার অনুবাদে এ জ্ঞানের ঐশ্বর্য এবং ঐতিহাসিক উপলব্ধি স্পষ্টতই ধরা পড়ে। তার সর্বশেষ অনুবাদ সালিম বারাকাতের ‘দ্য ইউনিভার্স অল অ্যাট ওয়ান্স, সিলেক্টেড পোয়েম’ প্রকাশ উপলক্ষ্যে সম্প্রতি তার একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এ বছর ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ড জয়ী লীনা খালাফ তুফ্ফাহা। সে সাক্ষাৎকারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ তুলে ধরেছেন মেজবাহ উদ্দিন

গত নয় মাসে আপনি জীবিত ফিলিস্তিনি কবি, যেমন ইব্রাহিম নাসরাল্লাহ, সামের আবু হাওয়াশ এবং ২০২৩ সালের ২০ অক্টোবর খান ইউনিসের বাড়িতে ইসরাইলি বোমাবর্ষণে নিহত হিবা আবু নাদা’র অত্যন্ত শক্তিশালী কবিতাগুলো অনুবাদ করেছেন। ফিলিস্তিনি কবিদের কাজগুলো ইংরেজি ভাষার পাঠকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া আপনার জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল এই সময়ে?

: ফিলিস্তিনের ইতিহাস এবং তার সাংস্কৃতিক সৃষ্টি বিগত একশ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে আরবি সাহিত্যের দায়িত্বশীল পাঠের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ফিলিস্তিন এবং ফিলিস্তিনি সাহিত্যকে কেন্দ্রে রাখা আমার লেখালেখি এবং শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আরবি সাহিত্যকে সততার সঙ্গে অধ্যয়ন করার জন্য এবং বাইরের চাপানো বাধ্যবাধকতার প্রতিক্রিয়া হিসাবে নয়, বরং মূল সত্য ধরে রাখার জন্য এটি একটি স্পষ্ট প্রতিজ্ঞা। আরবি সাহিত্য ঐতিহ্যের একজন গবেষক হিসাবে ফিলিস্তিন আমার বুদ্ধিবৃত্তিক এবং একাডেমিক ভাবনার কেন্দ্রে রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি যে সাহিত্য একটি ধারাবাহিকতা এবং আজকের লেখা কোনো কবিতা প্রকৃতভাবে পড়া সম্ভব নয় যদি তা, যে ঐতিহ্যের অন্তর্গত তা সম্পর্কে জানা না থাকে; একইভাবে, হাজার বছর আগে লেখা কোনো কবিতাও প্রকৃত কবিতা হিসাবে বোঝা সম্ভব নয়, যদি তার ঐতিহ্য এবং বর্তমান মুহূর্তে সে ভাষার সৃষ্টিশীল চেতনার সঙ্গে সংযোগ না থাকে।

গাজায় গণহত্যা চলাকালীন ফিলিস্তিনি কবিদের কাজগুলো অনুবাদ করা আমার জন্য জীবনের একটি সংযোগ রেখা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গাজা বহু দশক ধরে কথা বলে আসছে এবং আমাদের তা শুনতে ও শিখতে হবে। ইতিহাসের এ মোড়ে আমরা গাজা এবং তার শিল্পী ও লেখকদের দিকে ফিরে তাকাই ভাষার জন্য, বেঁচে থাকার ও প্রতিরোধের উপায় খুঁজে পাওয়ার জন্য এবং দমনকারীদের দ্বারা লিখিত ইতিহাসের বিকল্প একটি ইতিহাসের সন্ধানের জন্য।

মানবতাবাদী হতে চাইলে আমরা কীভাবে সে ভাষা এবং সাহিত্যিক ঐতিহ্যের শিক্ষানবিশত্বে প্রবেশ না করে থাকি, আমরা যা অধ্যয়ন করি তাকে দেখার উপায়, চিন্তার পদ্ধতি এবং পৃথিবীকে বোঝার এক মাধ্যম হিসাবে? গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের নোবেল পুরস্কার গ্রহণ বক্তৃতার একটি প্রশ্ন মনে পড়ে এবং এটি ফিলিস্তিনি এবং আরবি সাহিত্যের ক্ষেত্রে কতটা প্রাসঙ্গিক তা আমাকে চমৎকৃত করে

: ‘সাহিত্যে আমাদের মৌলিকতা খুব সহজে মেনে নেওয়া হয়, অথচ সামাজিক পরিবর্তনে আমাদের কঠিন প্রচেষ্টাগুলো কেন এত সন্দেহের চোখে দেখা হয়?’ তিনি আরও জানতে চান, কেন ‘প্রগতিশীল ইউরোপিয়ানরা নিজেদের দেশের জন্য যে সামাজিক ন্যায়বিচার চায়, সেটি অন্য জাতির জন্য অস্বীকার করা হয় এবং কেন তাদের সেই প্রচেষ্টাগুলোকে সব সময় খারাপভাবে উপস্থাপন এবং যে কোনো মূল্যে ধ্বংস করা হয়।’ আমরা এটি গাজার ক্ষেত্রে সরাসরি ঘটতে দেখছি। যথেষ্ট হয়েছে! যখন আপনি ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে একটি গণহত্যার প্রতিবাদ করার মতো মৌলিক মানবিক শালীনতা না দেখান, তখন তাদের সাহিত্য ‘পড়া এবং প্রশংসা করা’ এক ধরনের সহিংসতা এবং আগ্রাসন।

আপনি আরবি কবিতার অসংখ্য সংগ্রহ অনুবাদ করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ‘লাইটহাউস দ্যাট ডিনাইড মি’ এবং ‘দ্য স্কাই দ্যাট ডিনাইড মি’, যা আপনার পিতা লেবানিজ কবি জাওদাত ফখরুদ্দিনের লেখা এবং ‘দ্য ইউনিভার্স অল অ্যাট ওয়ান্স’, যা সালিম বারাকাতের লেখা। সম্প্রতি আপনি একটি নতুন কবিতা সংগ্রহ ‘বর্ডার উইজডম’ আরবিতে অনুবাদ করেছেন, যা আপনার সঙ্গী, ফিলিস্তিনি কবি আহমদ আলমাল্লাহ’র লেখা। এ নতুন গ্রন্থে অনুবাদক এবং সহযোগী হিসাবে আপনার ভূমিকার বিষয়ে আপনি কি একটু আলোকপাত করতে পারেন? মূল গ্রন্থের লেখকদের সঙ্গে আপনার সংলাপ কীভাবে অনুবাদের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করেছে?

: অনুবাদ হলো একটি পাঠের সবচেয়ে সৃজনশীল এবং অন্তরঙ্গ পাঠ এবং এটি স্বভাবতই সহযোগিতামূলক। আমি অনুবাদকে একটি পাঠ, তার লেখক, বা সহ-অনুবাদকদের সঙ্গে একটি সংলাপ হিসাবে দেখি। এটি একটি সংলাপ, যা মূল পাঠকে একমত, বিরোধিতা, ভুল বোঝাবুঝি, টানাপোড়েন এবং আবিষ্কারের মাধ্যমে খোলাসা করে। এভাবেই আমি সেই কবিদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক কল্পনা করি, যাদের আমি অনুবাদ করি, এমনকি আব্বাসীয় এবং ইসলামপূর্ব যুগের কবিদের সঙ্গেও।

আমার পিতা জাওদাত ফখরুদ্দিনের কাজ অনুবাদ করার সময়, এ সংলাপ আমার জীবনজুড়েই চলছে। তার কিছু কবিতা বহু বছর ধরে আমার মনে অনুরণিত হওয়ায় আমি তার কবিতাগুলোর একটি লেখকত্ব বা মালিকানা অনুভব করি। তবে অনুবাদ হলো কবিতাগুলোর সঙ্গে সংলাপ, কবির সঙ্গে নয়-এবং আমার মনে হয় কবিতাগুলোর সঙ্গে আমার সম্পর্কই আমার অনুবাদে প্রকাশ পায়।

সালিম বারাকাতের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা ভিন্ন। প্রথম খণ্ডে কাজ করার সময় তিনি পুরোপুরি অনুবাদ প্রক্রিয়ার বাইরে ছিলেন। নতুন খণ্ডে তিনি কবিতা এবং উদ্ধৃতিগুলোর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় বলা যায় এটি তার সঙ্গে একটি বেশি সহযোগিতামূলক কাজ। আমার সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী এবং গভীর সহযোগিতা আমার সঙ্গী আহমাদ আলমাল্লাহর সঙ্গে। আমাদের সম্পর্ক টিকে আছে কবিতার প্রতি আমাদের যৌথ আগ্রহ এবং ভালোবাসাকে কেন্দ্র করে। আমরা দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে কবিতায় সঙ্গী। যদিও অনুবাদ সব সময়ই সৃজনশীল লেখার একটি কাজ, আহমাদের কবিতা আরবিতে অনুবাদ করা প্রায় পুরোপুরি সৃজনশীল লেখার পর্যায়ে পড়ে। তার কবিতার প্রতি আমার সম্পৃক্ততা আমাকে আরবি এবং ইংরেজি উভয় ভাষায়ই একজন পাঠক, লেখক এবং অনুবাদক হিসাবে তৃপ্ত করে।

সালিম বারাকাতের কাজ প্রথমে আপনাকে কীভাবে আকৃষ্ট করেছিল? আধুনিক আরবি কবিতায় তার অবদান আপনি কীভাবে বর্ণনা করবেন?

