বাংলাদেশে ডিজিটাল বিপ্লব
ড. আতিউর রহমান
প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সম্প্রতি সাংবাদিক, গবেষক অজিত কুমার সরকারের লেখা ‘বাংলাদেশে ডিজিটাল বিপ্লব: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব থেকে শেখ হাসিনা’ বইটি পড়লাম। বঙ্গবন্ধু থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যা-নেতৃত্বের এ পরম্পরা উন্নয়নের অভিযাত্রায় বাংলাদেশকে কতটা বদলে দিয়েছে, এ বইটি তার এক নির্ভরযোগ্য দলিল। তথ্যবহুল এ বইটি পড়লেই বোঝা যায়, বাংলাদেশকে আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট রাষ্ট্রে পরিণত করতে নেতৃত্বের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন দর্শনের নানান তথ্যও মেলে এ বইটিতে।
বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন ভাবনার ব্যাপ্তি ছিল এক কথায় বিশাল। আর এ কারণেই রাষ্ট্রের উন্নতির লক্ষ্যে রাষ্ট্রকাঠামো নিয়ে তিনি নিরন্তর ভাবতেন। বাংলাদেশকে আগামী পঞ্চাশ বা একশ বছর পর কোথায় নিতে হবে এ ভাবনার সন্ধান মেলে তার অনেক বক্তব্যেই। শত প্রতিকূলতার মাঝেও তার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভাবনা সত্যি পাঠককে অবাক করার মতো। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে-এ কথা তিনি দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে বহুবার উচ্চারণ করেছেন। তিনি জাতিসংঘে তার আশাজাগানিয়া এক ভাষণে বলেছিলেন, যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অসামান্য উন্নতির এ যুগে মানবসভ্যতা বিপুল সাফল্যের সুফল পাবে। এ সাফল্যের অংশীদার সারা বিশ্বের মানুষের। এমন স্পষ্ট করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মানবকল্যাণধর্মী অগ্রগতির কথা ওই সময় ক’জন রাষ্ট্রনায়কই বা বলতে পারতেন।
বঙ্গবন্ধু জানতেন এ বাংলাদেশ এক সময় পৃথিবীর অন্যতম ধনী অঞ্চল ছিল; কিন্তু ঔপনিবেশিক হস্তক্ষেপে সেই সোনার বাংলা নিঃশেষ হয়ে যায়। তাই তো তিনি ঐশ্বর্যমণ্ডিত সেই বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনার সোনালি অভিপ্রায় প্রকাশ করেছেন বারে বারে। আজ তার সেই আশার অধিকারকে আরও বিস্তৃত করে চলেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ থেকে এখন আমরা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে এগিয়ে চলেছি। ২০০৯ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আধুনিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। পুরো বাংলাদেশকে উন্নত অবকাঠামোর জালে বেঁধে ফেলার পাশাপাশি তার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে সত্যি সত্যি বিপ্লব ঘটিয়েছে। তাই তো তরুণ প্রজন্ম ডিজিটাল উদ্যোক্তা হওয়ার এক অভাবনীয় প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছে। ডিজিটাল অর্থনীতির প্রসারে চাই আর্থিক লেনদেন। চাই সার্ভিস ডেলিভারির জন্য উপযুক্ত তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামো। হাইস্পিড ইন্টারনেট। চাই সাবমেরিন কেবল। সাইবার হাইওয়ে। চাই ফাইবার অপটিক কেবল এবং ওয়ারল্যাস নেটওয়ার্ক। চাই ঘূর্ণায়মান স্যাটেলাইট। এসবেরই প্রসার ঘটিয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সরকার বিগত দেড় দশক ধরে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে জাতীয় পেমেন্ট সুইচ, ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার, রিয়াল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট, ইন্টারঅপারেবল ‘বিনিময়’ ব্যবস্থাসহ ক্যাশলেস লেনদেন পদ্ধতি গড়ে তোলা হয়েছে। মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সিস্টেম, এজেন্ট ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিংসহ ডিজিটাল অর্থব্যবস্থা গড়ার কাজ অনেকটাই এগিয়ে। বাংলা ‘কিউআর কোড’ দ্রুতই চালু হয়েছে। একেবারে তৃণমূলের মানুষ এখন এ আধুনিক আর্থিক সেবার সুফল পাচ্ছেন। কোভিড সংকটকালে আমাদের ডিজিটাল অর্থায়ন ব্যবস্থা এতটা মজবুত না থাকলে ব্যাংকিং, ব্যবসা-বাণিজ্যের কী যে হতো তা ভেবেই অবাক হয়ে যাই। লকডাউনের সময়ও তাই এক মিনিটের জন্য থেমে থাকেনি ডিজিটাল অর্থনীতির হালচাল। মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা ছিল নিরন্তর সচল।
এমনই এক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে আরও স্মার্ট করার ঘোষণা দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের এ পরিকল্পনার পাঁচটি স্তম্ভ তিনি উল্লেখ করেছেন-এক. ডিজিটাল শাসনব্যবস্থা; দুই. জনসম্পদ উন্নয়ন; তিন. উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন; চার. সংযোগ ও অবকাঠামো উন্নয়ন এবং পাঁচ. টেকসই উন্নয়ন। এসব লক্ষ্য পূরণের জন্য সরকার ইতোমধ্যে বেশকিছু নীতি ও আইন প্রণয়ন করে ফেলেছে। বেশকিছু প্রকল্পও হাতে নিয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘ডিজিটাল স্থাপত্য’, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ ফেলোশিপ প্রকল্প’, ‘উদ্ভাবন তহবিল’, ‘ডিজিটাল সংযোগ প্রকল্প’ এবং ‘ডিজিটাল ডিভাইস ইনোভেশন ফান্ড’। এসবের ওপর ভর করেই এগিয়ে যাবে স্মার্ট বাংলাদেশ। এ বাংলাদেশে সরকার যেমন উদ্যোক্তা হবে, একইভাবে বেসরকারি উদ্যোক্তারাও অংশীজন হবেন। একে অপরের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে গতিময় স্মার্ট বাংলাদেশ। ঠিক ক্যারাভ্যানের মতো।
এত সব পরিবর্তনের অনেক কিছুই আমজনতার কাছে অজানা এবং অচেনা। আমরা এখন ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল ভোগ করছি; কিন্তু এর প্রেক্ষাপটের গল্পগুলো জানি না। সেই গল্পগুলো ‘বাংলাদেশে ডিজিটাল বিপ্লব: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব থেকে শেখ হাসিনা’ বই-এ সাজিয়েছেন সাংবাদিক, লেখক, গবেষক অজিত কুমার সরকার। বইটিতে চমৎকারভাবে বাংলাদেশে ডিজিটাল বিপ্লবের ধারাবাহিকতাগুলো আলোচনা করা হয়েছে। এ আলোচনা থেকে যে কেউই ডিজিটাল পরিবর্তনের সম্যক ধারণা লাভে সমর্থ হবেন। ধারাবাহিকতা অনুযায়ী দেখা যায়, লেখক প্রথমেই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এ ধারণার প্রেক্ষাপটগুলো আলোচনায় নিয়ে এসেছেন। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’ এর ধারণা যে হঠাৎ করা হয়নি, সেগুলো তিনি তথ্য, তত্ত্ব ও যুক্তি দিয়ে বর্ণনা করেছেন। প্রেক্ষাপট বর্ণনায় লেখক অজিত কুমার সরকার ফিরে গেছেন জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের উন্নয়ন দর্শনের কাছে। দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে সব রকম লড়াই-এ অপূর্ব এক সাহসী নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। দায়িত্ব গ্রহণ করার পরপরই তিনি মানুষের সৃজনশীলতা, বিজ্ঞান ও কারিগরি অগ্রগতির ওপর যথেষ্ট গুরুত্বারোপ করেন। একইসঙ্গে তিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ও ভিত্তি তৈরিতে বিভিন্ন উদ্যোগের আয়োজন করেন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম ক্ষমতায় আসে ৯৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভের পর। শেখ হাসিনার সেই শাসনামলে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ওপর নজরদারিত্ব ছিল অনেক বেশি। কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক ইশতেহারে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেয়। সে সময় অনেকেই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ কী এ নিয়ে নানান ধরনের প্রশ্ন করলেও এখন প্রতিটি মানুষ ঘরে বসেই বিভিন্ন সেবাপ্রাপ্তির মধ্যে দিয়ে বুঝতে সক্ষম হয়েছে, ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধাটা কোথায়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘রূপকল্প ২০২১’ ঘোষণা করেন। এ ধারাবাহিকতায় পরবর্তীকালে ‘রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবে রূপায়ণ: বাংলাদেশের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১’ প্রণয়ন করা হয়। একেবারে শহর থেকে গ্রাম বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা ডিজিটাল রূপান্তর দেখতে পাই।
বিগত দিনে প্রত্যেকটি কাজেই গ্রহীতা বা সেবাপ্রার্থীকে কোনো না কোনোভাবে সেবাপ্রদানকারীর কাছে যেতে হতো। কিন্তু এখন আর যেতে হয় না। ঘরে বসেই এখন সবকিছু করা যায়। ডিজিটাল বাংলাদেশের পর এখন সর্বত্র ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা দেখতে পাই লেখক অজিত কুমার সরকার পুরো বইতে চমৎকারভাবে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তির রূপান্তরের ধারাবাহিক আলোচনা ও পর্যালোচনা করা হয়েছে। সূচিপত্র মোতাবেক প্রথম অধ্যায়ে ‘ডিজিটাল বিপ্লবে বঙ্গবন্ধুর প্রযুক্তি ভাবনা ও উদ্যোগ’, দ্বিতীয় অধ্যায়ে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লব’, তৃতীয় অধ্যায়ে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ’, চতুর্থ অধ্যায়ে ‘সংযুক্তিতে সমৃদ্ধি ও গ্রামের উন্নয়ন’, পঞ্চম অধ্যায়ে ‘ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশ’, ষষ্ঠ অধ্যায়ে ‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মানবসম্পদ’ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এরপর সপ্তম অধ্যায়ে ‘ডিজিটাল গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট গভর্নমেন্ট প্রতিষ্ঠার পথযাত্রা’, অষ্টম অধ্যায়ে ‘ডিজিটালাইজেশনে দুর্নীতি হ্রাস’, নবম অধ্যায়ে ‘সাইবার নিরাপত্তা’ দশম অধ্যায়ে ‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে বাংলা ভাষার বিশ্বায়ন’ এবং সর্বশেষ একাদশ অধ্যায়ে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লববান্ধব’ আইন বিষয়ে আলোচনাও করা হয়েছে।
‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ নিয়ে শুরুতে জনমনে নানা প্রশ্নের অবতারণা হলেও এখন আর কোনো প্রশ্ন নেই তা সন্দেহাতীতভাবেই বলা যায়। কেননা ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর সুবিধা বেশ আগেই শহর থেকে এখন প্রান্তিক জনগণের কাছে পৌঁছে গেছে। এখন ঘরে বসেই অনলাইনে সব ধরনের আর্থিক লেনদেন, বিল পরিশোধ, কেনাকাটাসহ সবই করা যায়। ঘরে বসেই মোবাইল ডিভাইসে এখন সব ধরনের লেনদেন সম্পন্ন করা সম্ভব। গত কয়েক বছরে এ পরিবর্তন এখন সর্বত্র লক্ষণীয়। গ্রামের তরুণ-তরুণীরাও এখন ঘরে বসেই শুধু ডিভাইস ব্যবহার করে আয় করছেন। এদিকে আবার গত কয়েক বছরে ফ্রিল্যান্সিং আমাদের নতুন ধরনের কর্মসংস্থানের এক নয়াদিগন্তও উন্মোচন করেছে। এদিকে বর্তমান সরকার যেসব নীতিমালা করেছে, সেখানেও ডিজিটাল বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করেছে আগেভাগেই।
চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের ধারায় সবক্ষেত্রেই এখন ডিজিটাইজেশন করা হয়েছে। যেসব জায়গাতে হয়নি, সেখানেও করার প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। এসব কিছুই এসেছে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার মধ্যে দিয়ে। লেখক এ বইটিতে আরও প্রয়োজনীয় কিছু বিষয় নিয়ে তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। যে আলোচনা একজন পাঠক, গবেষক বা অনুসন্ধিৎসু জন নিঃসন্দেহে নিজের জানা বা জ্ঞানভান্ডার সমৃদ্ধ করতে পারবেন। বইটির সপ্তম অধ্যায়ে ডিজিটাল গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট গভর্নমেন্ট প্রতিষ্ঠার পথযাত্রা নিয়ে তিনি বিস্তর আলোচনা করেছেন। এ অধ্যায়ে ‘ডিজিটাল গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট গভর্নমেন্ট: প্রেক্ষাপট ও বাস্তবতা’ পর্বে তিনি প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো যেমন- ই-গভর্নমেন্ট ও আমলাতন্ত্র, ন্যাশনাল ই-সার্ভিস বাস জাতীয় তথ্য বাস্তবায়ন, ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস), পণ্য আমদানি-রপ্তানি সনদ অনলাইনে ই-রিক্রুটমেন্ট, খাদ্যশস্য ক্রয় পদ্ধতির ডিজিটাইজেশন, অনলাইনে ফরম, ই-পুর্জি, স্মার্ট ভূমি সেবা, ই-নামজারি, ই-জুডিশিয়ারি, ভার্চুয়াল কোর্ট, মোবাইল কোর্ট, ডিজিটাল পার্লামেন্ট, ক্যাশলেস সোসাইটি, পেপারলেস অফিস ইত্যাদি বহুবিধ বিষয়ে তথ্য উপস্থাপন করেছেন। এ রূপান্তরগুলো কিছু দিন আগে মানুষ কল্পনাও করেনি। কিন্তু এখন সুবিধাগুলো মানুষ সরেজমিন দেখতে পাচ্ছে। সেই সুবিধাগুলো তাদের জীবন চলাকে সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করে দিচ্ছে। আসলে আমরা উল্লিখিত বিষয়ে সুবিধাদি পেলেও এসবের উদ্দেশ্য এবং আগামীতে আরও কী কী ধরনের পরিবর্তন আসছে তা কিন্তু জানি না। লেখক এসব বিষয়ে আগাম আলোচনা করেছেন।
তথ্যপ্রযুক্তির ধারায় দ্রুতই বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিটি খাত। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে এখন স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরির স্লোগান সর্বত্র। সেভাবেই শেখ হাসিনার হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। সাংবাদিক, লেখক, গবেষক অজিত কুমার সরকারকে আবারও ধন্যবাদ এক মলাটে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের রূপান্তরের ঘটনাবলী তুলে ধরার জন্য। আগ্রহীরা বইটি পড়তে পারেন এক নিশ্বাসে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মনের জানালা আরও খানিকটা খুলে দিতে এ বইটি অনুঘটকের কাজ করবে বলে আমার বিশ্বাস। আশা করি, ‘স্মার্ট’ বাংলাদেশ কতটা রূপান্তরিত হচ্ছে, সাধারণ মানুষ এ বাংলাদেশের কতটা কার্যকর অংশীদার হতে পারছে, সেই আলাপটিও লেখক এ বইয়ের আগামী সংস্করণে তুলে ধরবেন। আবারও এমন একটি আধুনিক ভাবনায় ভরা বইটি উপহার দেওয়ার জন্য লেখককে অভিনন্দন জানাই।