বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জামাল শরীফ হিরুর কাছ থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বৃহস্পতিবার বিকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন রিজভী।

রিজভীর অভিযোগ, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টা ১০ মিনিট। ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ১০-১২ জনের একটি টিম বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জামাল শরীফ হিরুর রাজধানীর কলাবাগানের বাসায় যায়। তাকে নিয়ে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে হিরুর সহধর্মিণী শামীমা আখতার সাথী অনেক কান্নাকাটি শুরু করেন। তিনি তার স্বামীর কিডনি ডায়ালাইসিসসহ নানাবিধ শারীরিক অসুস্থতার কথা জানান। বিভিন্ন সময়ে করানো চিকিৎসাপত্রগুলো তাদেরকে দেখান।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘সবগুলো চিকিৎসাপত্র দেখে ডিবি পরিচয়ে পুলিশ হিরুর সহধর্মিণী শামীমা আখতার সাথীর কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। তাৎক্ষণিক এত টাকা কোথায় পাবেন বলে তা দিতে অপারগতা জানালে ডিবির সদস্যরা বলেন, তাহলে গহনা (স্বর্ণালঙ্কার) দিয়ে দেন। তারপর অবস্থা বেগতিক দেখে অসুস্থ স্বামীকে পুলিশের হাত থেকে গ্রেফতার এড়াতে এক লাখ টাকা নিকটাত্মীয় স্বজন থেকে ধারদেনা করে ডিবি পুলিশকে ব্যবস্থা করে দেন হিরুর সহধর্মিণী। এ সময় গোয়েন্দা পুলিশ বাসার সমস্ত সিসি ক্যামেরা, ফুটেজ এবং মনিটর খুলে নেন। শুধু তা-ই নয়। তাদের শিখিয়ে দেওয়া বক্তব্য সাথীর দিয়ে ভিডিও করে নেন।’
 
‘এ সময় হিরুর স্ত্রীর লেখা একটি চিরকুট পড়ে শুনান তিনি’। সেখানে আরও বলা হয়, ‘ওইদিন রাত ১০টা পর্যন্ত চলে এসব কাহিনী। তাদের (ডিবি পরিচয়ে পুলিশ) শিখানো বক্তব্যে যা ছিল তা হলো- ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ডিবি পুলিশ বাসায় এসেছিল আমার স্বামী জামাল শরীফ হিরুকে আটক করতে। আমার স্বামী জামাল শরীফ হিরুর শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখে মানবিক কারণে পুলিশ তাকে (হিরু) নেয়নি। এ ব্যাপারে আমার বা আমার পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি বা অভিযোগ নেই।’

রিজভী বলেন, ‘এমন একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে যদি এমন আচরণ হয়, তাহলে সারা দেশের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে কী চলছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। গ্রেফতারের বিভীষিকা পর্ব তুলে ধরলে কেউ অশ্রু ধরে রাখতে পারবে না। এমন নির্মম ঘটনা ঘটছে। এমন করুন কাহিনী শুনে সবাই বিস্মিত হবেন। অথচ গ্রেফতার বাণিজ্যের এমন সারা দেশে ঘটনা অহরহ ঘটছে। সরকার এটা করছে ক্ষমতা আকড়ে রাখার জন্য। এই সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মনে করছে এটা করলে কিছুই হবে না, সরকারের পক্ষেই কাজ করছেন। বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। আমরা আন্ডারগ্রাউন্ডের কোনো দল নই।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগ) মো. ফারুক হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ডিবি যখন কোথাও যায় লোকাল থানাকে ইনফর্ম করে যায়। ডিবি পরিচয় দিয়ে অন্য কেউ করতে পারে। তারা যদি কোনো সিসিটিভির ফুটেজ বা গোপন ক্যামেরায় মোবাইলে ছবি তুলে রেখে থাকেন এবং তা দেন, আমরা যাচাই করে দেখব সেখানে আমাদের কোনো সদস্য আছে কি না। থাকলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে শান্তিমূলক ব্যবস্থা নেব।’