: সালিম বারাকাতের কাজের প্রতি প্রথম যে বিষয়টি আমাকে আকর্ষণ করেছিল, তা হলো এর প্রলুব্ধকর চ্যালেঞ্জ। বারাকাতের কবিতা হলো ‘ভাষা’ এবং ‘অর্থ’র মধ্যে এক ধরনের সংঘর্ষ। অর্থ হলো সমাধান; এটি ভাষাকে একটি সুনির্দিষ্ট চূড়ান্ত রূপে সংগঠিত করে। আর বারাকাতের কবিতায় ভাষা সে চূড়ান্ত রূপের বিরুদ্ধে একটি প্রতিরোধ। এটি পাঠককে হতাশ করে রাখে, তাকে সক্রিয়ভাবে একটি অধরা অর্থের সন্ধানে ব্যস্ত রাখে এবং শেষমেশ হয়তো একটি কল্পিত অর্থ বা একটি কল্পিত সমাধানের জন্য তাকে মানিয়ে নিতে বাধ্য করে। এটি আমাকে পাঠক এবং অনুবাদক উভয় হিসাবেই গভীরভাবে উদ্বুদ্ধ করে। ‘কঠিন কবিতা’ ধারণাটি (যা আমি প্রত্যাখ্যান করি) এবং ‘অনুবাদ-অযোগ্যতা’র ধারণাটি আমার কাছে বিশেষভাবে প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে যে কোনো অনুবাদে হাত দেওয়ার আগে, বিশেষত কবিতার ক্ষেত্রে; সেগুলোই বারাকাতের কাজের প্রতি আমাকে আকৃষ্ট করেছে।

একজন অনুবাদক এবং আরবি সাহিত্য পণ্ডিত হিসাবে, আপনি গত একশ বছরে (আঞ্চলিক প্রসঙ্গ ছাড়িয়ে) বৈশ্বিক সাহিত্যে ফিলিস্তিনি কবি ও লেখকদের অবদান কীভাবে বর্ণনা করবেন? তারা কী কী থিম প্রবর্তন বা বিকাশ করেছেন? তারা কোন আন্দোলন নিয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে আলোচনা করেছেন?

: ফিলিস্তিন একটি মোটিফ, রূপক, অভিজ্ঞতা এবং কারণ হিসাবে আধুনিক আরবি সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ১৯৪৮ সালের নাকবা এবং এটি যে অন্তহীন নির্বাসন এবং শরণার্থী অবস্থার মধ্যে ফিলিস্তিনি জনগণকে আরব বিশ্ব এবং এর বাইরে নিক্ষেপ করেছিল, তা বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে আধুনিক আরবি সাহিত্য এবং শিল্পে অনেক নতুন প্রবণতা এবং আন্দোলনের সূচনা করেছিল। নাকবা এবং এর পরবর্তী সময়ে ফিলিস্তিনিদের অভিজ্ঞতা আরবি সাংস্কৃতিক উৎপাদনে গভীর এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলেছে। উদাহরণস্বরূপ, আমরা ফিলিস্তিন এবং ফিলিস্তিনি লেখক ও চিন্তাবিদদের অবদান ছাড়া আধুনিকতাবাদী আন্দোলনের উত্থান অধ্যয়ন করতে পারি না।

ফিলিস্তিনি লেখক ও তাত্ত্বিকরা আমাদের সাহিত্যে অঙ্গীকারের ধারণা পুনর্বিবেচনা করতে আহ্বান জানিয়েছেন। কনাফানির শক্তিশালী উক্তি-‘আমি রাজনৈতিকভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছি কারণ আমি একজন ঔপন্যাসিক, এর বিপরীত নয়’-থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ফিলিস্তিনি সাহিত্য আমাদের দেখায় যে, শিল্পীসুলভ অঙ্গীকার কখনোই রাজনৈতিক অঙ্গীকার থেকে পৃথক হতে পারে না। তিনি বিশ্বাস করতেন যেসব শিল্প, বিশেষত সাহিত্য, পৃথিবীকে বদলানোর উদ্দেশ্যে হওয়া উচিত; অন্যথায় এটি কেবল বিশ্বের বর্তমান অবস্থা রক্ষা এবং বিদ্যমান অন্যায়গুলো পুনরুৎপাদনের একটি হাতিয়ার হয়ে থাকে। একজন লেখক এবং কবি হওয়া মানেই হলো বিশ্বকে ভিন্নভাবে কল্পনা করার বাধ্যবাধকতা থাকা।

যদি আপনি নতুন পাঠকদের জন্য আধুনিক ফিলিস্তিনি সাহিত্য সম্পর্কে একটি প্রাথমিক কোর্স প্রস্তাব করতে চান, তাহলে আপনি কোনো সাহিত্যিক টেক্সট অন্তর্ভুক্ত করবেন?

