অক্টোবরে রেমিট্যান্স বেড়েছে। এসেছে প্রায় ১৯৮ কোটি ডলার। যা আগের মাসের তুলনায় ৬৫ কোটি ডলার বেশি। সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৩৩ কোটি ডলার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই বৃদ্ধি সাময়িক। বরং নতুন শঙ্কা ওমানে ভিসা স্থগিতের ঘটনা। বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য সব ধরনের ভিসা দেওয়া স্থগিত করেছে দেশটি। এতে ভবিষ্যতে দেশে প্রবাসী আয় কমার নতুন শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের প্রবাসী আয়ের নবম বৃহত্তম উৎস ছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান। ২০২১-২২ অর্থবছরে ওমান থেকে দেশে ৮৯ কোটি ৭৪ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে পরিমাণে কিছুটা কমলেও নবম স্থানেই ছিল ওমান। সেবার এসেছিল ৭৯ কোটি ডলার।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাইয়ে দেশটি থেকে প্রবাসী আয় এসেছে ১২ কোটি ডলার; আগস্টে এসেছে ৬ কোটি ৪৭ লাখ ডলার আর সেপ্টেম্বরে এসেছে ৪ কোটি ২৪ লাখ ডলার। অর্থাৎ অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে ওমান থেকে দেশে প্রায় ২৩ কোটি ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। যদিও পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, জুলাইয়ের পর প্রতি মাসেই সেখান থেকে প্রবাসী আয় আসা কমেছে; তারপরও প্রথম ৩ মাসে দেশটির স্থান পঞ্চম।
এই পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,
প্রবাসী আয়ে প্রতি ডলারের বিপরীতে এখন ১১৫ টাকা পর্যন্ত দেওয়া যাচ্ছে। ফলে সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ে বড় পতন দেখা গেলেও অক্টোবরে তা কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৭ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলার। এরমধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৫ কোটি ৪৫ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৫ কোটি ৮২ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৭৫ কোটি ৮৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬০ লাখ মার্কিন ডলার।
অন্যদিকে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৩ মাস রেমিট্যান্স প্রবাহ ধারাবাহিকভাবে কমেছিল। ডলার সংকটের কারণে সেপ্টেম্বরে প্রবাসী আয়ে বড় হোঁচট খায়। ওই মাসে প্রবাসী আয় আসে ১৩৩ কোটি ডলার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার এবং আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার।
বর্তমানে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে ডলারের দাম ৫০ পয়সা বাড়িয়ে পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে রেমিট্যান্স ও রপ্তানিকারকদের থেকে প্রতি ডলার ১১০ টাকা ৫০ পয়সায় কিনে আমদানিকারকদের কাছে ১১১ টাকায় বিক্রি করবে ব্যাংকগুলো। আন্তঃব্যাংকে ডলারের সর্বোচ্চ দর হবে ১১৪ টাকা। এতদিন ১১০ টাকায় ডলার কিনে সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রির সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু নভেম্বরে শ্রমিকরা ওমানে যেতে না পারলে প্রবাসী আয়ের প্রবাহে আবার ছেদ পড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।