Logo
Logo
×

আওয়ামী লীগ

আন্দোলনে গুলি করে শিক্ষার্থীদের হত্যা

মোহাম্মদপুর ও আদাবরে আ.লীগ নেতাকর্মীরা পলাতক

Icon

মোহাম্মদপুর (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৪, ১০:৪৩ পিএম

মোহাম্মদপুর ও আদাবরে আ.লীগ নেতাকর্মীরা পলাতক

কোটা আন্দোলন। ফাইল ছবি

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গসংগঠনের সব নেতাকর্মী পলাতক রয়েছেন। 

কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ১৮ জুলাই মোহাম্মদপুরে ত্রিমুখী সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের আগ্নেয়াস্ত্র হাতে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি ছুড়তে দেখা যায়। তাদের গুলিতে ১৮-২০ জুলাই ৩ দিনে অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী নিহত হন। 

পরে ৩ ও ৪ আগস্টেও মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তারা গুলি চালিয়ে শিক্ষার্থীদের হত্যা করে। পরদিন হাসিনার পতনের পর থেকে সবাই আত্মগোপনে চলে গেছেন বলে স্থানীয়রা জানান।

জানা যায়, মোহাম্মদপুরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় সরাসরি জড়িত ছিলেন ঢাকা-১৩ আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের ব্যক্তিগত সহকারী মাসুদুর রহমান বিপ্লব, আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সাত্তার, সাবেক কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজিব, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ, ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ খোকন, আওয়ামী লীগ নেতা আবু সায়েম শাহীন, যুবলীগের আহ্বায়ক বিপ্লব, ছাত্রলীগ সভাপতি নাইমুল ইসলাম রাসেল, আদাবর থানা আওয়ামী লীগ নেতা সালাউদ্দিন শামীম, তুহিন, হিটু, আলমগীরসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী। যাদের সবার হাতেই ভারী আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। 

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও তাদের গুলি করে হত্যার বেশ কয়েকটি ভিডিও যুগান্তরের হাতে সংরক্ষিত রয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা জুতা, কালো প্যান্ট ও কালো টিশার্ট এবং মাথায় হেলমেট পরা এক ব্যক্তি বাসস্ট্যান্ডের সামনে ময়ূর ভিলা এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করে। তার সঙ্গে আরও ১৫-২০ জন আগ্নেয়াস্ত্র হাতে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি ছোড়ে। এ সময় এক কিশোর ঘটনাস্থলেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। ভিডিও দেখে কয়েকজন শনাক্ত করেছেন, কালো টিশার্ট ও প্যান্ট পরা ব্যক্তিটি সাবেক কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজিব। হামলার কিছুক্ষণ আগে তারা সবাই প্রায় একই পোশাকে মুখে কাপড় বেঁধে পুলিশের আশপাশে অবস্থান নেয়। 

এছাড়া আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, পরনে কালো প্যান্ট ও কালো টিশার্ট এবং মাথায় হেলমেট পরা আরেক যুবক বেশ কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে ছাত্রদের ওপর গুলি করছে। তার ভিডিও দেখে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তিনি জাহাঙ্গীর কবির নানকের ব্যক্তিগত সহকারী মাসুদুর রহমান বিপ্লব। এছাড়া আদাবরের যুবলীগ নেতা তুহিন, হিটু, আলমগীরের নেতৃত্বে ৫০-৬০ জনের একটি দল শিক্ষার্থীদের গুলি করে হত্যা করে।

সরেজমিন মঙ্গলবার মোহাম্মদপুর ও আদাবরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। এছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের মোহাম্মদপুরের বাসায় গিয়ে তাকেও পাওয়া যায়নি। এ সময় তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল করে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। 

এছাড়া ঢাকা-১৩ আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। পাশাপাশি মোহাম্মদপুরের আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সাত্তার, যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক বিপ্লব, সাবেক কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজিব, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসিফ, ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর খোকন, ৩২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাস্টন, ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাশেম, ২৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সলিমুল্লাহ সলু এবং মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বাসায় ও মোবাইল ফোনে তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম