বিয়েবাড়িতে মোটা মতো এক আন্টি অনেকক্ষণ ধরে আমাকে লক্ষ্য করছেন। একপর্যায়ে বন্ধুদের সঙ্গে গ্র“প সেলফি তোলা শেষে যখন একা একা চেয়ারে বসে ছবি তুলছি আন্টি এসে পাশের চেয়ারে বসলেন।
জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার নাম কী?’
বললাম।
‘বিয়ে হয়ে গেছে?’
এ পর্যায়ে বিষয়টা আমার কাছে সুইমিংপুলের পানির মতো ক্লিয়ার হয়ে গেল। আমি বললাম, ‘হয়েছে তবে আপনার ছেলের মতো ছেলে পাইলে আগেরটা বাদ দিয়ে দিবো।’
আন্টি বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে রইলেন। আমি আবার বললাম, ‘আমার বরটা আপনার ছেলের মতো জোশ না তো তাই আর কি! এভাবে তাকায় আছেন কেন? একটা মেয়ে মনের মতো মানুষ পেলে দ্বিতীয় বার বিয়ে করাটা কি দোষের?’
আন্টি বললেন, ‘আমার ছেলেকে তো তুমি দেখোনি!’
আমি বললাম, ‘কে বলল? এই বিবাহের সূত্র ধরে আপনার ছেলেকে আমি আগেই দেখেছি। খোঁজখবর নিয়েছি। আপনারা তো পাত্রপক্ষ (আন্দাজে বলা কারণ পাত্রীপক্ষের হলে আমি চিনতাম)?’
আন্টি ব্যাগ থেকে পানি বের করে ঢক ঢক করে গিললেন।
আমি বললাম, ‘তাইলে আমারে একটা আশ্বাস দেন!’
আন্টি বললেন, ‘কিসের আশ্বাস?’
‘আপনারে আমি শ্বাশুড়ি আম্মা মানলাম। আপনার ভরসায় এখন আমার আগের বরটারে তালাক দিই। তারপর আপনার সাথে যোগাযোগ করব। ছেলের সাথে ব্যবস্থা করায় দিবেন তো?’
আন্টি জবাব না দিয়ে উঠে গেলেন। ভারী শরীর নিয়ে উঠতে কষ্ট হচ্ছিলো, আমি সাহায্য করলাম। হাজার হোক শ্বাশুড়ি আম্মা!
পরদিন অনুষ্ঠানে আন্টি দেখি আমার থেকে সাত হাত দুরত্ব বজায় রেখে চলছেন। আমি হাত নেড়ে হ্যালো বলি অথচ উনি অন্যদিকে তাকিয়ে রইলেন।
এই ঘটনার অনেকদিন পর আন্টির সঙ্গে আমার আবার দেখা হলো। আমিও বেড়াতে গিয়েছি উনিও আসছেন। আমাকে দেখে রাগী চোখে তাকালেন। বললেন, ‘তোমার তো বিয়েই হয় নাই! পরে শুনলাম। খামাখা মিথ্যা কথা বললা কেন?’
আমি আন্টির কথার উত্তর না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলাম, ‘আপনার ছেলের জন্য আমার অফারটা কি এখনো আছে? নাকি বাতিল?’
আন্টি ভুরু কুঁচকে চলে গেলেন। খানিকক্ষণ পর দেখি আমার সাথে আসা আরেক বান্ধবীকে আলাদা বসিয়ে আলাপ করছেন, ‘তোমার নাম? বিয়ে হয়ে গেছে?’