বেলকনিতে দাঁড়িয়ে চুল শুকাচ্ছি, এমন সময় পাশের বাসার ভাবি এসে বললেন, ‘ভাবি দেখেন, আপনার ভাই আমার জন্য কত দামি একটা নেকলেস এনেছে।’
আমি একটা হাসি দিয়ে বললাম, ‘বাহ, খুব সুন্দর! নেকলেসটা আপনার গলায় খুব সুন্দর লাগছে।’
ভাবি নেকলেসটায় হাত বুলিয়ে বললেন, ‘এরকম আরও অনেক এক্সপেন্সিভ গয়না আমার আলমারিতে ভরপুর। আমি তো দামি সোনার গহনা ছাড়া কিছু পরতেই পারি না।’
আমি একটু খোঁচা মেরে বললাম, ‘কেন ভাবি, অ্যালার্জির প্রবলেম আছে নাকি?’
তিনি আমার কথা পাত্তা না দিয়ে বললেন, ‘আপনার কী কী কালেকশন আছে ভাবি?’
আমি আবারও একটা হাসি দিয়ে বললাম, ‘আমার গোল্ড পরতে ভাল্লাগে না ভাবি। তাই খুব বেশি এক্সপেন্সিভ কিছু নেই। ওই বিয়ের সময় যা যা পেয়েছিলাম আর কী। গোল্ডের প্রতি বরাবরই ইন্টারেস্ট কম। আমার আবার শাড়ি-টাড়িই বেশি পছন্দ। এসবই কেনা হয় টুকটাক।’
তিনি হাসতে হাসতে বললেন, ‘কী যে বলেন ভাবি! মেয়েদের সোনার গয়না ছাড়া চলে?’
আমি ভেতরে এসে জামা-কাপড় গোছাচ্ছি আর এ মহিলার বকবকানি শুনছি। মহিলা একটা অহংকারী ভাব দেখিয়ে বললেন, ‘এখন আসি ভাবি। সন্ধ্যায় এসে আরও নতুন কালেকশন দেখাবো আপনাকে।’
আমি একটা হাসি দিয়ে মাথা নাড়ালাম। সন্ধ্যাবেলা হঠাৎই কে জেন দরজায় আওয়াজ করলেন। খুলতেই দেখি মহারানী ভাবির আগমন। বত্রিশ দাঁত বের করে বললেন, ‘দেখেন ভাবি, এগুলো সব নতুন বানিয়েছি। অনেক দামি ভাবি। প্রত্যেকটাই আমার জন্মদিনে পাওয়া উপহার।’
এরই মধ্যে হঠাৎ ভাবির শাশুড়ি এসে বললেন, ‘কী ব্যাপার বউ, এখানে এসে হাত-পা গেঁড়ে বসে আছ কেন! ওই দিকে তোমার ভাইয়ের বউ এসে বসে আছে তোমার জন্য। তুমি নাকি বিয়েবাড়ি যাওয়ার নাম করে তার সব গয়না নিয়ে এসেছ? সেগুলো ফেরত নিতে এসেছে, যাও গিয়ে দিয়ে এসো।’
আমি হাসি চেপে রেখে বললাম, ‘বসেন আন্টি, একটু চা করে দিই খেয়ে যাবেন।’
ভাবি লজ্জা পেয়ে তার শাশুড়ির হাত ধরে টেনে হনহন করে আমার বাসা থেকে বেরিয়ে গেলেন। আমি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ভাবতে লাগলাম, মানুষ এত চাপা কীভাবে ছাড়ে! চাপায় জোর আছে বটে মহিলার।