বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগকে শত্রু মনে করি না।তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করি। নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের পরাজিত করতে চাই।’তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ গঠন করতে চাই।আমরা কাউকে নিশ্চিহ্ন করতে চাই না, কারোর পতন চাই না।’
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত ‘অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে’ অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দুদু বলেন, ‘একটা মিথ্যা মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে বছরের পর বছর কারাবন্দি রাখা হয়েছে। উচ্চ আদালতে যখন এর দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল হয়েছে, তখন তা ডাবল করে দেওয়া হয়েছে। দেশের বিচার বিভাগ নিয়ে কথা বলা খুব কঠিন।গতকাল (বৃহস্পতিবার) এক রায় দেখলাম। সকালে দণ্ডিত, দুপুরে জামিন, সন্ধ্যায় তা খারিজ। আরেকটি মামলায় দেখলাম, শুধু সমালোচনা করার কারণে এক মেয়রকে এক মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে ভিসানীতির আওতায় বিচার বিভাগকে নিয়ে আসার অর্থ বাংলাদেশের মর্যাদা ক্ষুন্ন।এটা আমরা আগে বুঝতে পারলে তা ভালো কিছু বয়ে আনতো।’
তিনি বলেন, ‘গত কয়েক মাসে শেখ হাসিনার মন্তব্য শুনলে বোঝা যায়, তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বীকে শত্রু মনে করেন।যা অস্বাভাবিক ও গ্রহণযোগ্য নয়। সিইসি আকার ইঙ্গিতে বলার চেষ্টা করেছেন আগামী নির্বাচনে সেনাবাহিনী থাকবে। তবে সেনাবাহিনী বা প্রশাসন প্রতিবন্ধকতা নয়। প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকাকালীন অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়।এজন্য আমরা কেয়ারটেকার সরকার চাই।এটা শুধু আমরাই বলছি না, আওয়ামী লীগও একসময় কেয়ারটেকার সরকারের জন্য আন্দোলন করেছে।কিন্তু তারা এখন বলে, কোর্ট বাতিল করে দিয়েছে বলে কেয়ারটেকার সরকার দেওয়া সম্ভব নয়। এখন কোর্ট কিছু বাতিল করে দিলেই তা গ্রহণ করতে হবে ব্যাপারটা তো সে রকম নয়। পার্লামেন্ট সার্বভৌম, তারা যেটা ভুল মনে করবে, সেটা পরিবর্তন করা সম্ভব।’
দুদু বলেন, ‘পশ্চিমা বিশ্ব যে কারণে নাখোশ হয়েছে, সেটা ঠিক করতে হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো বিকল্প নেই।’
জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি গোলাম সরোয়ার সরকারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলম মাহমুদের সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক কাজী রওনকুল ইসলাম টিপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন শ্যামল, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি জসিম শিকদার রানা, কৃষক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ বক্তব্য দেন।