স্বৈরাচারের পোকামাকড় বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে: রিজভী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৪, ০৭:৪১ পিএম
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুর কবির রিজভী বলেছেন, ‘স্বৈরাচারের পতন হলেও স্বৈরাচারের পোকামাকড় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নানা ধরনের বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে। স্বৈরাচার আত্মপ্রকাশের জন্য অতিবিপ্লব তৈরির জন্য চেষ্টা করছে ঘাপটি মেরে থাকা স্বৈরশাসকের দোসররা। তাদের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
মঙ্গলবার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলামের ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। দিবসটি নানাভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। যারা বাংলা ভাষাবাসি মানুষ রয়েছেন তারা এ দিনটিকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। আমরা যার সাহিত্যকর্মের মধ্যে পেয়েছি কিভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে বঞ্চনা থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। তার কবিতায়, গানে, সাহিত্যকর্মে তা ফুটে উঠেছে। তিনি অনন্য বাংলাভাষার প্রধান কবি। একদিকে তিনি যেমন অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের কথা বলেছেন অপরদিকে তিনি ছরি প্রেমের কবি। এরকম এক অসাধারণ বৈচিত্রের সম্মেলন আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন ছাত্র-জনতার যে আন্দোলন আমাদের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা সম্মিলিতভাবে এক ভয়ংকর স্বৈরশাসকের পতন ঘটিয়েছে। সে আন্দোলনের উত্তাল ঢেউয়ের মধ্যে আপনারা শুনেছেন কারার ওই লৌহ কপাট। সে আন্দোলনের মধ্যে শুনেছেন আমরা ঝর্ণার মতো চঞ্চল। আপনারা সে আন্দোলনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, গণতন্ত্রের মুক্তির লড়াইয়ে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা এক অর্ভূতপূর্ব শক্তি পেয়েছিলেন নজরুলের গান শুনে, নজরুলের গান গেয়ে।
রিজভী বলেন, ‘আজও আমাদেরকে প্রেরণা দেয় অত্যাচারের বিরুদ্ধে কিভাবে লড়াই করতে হবে। আমরা তাই যখন কারাগারে যাই তখন নজরুলের গান গাই। আমরা যখন মিছিল করি তখন নজরুলের গান গাই, আমরা যখন স্লোগান দেই নজরুল আমাদেরকে প্রেরণা দেন। আমাদের যখন বন্দি করা হয় তখন নজরুলের গান, কবিতা আমাদের উদ্বেলিত করে।’
ভারতের নাম উল্লেখ না করে বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, ‘স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে পৃথিবীর একটি দেশ সমর্থন দিয়েছিল। তারা (ভারত) বাংলাদেশের জনগণকে সমর্থন করেনি। কিছুদিন আগে সেই দেশ তাদের ডুম্বুর বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলকে ভাসিয়ে দিয়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে ফেলেছিল। গতকাল ১০৯ ফারাক্কা গেট খুলে দিয়েছে। তারা পরিকল্পিত অশুভ উদ্দেশ্য নিয়ে এ কাজটি করছে।’
তিনি বলেন, ‘শুষ্ক মৌসুমে যখন আমাদের পানি দরকার তখন তারা (ভারত) পানি দেয় না, আমাদের ন্যায্য অধিকারটুকু অর্থাৎ যে শেয়ারটুকু পাই তাও তারা দেয় না। স্বৈরশাসকের নতজানু নীতির কারণে বাংলাদেশের জনগণ বঞ্চিত হয়েছে।’
রিজভী আরও বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো, স্বাধীন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো শেখ হাসিনা নিজের কব্জায় নিয়েছিলেন। তার মধ্যে নির্বাচন কমিশন একটি। সেখানে শেখ হাসিনার একনিষ্ঠ ব্যক্তিরা এখনো রয়েছে। প্রশাসনের নানা জায়গায় তারা ঘাপটি মেরে রয়েছে। সব প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের দুরীভূত করতে হবে। সত্যিকারের জনগণের শাসন কায়েমের জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকূল ইসলাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, জাসাস আহ্বায়ক চিত্রনায়ক হেলাল খান, সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আরিফুর রহমান তুষার, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি তৌহিদুর রহমান আউয়াল প্রমুখ।