: ফিলিস্তিনি সাহিত্য সংকটের সময়ের জন্য কোনো সাহিত্য নয় এবং এর অধ্যয়ন এক ধরনের ‘নিরাপদ’ সংহতি প্রদর্শনের চিন্তাভাবনাও নয়। যেমনভাবে আমি জোর দিচ্ছি যে, আধুনিক আরবি সাহিত্যের অধ্যয়ন ফিলিস্তিনি সাহিত্য ছাড়া অসম্পূর্ণ, তেমনিভাবে আমি ফিলিস্তিনি সাহিত্যকে তার ঐতিহ্যের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে অধ্যয়ন করার ওপর জোর দিচ্ছি। গত বসন্তে, আমি ‘প্রাক-ইসলামি আরব থেকে ফিলিস্তিন পর্যন্ত প্রতিরোধ সাহিত্য’ নামে একটি কোর্স পড়িয়েছি, যেখানে আমরা আরবি কবিতা এবং গদ্য থেকে বাছাই করা টেক্সট পড়েছি যা প্রতিরোধ, সম্প্রদায়, ব্যক্তিগত ক্ষমতা এবং সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাহিত্যিক বিপ্লবের বিভিন্ন রূপ অন্বেষণ করে।

যারা তুলনামূলকভাবে বেশি অনূদিত এবং পরিচিত, যেমন সামিহ আল-কাসিম, মাহমুদ দারউইশ, এমিল হাবিবি, জাবরা ইব্রাহিম জাবরা, ঘাসান কনাফানি এবং ইব্রাহিম নাসরাল্লহ- তাদের পাশাপাশি আমি অপ্রচলিত লেখক ও কবিদের ওপরও আলোকপাত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেমন তাওফিক আল-সায়েঘ, ইব্রাহিম তুকান, ফাদওয়া তুকান, সালমা খাদরা আল-জাইউসি, মুয়িন ব্সিসো, হুসেইন আল-বারঘোতি, জাকারিয়া মুহাম্মদ এবং অন্যরা।

এমন কোনো লেখা কি আছে যা আপনি অনুবাদ করার স্বপ্ন দেখেন?

: আল-শানফারাহর লামিয়াহ এমন একটি কবিতা যা আমার জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। আমি এটি শৈশব থেকে আংশিকভাবে মুখস্থ করেছি। এটি প্রায়ই আমার মাথায় বাজতে থাকে, বিশেষ করে গত নয় মাসে। এটি এমন একটি কবিতা যা রক্ষা করে, সান্ত্বনা দেয়, ক্রোধ উসকে দেয়, শান্ত করে এবং সন্তুষ্ট করে। এটি অনুবাদ করার স্বপ্ন আমি পরম আদরে লালন করি এবং সেই স্বপ্নকে রক্ষা করার জন্য অনুবাদটিকে পিছিয়ে দিই, স্থগিত রাখি। এদিকে আমি ক্রমাগত সেই কবিতার শক্তি, সুর, মনোভাব এবং এটি যেভাবে প্রতিটি মহান কবিতার মতো, পৃথিবীকে একত্র করে এবং শব্দ ও চিত্রের প্রাকৃতিতে নতুনভাবে সাজিয়ে তোলে- সেগুলোকে একত্রিত করার সুযোগ খুঁজে চলেছি।

এমন কিছু কি আছে আপনি এখনো যার অপেক্ষায় আছেন?

: এই মুহূর্তে, আমি কেবল গণহত্যার অবসানের জন্য অপেক্ষা করছি। গাজার গণহত্যা ইতিহাসের এক প্রতিবাদ, পৃথিবীর সমাপ্তি; যেমনটা আমরা জানি-এরপর কিছুই আগের মতো থাকা উচিত নয়। সময় স্থবির হয়ে গেছে; কোনো স্বপ্ন, কোনো ভবিষ্যৎ, কোনো পরিকল্পনা থাকবে না যতক্ষণ না গণহত্যা শেষ হয় এবং সময় কিছুটা বোধসম্পন্ন হয়ে ওঠে আর তার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসে একটি মুক্ত ফিলিস্তিনের দিকে।

সূত্র : ওয়ার্ডস উইদাউট বর্ডারস

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম