‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের একমাত্র মাস্টারমাইন্ড তারেক রহমান’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৫৮ পিএম
কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রূপ নেওয়ার পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনের ফাঁকে এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমকে এই আন্দোলনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন।তবে বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতার দাবি, এই আন্দোলনের একমাত্র ‘মাস্টারমাইন্ড’ হচ্ছেন তারেক রহমান।
শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতীকী প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘এই আন্দোলনের একমাত্র মাস্টারমাইন্ড হচ্ছেন তারেক রহমান। কার্যকর আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য যা করা দরকার সবই করেছেন তিনি। এটা যদি কাউকে ব্যাখ্যা করে বুঝাতে হয়, তাহলে একটু অসুবিধা আছে। ১৬ বছর ধরে হাসিনা বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছে। আর তারেক রহমান বিচক্ষণতার সঙ্গে বিএনপিকে রক্ষা করেছেন।’
‘অবিলম্বে গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার’ দাবিতে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলন আয়োজিত এই প্রতীকী প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় নির্বাচন যত পিছিয়ে যাবে সংকট তত তীব্র হবে মন্তব্য করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, যত তাড়াতাড়ি নির্বাচন করা সম্ভব হবে, তত তাড়াতাড়ি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। নির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনায় তার উপযুক্ততা প্রমাণ করতে পারবে। এটাই আমাদের মাথায় রাখতে হবে। কারণ, এই সরকার আমাদের সরকার। এই সরকার ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা গণতন্ত্র বিপন্ন হবে। সেজন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সিদ্ধান্ত নিয়ে নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান করছি।
তিনি বলেন, আমরা বর্তমান সরকারের কাছে খুব বেশি কিছু প্রত্যাশা করি না। ছোট্ট একটি প্রত্যাশা আছে। দীর্ঘ ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারে না। ড. মুহাম্মদ ইউনুস জ্ঞান গরিমা এবং কর্মের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একজন ব্যক্তি।
কৃষক দলের সাবেক এই আহ্বায়ক বলেন, নির্বাচন কবে হবে এই কথাটা যতদিন জাতিকে জানাতে না পারবেন, ততদিন নানা বিতর্ক তৈরি হবে। এই বিতর্ক সৃষ্টিতে সরকারের ভূমিকা থাক এটা আমরা প্রত্যাশা এবং পছন্দ করি না। বাজারে আগুন লেগে গেছে। দ্রব্যমূল্যের দাম এতটাই বেড়েছে যে, মানুষ অস্বস্তিতে পড়েছে। নতুন সরকার আসার পরে এই অবস্থা হবে সেটা কেউ প্রত্যাশা করে নাই। তারা প্রত্যাশা করেছিল, জিনিসপত্রের দাম কমবে। সংস্কার সরকার করবে, সে সংস্কার পরবর্তী সরকার সংসদে এসে অনুমোদন করবে।
দুদু বলেন, এক মাসে কিছু হয় না। একটা সন্তান জন্ম দিতেও নয় মাস লাগে। এক মাসে যদি কোনো সন্তান আনতে হয়, সেটা মৃত সন্তান হয়। ১৬টি বছর এদেশের মানুষ রক্ত দিয়েছে। ১৬টি বছর এদেশের ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক গুম ও নিখোঁজ হয়েছে। ১৬টি বছর জেল খেটেছে। এক মাসের আন্দোলনের কথা সব বিবেচনায় যদি এনে থাকেন সেটা ঠিক হয়নি।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মিলেমিশে চলাটাই এ সরকারের সাফল্যের একটি কারণ হতে পারে। দূরত্ব বাড়লে দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, স্বাধীনতার জন্য মানুষের বিপদ হতে পারে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এম জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মোফাজ্জল হোসেন হৃদয়ের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জেড মোহাম্মদ খান রিয়াজ উদ্দিন নসু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ, কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ আব্দুল আল বাকি, সহসাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন রবি, একে খোদা তোতন, এসকে সাদী, যুব নেতা আজিজুল হাই সোহাগ, পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজী, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মির আমির হোসেন আমু, কৃষক দলের দল নেতা তোফায়েল হোসেন মৃধা, শফিকুল ইসলাম সবুজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, সিনিয়র সহসভাপতি জাহিদ হোসেন বাচ্চু, আয়োজক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা মনির হোসেন বেপারী, অহিদুল ইসলাম প্রমুখ।