আগে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে, নইলে আন্দোলন

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৫৮ পিএম

স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আগে জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সাবেক জনপ্রতিনিধিরা।তা না করা হলে রাজপথে নেমে আন্দোলন করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপি সমর্থিত সাবেক জনপ্রতিনিধিদের আয়োজিত গণসমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।
সমাবেশ শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি জমা দিতে ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পাঠানো হয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমরা আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চাই, তারপর স্থানীয় সংসদ নির্বাচন।অতীতে যত তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসেছে, তারা আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিয়েছে। এ দাবি আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে পেশ করব।
সমাবেশে বগুড়া জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, দীর্ঘ ১৫-১৬ বছর বাংলাদেশের স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার প্রতারণার নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতায় ছিল। বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দলের ওপর বিভিন্নভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। বিএনপির শত শত নেতাকর্মীকে খুন, গুম করেছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে অন্যায়ভাবে জেলখানায় আটক রেখেছিল। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে দীর্ঘদিন জেল খাটিয়েছে। তার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেওয়া হয় নাই। দেশের সব প্রতিষ্ঠান দলীয়করণ করে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। স্বৈরাচারী হাসিনা এবং তার দোসররা ২৮ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে।
তিনি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে দেশে কোনো স্থানীয় নির্বাচন হবে না। যদি সেটি করা হয়, তাহলে সারা দেশের উপজেলা চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে এবং ডিসি-এসপি অফিসসহ সব প্রতিষ্ঠান ঘেরাও করা হবে বলে জানান।
বগুড়ার নবীনগরের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফখরুল হোসেন বলেন, আজ সারা বাংলাদেশের উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়নের মেম্বাররা ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নেমে এসেছে। আমাদের একটি দাবি, আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। তারপর স্থানীয় নির্বাচন দিতে হবে, সেটি না করা হলে বিএনপির নেতাকর্মী এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নেমে আসবে।
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতির খন্দকার আবু আসফাক বলেন, আমরা বিগত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছি। আমাদের দাবি হলো- আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। পরে স্থানীয় নির্বাচন হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে দেশের সব বিএনপি নেতাকর্মীরা রাজপথে আন্দোলনে নেমে আসবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
সমাবেশে সভাপতির বক্তৃতায় বগুড়ার শিবগঞ্জের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মীর শাহে আলম বলেন, বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো স্থানীয় নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে ডিসি অফিস, এসপি অফিস ঘেরাও করা হবে। আজ সারা বাংলাদেশের জনপ্রতিনিধিরা রাজপথে নেমে এসেছে। বাংলাদেশের মানুষ জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো স্থানীয় নির্বাচন দেখতে চায় না।
বগুড়ার শিবগঞ্জের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মীর শাহে আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, বগুড়া পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর পিন্টু আহমেদ, ময়মনসিংহের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শুকুর আলী, যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাবেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন হোসেন, লালমনিরহাটের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মামুনুল হোসেন, বগুড়ার নবীনগরের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান
ফখরুল হোসেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর মোস্তফা হোসেন, সিরাজগঞ্জের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান দবিরুল ইসলাম, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাসনাত প্রমুখ।